নব্যেন্দু হাজরা: ১০০ দিনের কাজ, কেন্দ্রীয় আবাস যোজনার মতো প্রকল্পের পর এবার বিপর্যয় মোকাবিলার কেন্দ্রীয় ত্রাণ থেকেও ‘বঞ্চিত’ বাংলা। হড়পা বানে বিধ্বস্ত সিকিম। বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলাও। তবু কেন্দ্রীয় আর্থিক সহায়তা মেলেনি। সোশাল মিডিয়ায় এমনই অভিযোগ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। দিল্লির বিরুদ্ধে তোপ দেগে লিখলেন, “আমরা ভিখারি নই। তবে বিভেদ মানব না।”
বিপর্যয়ের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র সিকিমের মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করেন। সিকিমকে আর্থিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। তার পরই শুক্রবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে স্টেট ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট ফান্ড (সিডিআরএফ) থেকে সিকিমকে ৪৪ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা মঞ্জুর করা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই সেই একই ফান্ড থেকে কেন্দ্র বাংলার জন্য কেন বরাদ্দ মঞ্জুর করল না, উঠছে সেই প্রশ্নও। টাকা তো দূর অস্ত, শাহর মন্ত্রকের তরফে যে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে, তাতে প্রধানমন্ত্রী সিকিমের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পাশে রয়েছেন বলে উল্লেখ করা হলেও দীর্ঘ বিবৃতিতে বাংলার নাম একবারও উল্লেখই করা হয়নি।
এর পরই শনিবার ফেসবুকে দীর্ঘ বিবৃতি দেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে সিকিমের পাশাপাশি বাংলার দার্জিলিং, কালিম্পং এবং কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ‘চিকেনস নেক’ এলাকার প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। পাহাড়ি এলাকায় বহু মানুষ আটকে পড়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাতদিন জেগে মুখ্যমন্ত্রী-সহ প্রশাসনিক কর্তারা কাজ করছেন। সিকিমের পাশেও দাঁড়িয়েছে রাজ্য সরকার। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলছে লড়াই। ক্ষতি সামাল দিতে জিটিএকে ইতিমধ্যে ২৪ কোটি টাকা দিয়েছে রাজ্য। তবু কেন্দ্রীয় সরকারের তহবিল থেকে এক টাকাও আর্থিক সহায়তার ঘোষণা হয়নি।
দিল্লির এহেন ‘বিভেদমূলক’ আচরণে ‘হতবাক’ মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের কথায়, “দার্জিলিং, কালিম্পং-সহ উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় প্রাণহানি হয়েছে। সেখানকার মানুষের সঙ্গে কেন্দ্রের এই বিভেদমূলক আচরণে আমি হতবাক। আমরা ভিখারি নই। তবে বিপর্যয় মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় সহায়তায় সাম্য় চাই। বিভেদমূলক এই আচরণ চাই না।” তবে এই প্রথম নয়, আমফান-ফনির মতো দুর্যোগের পরও কেন্দ্রীয় বঞ্চনার শিকার হয়েছে রাজ্য। বারবার সেই অভিযোগ তোলা হয়েছে রাজ্য়ের তরফে। এবার সেই তালিকায় নয়া সংযোজন উত্তরের বন্যা পরিস্থিতি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.