সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: ‘ডেঙ্গুতে আর কোনও মৃত্যু নয়।’ মুখ্যসচিবের বৈঠকে জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। পাশাপাশি তাঁর বক্তব্য, শুধু স্বাস্থ্য নয়, সকল দপ্তরকেই সতর্ক থাকতে হবে। স্বাস্থ্য ও নগরোন্নয়ন দপ্তরের কাজে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন। মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, “আরও বেশ কিছু দিন বৃষ্টি চলবে। তাই সতর্ক থাকতে হবে সব জেলাকে। বিশেষ করে উপকূলীয় জেলাগুলোতে। ডেঙ্গু (Dengue) নিধনে ভালো কাজ হচ্ছে। তবে ধারাবাহিকতা রাখতে হবে।” তাঁর আরও সংযোজন, “আমার পায়ে একটা সমস্যা হয়েছে। তাই বেরতে পারছি না। তবে সব কিছুই দেখা হচ্ছে। সমস্ত বিষয় আমি দেখছি। মুখ্যসচিবও দেখছেন। ফিরহাদ হাকিম নগরোন্নয়ন-সহ পুরো বিষয়টি দেখছেন।”
রাজ্যের ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে শনিবার জেলাশাসক, সিএমওএইচদের নিয়ে নবান্নে বৈঠকে বসেছিলেন মুখ্যসচিব ও স্বাস্থ্যসচিব। বৈঠক চলাকালীন ফোন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, পুজোর আগেই রাজ্যের ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। মুখ্যসচিব পুর ও নগরোন্নয়ন এবং স্বাস্থ্যদপ্তরের আধিকারিকদের নির্দেশ দেন, ১০ অক্টোবরের মধ্যে ১২৮টি পুরসভার কাউন্সিলরদের ডেঙ্গু নিয়ে ওয়ার্ডে-ওয়ার্ডে অন্তত দুটি করে বৈঠক করতে হবে। সচেতনতার কর্মসূচি নিতে হবে। সেগুলি পুরপ্রধানকে জানাবেন কাউন্সিলর। পুরসভার পক্ষ থেকে তা জেলাশাসক এবং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে জানাতে হবে। সেই অনুযায়ী আগামীর রূপরেখা ঠিক হবে। প্রত্যেক পুরসভাকে ফিভার ক্লিনিক চালু করতে হবে। পুর হাসপাতালে ১০টি করে শয্যা বরাদ্দ রাখতে হবে ডেঙ্গু আক্রান্তদের জন্য। ২৪ ঘণ্টা রক্তপরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।
পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তরের তথ্য বলছে, রাজ্যের মধ্যে একমাত্র বালি পুরসভা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে উল্লেখযোগ্য সাফল্য দেখিয়েছে। এলাকার সমস্ত বাড়ি, নির্মীয়মাণ বাড়ি, বহুতল পরিদর্শন করা হয়েছে। রক্তপরীক্ষার কাজও যথেষ্ট সন্তোষজনক। এমনকী, কতগুলো পরিত্যক্ত বাড়ি রয়েছে তাও সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে দিয়ে দিয়েছে। এদিনই রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম জনসচেতনতামূলক প্রচার চালান। তাঁর কথায়, ২ শতাংশ মানুষের জন্য ৯৮ শতাংশ মানুষ কোনওভাবেই রোগগ্রস্ত হতে পারে না। তাঁদের অবশ্যই সচেতন হতে হবে। সে জন্য়ই এদিন তিনি সচেতনতামূলক পদযাত্রা করেন। এদিনের বৈঠকেও মন্ত্রী হাজির ছিলেন।
নবান্ন সূত্রে খবর, স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমের থেকে ডেঙ্গু আক্রান্তের তথ্য পেয়ে বৈঠকে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী জানান, ডেঙ্গু অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। স্বাস্থ্য-সহ সব দপ্তরই ভালো কাজ করছে। আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের বিশেষ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। যদি কোনও আশাকর্মী বা ভেক্টর কন্ট্রোল কর্মীদের কোনও বাধা দেওয়া হলে তারা সরাসরি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অথবা পুলিশি সহায়তা নিয়ে পারবে। দ্রুত ডেঙ্গুর মোকাবিলা করতে হবে। নবান্নে মুখ্যসচিব, স্বাস্থ্যসচিব ও জেলাশাসকদের বৈঠকে এমনই নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বাতিল করা হয়েছে স্বাস্থ্যদপ্তরের কর্মীদের ছুটিও। পাশাপাশি আশাকর্মীদের হাতেও অতিরিক্ত ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে বলে খবর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.