গৌতম ব্রহ্ম: পিত্তথলিতে পাথর জমেছিল হাতিবাগানের আরতিদেবীর। আরজি কর হাসপাতালে অপারেশন করিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। ফিরেই মনটা ভাল হয়ে গিয়েছে। কারণ, মুখ্যমন্ত্রী যে চিঠি পাঠিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তাঁকে। একই অনুভূতি বাইক থেকে পড়ে পা দু’ টুকরো হয়ে যাওয়া বারুইপুরের শ্যামল দাসের। পার্ক সার্কাসের ন্যাশনাল মেডিক্যালে চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ হয়েছেন তিনি। হাড় জুড়েছে। উপরি পাওনা হিসেবে মুখ্যমন্ত্রীর চিঠি পেয়েছেন শ্যামলবাবুও।
চিঠির নিচে ডানদিকে রয়েছে প্রেরকের স্বাক্ষর। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী, পশ্চিমবঙ্গ। বাঁদিকে, প্রাপকের নাম। একেবারে নিচে প্রেরকের ঠিকানা ‘নবান্ন, ওয়েস্ট বেঙ্গল সেক্রেটারিয়াল, হাওড়া- ৭১১১০২। চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী রোগীদের ‘প্রিয় সাথী’ বলে সম্বোধন করেছেন। লিখেছেন, ‘স্বাস্থ্য ও পরিবার দপ্তরের অধীনে বিনামূল্যে ঔষধ প্রকল্পে আপনাকে উপভোক্তা হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করতে পেরে ও প্রকল্পের অধীনে সর্বপ্রকার বিনা ব্যয়ে চিকিৎসা প্রদান করতে পেরে আমি আনন্দিত’। সবশেষে আরোগ্য কামনা। ‘ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন’। ইতিমধ্যেই অনেক রোগীই বাড়ি ফিরে এমন ‘সারপ্রাইজ গিফট’ পাচ্ছেন। তাও আবার রেজিস্টার্ড ডাকে। ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপের আমলে মুখ্যমন্ত্রীর এহেন জনসংযোগে রোগীরা বেজায় খুশি। তাঁদের মত, মুখ্যমন্ত্রীর চিঠি তাঁদের মনের জোর বাড়িয়েছে।
২০১৮ সালের ১ মার্চ থেকে ২০১৯ এর ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছেন বহু রোগী। জানা গিয়েছে, তাঁদেরকেই চিঠি পাঠানো হচ্ছে। ন্যাশনাল মেডিক্যাল থেকে প্রায় ২২ হাজার রোগীর বাড়িতে চিঠি গিয়েছে। ন্যাশনালের সুপার ডা. সন্দীপ ঘোষ জানান, সাড়ে ছ’ হাজার চিঠি হাসপাতালের তরফে সরাসরি রোগীর বাড়ির ঠিকানায় পাঠানো হয়েছে। আর প্রায় ১৬ হাজার চিঠি রোগীর বাড়ির ঠিকানা লিখে যোগাযোগ ভবনে পাঠানো হয়েছে।
পিন কোডে ভুল থাকায় কিছু রোগীকে চিঠি পাঠানো সম্ভব হয়নি। হাসপাতালের উদ্যোগে খুশি আইএমএ-র সর্বভারতীয় সভাপতি সাংসদ ডা. শান্তনু সেন। তিনি জানান, গত আট বছরে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন এনেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিনে পয়সায় রাজ্যের মানুষের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন তিনি। স্বাস্থ্যপরীক্ষা থেকে ওষুধ সবই হচ্ছে নিখরচায়। ডায়ালিসিস, এমআরআই-এর মতো পরিষেবার জন্যও টাকা দিতে হচ্ছে না। শুধু ন্যাশনাল মেডিক্যাল, আরজি কর নয়, সব মেডিক্যাল কলেজ থেকে রোগীদের বাড়িতে চিঠি যাচ্ছে। আরজি করের অধ্যক্ষ ডা. শুদ্ধোদন বটব্যাল জানান, প্রায় ৩০ হাজার ঠিকানায় চিঠি পাঠানো হয়েছে। রোগীদের চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন পিজির হাসপাতালের অধিকর্তা ডা. মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.