Advertisement
Advertisement
Subrata Mukherjee

‘সুব্রতদাকে এই অবস্থায় দেখতে পারব না’, হাসপাতালে ভেঙে পড়লেন মুখ্যমন্ত্রী

বর্ষীয়ান রাজনীতিকের প্রয়াণে শোকাহত সকলে।

CM Mamata Banerjee saddened at Subrata Mukherjee's death, politicians mourn | Sangbad Pratidin

ফাইল ছবি

Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:November 4, 2021 10:32 pm
  • Updated:November 5, 2021 10:21 am  

সংবাদ প্রতিদন ডিজিটাল ডেস্ক: আলোর উৎসবেই নামল আঁধার। রাজ্যের রাজনৈতিক জগতে নক্ষত্রপতন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ প্রয়াত হলেন রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় (Subrata Mukherjee)।  তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।  দিন ২ আগেই তাঁর হৃদযন্ত্রে স্টেন্ট বসানো হয়েছিল। চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে ছিলেন। কিন্তু এদিন সন্ধে থেকেই অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। রাতেই এসএসকেএম হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন তিনি। তাঁর মৃত্য়ুর খবর পেয়ে সকলের মুখেই আক্ষেপ, বাংলার রাজনৈতিক মহলে অপূরণীয় ক্ষতি। 

সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের অসুস্থতার খবর পেয়ে বাড়ির কালীপুজো ছেড়ে হাসপাতালে চলে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মৃত্যুসংবাদ পেয়ে তিনি কার্যত ভেঙে পড়েন। এতদিনকার সহকর্মী, রাজনৈতিক জীবনের ‘মেন্টরের’ মৃত্য়ু তাঁর কাছে কত বড় ধাক্কা, কম্পিত কণ্ঠে তাও বলছিলেন তিনি। বলেন, ”আমার জীবনে আমি অনেক দুর্যোগ দেখেছি। সুব্রতদার মৃত্যুটা আমার কাছে ভীষণ ভীষণ বড় দুর্যোগ। সুব্রতদার মতো মানুষ এত হাসিখুশি, এত কর্মঠ এবং দল অন্তপ্রাণ। নিজের বিধানসভা কেন্দ্র অন্ত প্রাণও ছিলেন। এমন মানুষ আর হবে কিনা সন্দেহ আছে। আমি গোয়া থেকে ফিরে প্রথমেই হাসপাতালে তাঁকে দেখতে এসেছিলাম। সেদিনও আমার সঙ্গে কথা হল, হাসল। বলল, আমি আবার জেলায় জেলায় যাব। সন্ধ্যায় হাসপাতালের প্রিন্সিপাল আমার বাড়ির কালীপুজোয় গিয়েছিলেন। বললেন, ভাল আছেন। কাল বাড়ি যাবেন। তার মধ্যে বিরাট হার্ট অ্যাটাক। যেটা চেষ্টা করেও ডাক্তাররা পারেননি ঠেকাতে। একবার দার্জিলিংয়েও হয়েছিল এরকম।”

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রী আরও জানালেন, এই অবস্থায় তিনি তাঁর প্রিয় ‘সুব্রতদা’কে দেখতে পারবেন না।  প্রাথমিক ধাক্কা সামলে জানান, শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে রবীন্দ্রসদনে তাঁর নশ্বর দেহ শায়িত থাকবে। সেখানে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করতে পারবেন অনুরাগীরা। দুপুর ২টোর পর তাঁর দেহ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে। তারপর হবে শেষকৃত্য। 

মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, ”অনেক ঝড়ঝাপটা এসেছে। এত বড় ঝড় আসেনি। বাংলার রাজনীতি মহান নেতাকে হারাল।” রাজ্যের পুরমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের প্রতিক্রিয়া,  ”রাজনীতির মতো কঠিন জায়গায় মজা করার অভ্যাস কারও থাকে না। আমি ওঁকে দেখেছি।” দলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলছেন, ”এভারগ্রিন সুব্রতদা। রাজনীতিকে হাতের তালুর মতো বুঝতেন। একদিন মমতাকে স্নেহ করেছিলেন। আবার মমতার নেতৃত্বে কাজও করেছিলেন। অল্প কথায়, অল্প ভাষায় সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের কথা বলা অসম্ভব।” বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কথায়, ”ঈর্ষণীয় কেরিয়ার ছিল তাঁর। রাজনীতিতে বড় ক্ষতি। আমাদের মধ্যে মতাদর্শগত পার্থক্য রয়েছে। তবে দলমত নির্বিশেষে সকলেই তাঁকে শ্রদ্ধা করতেন। তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করি।”

১৯৭২ সালে সুব্রত মুখোপাধ্যায় বালিগঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক হন। সেটাই তাঁর রাজনৈতিক কেরিয়ারে বড় উত্থান। সেই বছরই প্রথম মন্ত্রী হন তিনি। তখন তাঁর বয়স ছিল ২৬ বছর। ১৯৯৯ সালে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন সুব্রতবাবু। তার আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব। ২০০০ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত কলকাতা পুরসভার মেয়র পদের দায়িত্ব সামলেছেন সুব্রত মুখোপাধ্য়ায়। তারপর দু’ দফায় রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী হিসেবে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করেছেন। প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি, সোমেন মিত্র ও সুব্রত মুখোপাধ্য়ায় – এই তিন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব রাজ্য রাজনীতির অন্যতম স্তম্ভ ছিলেন। দু’জন আগেই প্রয়াত হয়েছেন। এবার চলে গেলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়ও।  
 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement