সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিশ্ব উষ্ণায়ন ইস্যুতে গভীরভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ উষ্ণায়নের জেরে রাজ্যের বিপর্যয় রুখতে আগাম ব্যবস্থার নেওয়ার উদ্যোগ রাজ্য সরকারের৷ পরিস্থিতি মোকাবিলায় মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গড়ে দেওয়া কমিটির সদস্যরা বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন, কীভাবে বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়৷
বিশ্ব উষ্ণায়ন নিয়ে সোমবার রাষ্ট্রসংঘের তরফে একটি রিপোর্ট পেশ করা হয়৷ কলকাতা-সহ গোটা মহাদেশে মহাবিপর্যয়ের পূর্বাভাস দেওয়া হয়৷ রিপোর্টে কলকাতাকে বিশেষভাবে সতর্ক করা হয়৷ প্রচণ্ড দাবদাহের জেরে ২০৩০ সালের মধ্যে ১.৫ ডিগ্রি তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়৷ শুধু উপমহাদেশের কলকাতা ও করাচিকে বিশেষ ভাবে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে৷ রাষ্ট্রসংঘের তরফে রিপোর্ট প্রকাশ হতেই উদ্বেগ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনেরও নির্দেশ দেন মমতা৷
সোমবার রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার ইঞ্চিয়নে। রাষ্ট্রসংঘ নিযুক্ত ‘ইন্টারগভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ’ (আইপিসিসি)-এর বিজ্ঞানীরা এই রিপোর্টে যে তথ্য দিয়েছেন, তা অনুযায়ী ভয়ংকর এক ভবিষ্যতের মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে কলকাতা। ২০১৫ সালে ভারতে যে মারণ তাপপ্রবাহ চলেছিল, তাতে অন্তত ২,৫০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। বিজ্ঞানীদের শঙ্কা, তিন বছর আগের সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে চলেছে অচিরেই। তীব্র দাবদাহে ছারখার হতে চলেছে দেশ। ভুগতে চলেছে কল্লোলিনীও। দেশের গড় তাপমাত্রা যেমন তিন থেকে চার ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে চলেছে, তার সঙ্গে তাল রেখেই দিনে দিনে আরও উষ্ণ, আরও তপ্ত হতে চলেছে কলকাতাও। শহরে আগের তুলনায় বাড়তে চলেছে গ্রীষ্মের মেয়াদ। বাড়তে চলেছে তাপপ্রবাহের মাত্রা। উদ্ভিদ বা প্রাণিকুল-কারও পক্ষেই সেই চরম তাপমাত্রার সঙ্গে যুঝতে পারা সম্ভব নয় বলেই রিপোর্টে আগাম সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা। শুধু তাই নয়। বিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যা হল, কলকাতার ক্ষেত্রে আগামীর সেই চিত্র আরও বিপজ্জনক হতে চলেছে মূলত দু’টি কারণে। এক, মহানগরীর বুকে ডিজেল চালিত গাড়ির আধিক্য এবং দুই, সমুদ্র থেকে এই শহরের দূরত্ব।
[সনিকা মামলায় রেহাই পেলেন না বিক্রম, চার্জ গঠনের নির্দেশ আদালতের]
পরিবেশবিদদের দাবি, এর ফলে শহরে দমবন্ধ করা, অস্বস্তিকর এক প্রকার আবহাওয়া সৃষ্টি হবে, যার ফলে বাড়বে ম্যালেরিয়া এবং ডেঙ্গুর মতো রোগের প্রকোপ। তাঁদের মতে, কলকাতাকে এই মহাবিপর্যয়ের ঘানি সবচেয়ে বেশি টানতে হবে ঠিকই, কিন্তু দেশের অন্যান্য মেট্রো শহর যেমন বেঙ্গালুরু, দিল্লি এবং চেন্নাইয়ের মতো শহরও এই বিপদের হাত থেকে পুরোপুরি নিস্তার পাবে না। রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিশ্ব উষ্ণায়ন এবং গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের জেরে পৃথিবার গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি ইতিমধ্যেই ১ ডিগ্রিতে পৌঁছে গিয়েছে। উষ্ণতা বৃদ্ধির জেরে আগের তুলনায় আরও দ্রুত হারে গলছে আন্টার্কটিকার বরফ। বিজ্ঞানীরা বলছেন, অবিলম্বে ব্যবস্থা না নিলে ২০৩০ সালের মধ্যে তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার পৌঁছে যাবে ১.৫ ডিগ্রিতে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.