মলয় কুণ্ডু: গঙ্গা-পদ্মার ভাঙনে প্রতিদিন তলিয়ে যাচ্ছে বহু জমি। জলের তলায় চলে যাচ্ছে বহু চাষের জমি। বাড়িঘর হারাচ্ছেন বহু মানুষ। মাথার উপর থেকে চলে যাচ্ছে ছাদ। মুর্শিদাবাদ, নদিয়া ও মালদহের পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। ভাঙন রুখতে গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যান নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে (PM Narendra Modi) চিঠি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী তিনটি জেলার ভাঙনের উপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে মুর্শিদাবাদ, মালদহ এবং নদিয়া। আর এই ভাঙনের জন্য নদীর গতিপথ বদলকেই দায়ী করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। চিঠির বয়ান অনুযায়ী, ফরাক্কা ব্যারেজ নির্মাণের প্রভাব পড়েছে নদীর গতিপথে। এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতেই জলসম্পদ কেন্দ্রীয় মন্ত্রক ২০০৫ সালে ফরাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষের হাতে অতিরিক্ত ক্ষমতা দিয়েছিল। যাতে নদীর পাড়ের ক্ষয়রোধ করা যায়। ২০১৭ সালে এই ক্ষমতায় বদল ঘটান কেন্দ্রীয় সরকার। যা কার্যত একতরফাভাবে করেছিল কেন্দ্র।
২০১৭ সালে লেখা চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী আগেই দাবি করেছিলেন, নদী ভাঙন রুখতে ফরাক্কা কর্তৃপক্ষকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। নদীর পাড় রক্ষা করতে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে তাদের। এই চিঠিতে নদী ভাঙনের জেরে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও তুলে ধরেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা জানিয়েছেন, গত ১৫ বছরে ২৮০০ হেক্টর উর্বর চাষের জমি নদীর ভাঙনের গ্রাসে গিয়েছে। নষ্ট হয়েছে এক হাজার কোটির সম্পত্তির। অভিযোগ, এত ক্ষয়ক্ষতির পরও ফরাক্কা কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে ভাঙনের কবলে গিয়েছে তিন জেলার ১৫ ব্লকের প্রচুর জমি।
মুখ্যমন্ত্রীর আরও অভিযোগ, ২০১৭ সালে একতরফা ভাবে সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় সরকার। ফরাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষের ক্ষমতার বহর কমিয়ে দেওয়া হয়। প্রতিবাদ জানানো সত্ত্বেও কোনও লাভ হয়নি। ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেয়নি ফরাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ। তাই এবার ফের চিঠি লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী। আবেদন জানালেন, ভাঙন রোধে যাতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয় জলসম্পদ মন্ত্রক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.