ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: ফের চিঠি আদানপ্রদান নবান্ন-রাজভবনে। রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের আগের ১৪ পাতার চিঠির জবাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ ১২ পাতার পত্র লিখলেন। তাতে তিনি রাজ্যপালের ব্যবহৃত ভাষা নিয়ে ঘোর আপত্তি তুলেছেন। লিখেছেন, সংবিধান তৈরির পর থেকে একজন সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে এধরনের ভাষা মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে কেউ ব্যবহার করেননি। এসব দেখে আর রাগ হয় না, আক্ষেপ হয়।
নবান্ন-রাজভবনের মধ্যে পত্রযুদ্ধ শুরু হয়েছিল এপ্রিলের শেষের দিকেই। করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্যের ভূমিকা নিয়ে নানা দিকে নানা ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য করায় মুখ্যমন্ত্রী ব্যথিত হয়ে রাজ্যপালকে চিঠি লেখেন। তাতে তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করেছিলেন। তার উত্তরে রাজ্যের ভূমিকাকেই কাঠগড়ায় তুলে রাজ্যপাল পালটা চিঠি লিখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে। দীর্ঘ ১৪ পাতার সেই চিঠিতে একাধিক বিষয়ে তিনি মুখ্যমন্ত্রী এবং সামগ্রিকভাবে প্রশাসনের ভূমিকার সমালোচনা করেন। মুখ্যমন্ত্রী ‘সংখ্যালঘু তোষণ’ করেন বলেও অভিযোগ তোলেন। যে ভাষায় তিনি মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করেছিলেন, তা নজিরবিহীন বলে মনে করেছিল রাজনৈতিক মহলের একাংশ। আজ, মুখ্যমন্ত্রী নিজেও জবাবি চিঠিতে সেকথাই প্রকাশ করলেন। তাঁর বক্তব্য, যে ভাষায় তাঁকে আক্রমণ করেছেন ধনখড়, স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে আর কোনও রাজ্যপাল কোনও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এমন আচরণ করেননি।
গত ২৩ ও ২৪ এপ্রিল ধনকড় মুখ্যমন্ত্রীকে দুটি চিঠি পাঠান। প্রথমটা সংক্ষিপ্ত দু’পাতার হলেও, দ্বিতীয়টি ছিল দীর্ঘ চোদ্দ পাতার। টুইটারেও তিনি লাগাতার মমতা বন্দ্যাপাধ্যায় সরকারকে আক্রমণ শানিয়ে ছিলেন। শনিবার সেসবের জবাব দিয়েই মুখ্যমন্ত্রীও পালটা ১২ পাতার চিঠি লিখলেন। যে চিঠির সিংহভাগেই তিনি রাজ্যপালের ব্যবহৃত ভাষা এবং রাজ্য সরকারের প্রতি তাঁর মনোভাব নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন। করোনা আবহে মুখ্যমন্ত্রী-রাজ্যপালের এই পত্রযুদ্ধ নয়া মাত্রা যোগ করল বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.