অর্ণব আইচ: নাগেরবাজার বোমা বিস্ফোরণ কাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে তদন্তভার হাতে নিল সিআইডি। বুধবারই সিআইডির বম্ব স্কোয়াড-সহ একটা টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্তের কাজ শুরু করে। বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের হাত থেকে আরও উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের জন্য সিআইডির হাতে তদন্তভার যায়। পাশাপাশি অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে পুলিশ। ঘটনার সময় প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান রেকর্ড করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার সকাল ৯টা নাগাদ নাগেরবাজার ১ নম্বর কবি নবীন সেন রোড দিয়ে যে সমস্ত স্থানীয় মানুষরা গিয়েছিলেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলে খোঁজখবর করছেন গোয়েন্দারা। স্থানীয়রা কী দেখেছিলেন, কোনও বাইরের লোককে দেখা গিয়েছিল কি না, তার তথ্য জোগাড় করা হচ্ছে। বিভিন্ন পরীক্ষার পর্বও চলছে। বোমা কে বা কারা রেখেছিল, কী উদ্দেশ্য ছিল, সেটা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। তবে এদিন ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান একাধিক রাজনৈতিক দলের নেতারা। যা নিয়ে তাঁরা রাজনৈতিক রঙ চড়ান। এদিন সকালে বোমায় নিহত আট বছরের বিভাস ঘোষের দেহ নাগেরবাজারের অর্জুনপুর পশ্চিমপাড়ায় নিয়ে যাওয়া হয়। অর্জুনপুরের একটি বাড়িতে বাবা-মায়ের সঙ্গে ভাড়া থাকত বিভাস। দুষ্কৃতীদের বোমা মঙ্গলবার কেড়ে নিয়েছে নিষ্পাপ শিশুটির প্রাণ। ফলত গোটা পাড়ায় শোকের ছায়া। অর্জুনপুর থেকে পুরসভার শববাহী শকটে করে এদিন সকালেই নিয়ে যাওয়া হয় জয়নগরে। সেখানেই শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
[বিস্ফোরণ কাণ্ডে নয়া মোড়! দমদমেই ডেরা বেঁধেছিল আল কায়দার জঙ্গিরা]
পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, নাতির মৃত্যুসংবাদ শুনে ঠাকুরমা শোকে কাতর। তিনি শেষবার নাতির মুখ দেখতে চেয়েছেন। ঠাকুরমাকে দেখিয়েই বিভাসের পারলৌকিক কাজ হবে। তবে ছেলের মৃত্যুরসংবাদ বুধবার দুপুর পর্যন্ত দেওয়া হয়নি মা সীতা ঘোষকে। এসএসকেএমের বার্ন ওয়ার্ডে তিনি চিকিৎসাধীন। অবস্থা স্থিতিশীল। বিভাসের বাবা জন্মেজয় ঘোষ বলেন, “স্ত্রী আগে একটু স্বাভাবিক হোক, তারপর ছেলের খবর দেব। কিন্তু সবসময় ও ছেলের খোঁজ করছে। কোনও উত্তর দিতে পারছি না।” এদিকে, নাগেরবাজারের বেসরকারি হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ দেখান বিভাসের আত্মীয় পরিজনরা। তাঁদের দাবি, ঘটনার পর পরই বিভাসকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিকিৎসা না করে অন্যত্র পাঠিয়ে দেয়। তারজন্যই বিভাসের মৃত্যু হয়েছে। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, পরিকাঠামো না থাকায় অন্য হাসপাতালে বিভাসকে রেফার করা হয়েছিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.