ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: প্রেম হোক কিংবা প্রতিবাদে, কলম তাঁর সদা সচল। নিজের বক্তব্য বারবারই প্রকাশ পেয়েছে ছন্দে, কাব্যে। একের পর এক কবিতার জন্ম হয়েছে তাঁর ভাবনা থেকে। এবারও তেমনই এক ছন্দবদ্ধ সৃষ্টি দিনের আলো দেখল তাঁর লেখনীতে।
শুক্রবার সন্ধেয় আত্মপ্রকাশ ঘটল মুখ্যমন্ত্রীর লেখা এক নতুন কবিতার। কবিতার নাম – একদিন। যার ছত্রে ছত্রে দিনবদলের বার্তা, শান্তির বার্তা, তাঁর দেখা স্বপ্ন প্রতিফলন ঘটেছে। কবিতা শুরু হচ্ছে এভাবে, ‘একদিন আসবেই/ যেদিন থাকবে না যুদ্ধ/একদিন আসবেই/যেদিন থাকবে না ঘৃণা’। গোড়া থেকেই তিনি যুদ্ধবিরোধী ভাবনা বুনে দিয়েছেন ছন্দে। দিয়েছেন ভালবাসা, প্রেমের বার্তা। আরও এগোলে দেখা যায়, মুখ্যমন্ত্রী লিখছেন, ‘একদিন আসবেই/যখন পৃথিবী জাগবেই।’ এই স্থবির সময়ে তিনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ভাবনা থেকে এমন চরণ তৈরি করেছেন। জেগে ঘুমিয়ে থাকা নয়, মুখ্যমন্ত্রী সকলের প্রকৃত জাগরণের কথা বলেছেন। যে জাগরিত অবস্থা থেকে অনেক রকম কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে তা নিয়ন্ত্রণ করা যায় বলে তাঁর আজীবনের স্থির বিশ্বাস। আর সেই জাগরণ না থাকলে, বন্দিদশাই একমাত্র ভবিতব্য।
কবিতার শেষের দিকে মুখ্যমন্ত্রী লিখছেন, ‘আসবে আসবে সেদিন/নব সংস্কারের দিন/সন্ত্রাস বিদায় নেবেই/লম্ফ-ঝম্ফ-দম্ভ যাবেই’। সন্ত্রাসমুক্ত পৃথিবীর ছবি কে না মানসচক্ষে দেখে? মমতার সেই স্বপ্নের কথাই উঠে এসেছে ছন্দে, কথায়। আর দম্ভ যে আত্মপতনের জন্য কতখানি দায়ী, তা নিজের সূক্ষ্ম অনুভূতি, জীবনবোধ দিয়ে তিনি নিজে বুঝেছেন বলেই অহমিকা বর্জনের কথা সবসময়েই বলেন। কবিতায়ও তার প্রকাশ ঘটালেন স্বতস্ফূর্তভাবে।
‘একদিন’ কবিতার একেবার শেষে এসে তিনি নিজের অনুপস্থিতিতে স্বকীয় ভাবনার ছাপ রেখে যেতে চান বলে প্রকাশ করেছেন। বোধহয় সাধারণের সঙ্গে মিশেও বোধের দিক থেকে সাদামাটা জীবনের উর্ধ্বে উঠতে পেরেছেন বলেই এমন একটি অনুভূতির দ্বারা তাড়িত হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই তিনি অক্লেশে লিখতে পেরেছেন – ‘হয়তো থাকবো না সেদিন।/তবু ভাবনায় থাকবো।/চিন্তায় থাকবো।/গবেষণায় থাকবো/হয়তো বা শান্তিতে ঘুমাবো।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.