বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: মঙ্গলবারের পর বুধবারও বিধানসভায় হট্টগোল বাঁধাল বিজেপি (BJP)। এদিন রাজ্যপালের বক্তব্যের জবাবি ভাষণ দিতে উঠলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) বাধা দেওয়া হয়। হইচই শুরু করে দেন গেরুয়া শিবিরের বিধায়করা। তবু বক্তব্য থামাননি মুখ্যমন্ত্রী। বরং বিধানসভায় দাঁড়িয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দাগেন তিনি। বলেন, “হাউসে বিজেপির মস্তানি চলছে।” একইসঙ্গে তাঁর কটাক্ষ, “ওঁরা যত গর্জন করে তত বর্ষায় না। ওরা শুধু বিশৃঙ্খলা করে।”
এদিন বাজেট অধিবেশনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্যের উন্নয়নের খতিয়ানও তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “বাংলা সবকিছুতে পিছিয়ে ছিল। এখন বাংলা উন্নয়নের শিখরে। রাজস্ব সংগ্রহ বেড়েছে ৪ গুণ। ১০০ দিনের কাজে প্রথম আমরা। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে সবচেয়ে বেশি লগ্নি হয়েছে বাংলায়। ছাত্র-ছাত্রীদের ট্যাব দিয়েছি।” ‘দুয়ারে সরকার’, ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্পের সাফল্যের হিসেবও দিয়েছেন মমতা। বলেন, “দুয়ারে সরকারের দ্বিতীয় পর্যায়ে ৮০ হাজার ক্যাম্পে এক কোটির বেশি মানুষ এসেছে। দুয়ারে রেশন চালু করেছি। ২১ হাজার ডিলার রাজ্যবাসীকে খাদ্যসামগ্রী দিচ্ছেন।” উঠে আসে শিল্প, বিনিয়োগর কথাও। বলেন, “আমরা চাই শিল্প হোক, ওরা চায় দুর্ভিক্ষ হোক। দেউচা পাচামিতে এক লক্ষ মানুষের চাকরি হবে।”
এর পরই বিজেপিকে ‘কর্মনাশা’ বলে আক্রমণ করেন মমতা। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ আনেন। দিল্লির অসহযোগিতা সত্ত্বেও রাজ্য সরকার কীভাবে উন্নয়ন যজ্ঞ চালাচ্ছে, তাও উঠে আসে মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণে। এদিন বিধানসভায় দাঁড়িয়ে মমতা বলেন, “কেন্দ্র থেকে কোনও সাহায্য পায়নি। আগের কংগ্রেস সরকারও সাহায্য করেনি। এখন বিজেপি সরকারও করছে না। আমফানের টাকা পর্যন্ত দেয়নি। দেশটাকে সর্বনাশ করে দিচ্ছে এই সরকার। ওদের লজ্জা নেই।” মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণ চলাকালীন ওয়াকআউট করেন বিজেপি বিধায়করা। তবে গেরুয়া শিবিরের প্রতি আক্রমণের ঝাঁজ কমাননি মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “বড় বড় কথা বলে দেশ চলবে না। বিজেপির বিশ্রাম নেওয়ার দিন আসছে।”
কৃষকদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর-খেরির ঘটনারও উল্লেখ করেন। লেখেন, “আমরা কৃষকদের পাশে আছি। বাংলার কৃষকরা আমাদের গর্ব। তাদের গাড়ি চাপা দিয়ে আমরা মারিনি।” সবমিলিয়ে এদিন কেন্দ্র এবং রাজ্য বিজেপিকে কার্যত তুলোধনা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.