অর্ণব আইচ: দীর্ঘদিন ধরে ব্যঙ্গ। উপহাস। তাকে নিয়ে লাগাতার ঠাট্টা। আর সেই ব্যঙ্গের জবাব দিতেই শনিবার ভারতীয় জাদুঘরের (Indian Museum) ৪ জওয়ানকে টার্গেট করেছিল ঘাতক হেড কনস্টেবল অক্ষয়কুমার মিশ্র। তবে তার টার্গেট লিস্টে ছিলেন না CISF-এর মৃত অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টর রঞ্জিত সরঙ্গি। বরং টার্গেট অ্যাসিস্ট্যান্ট কমান্ডার সুবীর ঘোষকে বাঁচাতে গিয়ে বেঘোরে প্রাণ যায় রঞ্জিতের।
রাতভর অক্ষয় মিশ্রকে লালবাজার এবং নিউ মার্কেট থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। সেখানেই উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। একজন নয়, ঘাতক জওয়ানের টার্গেট ছিল ৪ জন। সন্ধে সোয়া ছ’টা নাগাদ জাদুঘরের মূল ফটক বন্ধ হয়। এরপর ভিতরে রোল কল চলছিল। সেই সময় সেন্ট্রি এস কে মূর্তির হাত থেকে অ্যাসল্ট রাইফেল ছিনিয়ে নেয় অক্ষয়। এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে। সে প্রথমেই টার্গেট করেছিল সুবীরকে। কিন্তু মাঝে চলে আসেন রঞ্জিত।
দেশের বাড়ির প্রতিবেশী অক্ষয়কে ওড়িয়া ভাষায় বোঝানোর চেষ্টা শুরু করেন অ্যাসিট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টর। কিন্তু কাজ হয়নি। উলটে গুলিতে ঝাঁজরা হয়ে যান তিনি। গুলি হাত ছুঁয়ে বেরিয়ে যায় সুবীরের। প্রাণভয়ে বারাকের বাইরে বেরিয়ে যায় আরেক টার্গেট। বন্দুক হাতেই বেশ কিছুক্ষণ তাঁর খোঁজ করেছিল অক্ষয়। কিন্তু বারাকের বাইরে থাকায় তাঁকে নিশানা করতে পারেনি। বরং নিজেকে বাঁচাতে একটি ঘরের মধ্যে আশ্রয় নেয় সে।
পরে কলকাতা পুলিশের ডিসি সেন্ট্রাল রূপেশ কুমার এবং সিআইএসএফের আইজির নেতৃত্বে বাহিনী অক্ষয়ের শর্ত মেনে ভিতরে ঢোকে। ভিতরে ঢুকেই খাটের পাশে রাখা ঘাতক রাইফেলটি বাজেয়াপ্ত করে তারা। এদিকে ভুল করে এই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানায় অক্ষয়। পুলিশের সামনে তার প্রথম কথা ছিল, “গলতি হো গ্যায়ি।” তার সামান্য ভুলে প্রাণ গেল এক জওয়ানের। এসএসকেএমে স্বাস্থ্যপরীক্ষার পর এদিন ঘাতক জওয়ানকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.