নব্যেন্দু হাজরা: বড়দিন আর বর্ষবরণের উৎসবে মাততে কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে শহরজুড়ে। সাজছে রেস্তরাঁ, বার, পাব। তবে উৎসবের দিনে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মদ্যপ ব্যক্তিদের গাড়ি চালিয়ে বাড়ি ফেরার উপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হচ্ছে। অতিরিক্ত মদ্যপান করলে সেই ব্যক্তিকে গাড়ির স্টিয়ারিংয়ে বসতে দেওয়া হবে না। অন্য গাড়ি ডেকে তাঁকে বাড়ি পাঠানো হবে। তিনি গাড়ি ছেড়ে যেতে আপত্তি জানালে সেক্ষেত্রে চালক ভাড়া করে তাঁকে বাড়ি পাঠানো হবে। শহর-শহরতলির সমস্ত বার এবং রেস্তরাঁকে এই মর্মে নোটিস পাঠাচ্ছে হোটেল-রেস্তরাঁ সংগঠন।
তাঁরা জানিয়েছে, প্রতিবারই এই বড়দিনের সময় বার-রেস্তরাঁতে ভিড় বাড়ে। কে কতটা মদ্যপান করবেন, তা তো আর বার কর্তৃপক্ষ ঠিক করতে পারে না। কাউকে মদ খাওয়া থেকে বিরত করাও যায় না। তাই অতিরিক্ত মদ্যপান করলে সেই ব্যক্তিকে আর গাড়ির স্টিয়ারিংয়ে বসতে দেবে না রেস্তরাঁ কর্তৃপক্ষ। হোটেলে থাকা বেয়ারারা গাড়ি বা চালক ডেকে দেবেন। ইতিমধ্যেই গাড়ির চালক সরবরাহের জন্য অ্যাপ চালু করেছে এক বেসরকারি সংস্থা। তাদের মাধ্যমেই চালক ভাড়া করে মদ্যপ ব্যক্তিকে নিজের গাড়ি দিয়ে ফেরত পাঠানো হবে। তার জন্য ওই ব্যক্তিকে মেটাতে হবে চালকের মজুরি, সঙ্গে তাঁর গন্তব্যে ফেরার খরচও।
পুলিশি নজরদারি তো থাকছেই। কিন্তু এবার বড়দিনের উৎসবে মদ্যপ ব্যক্তিদের উপর নজরদারি চালাবে বার-রেস্তরাঁ কর্তৃপক্ষও। তার জন্য মোতায়েন থাকছে বিশেষ বেয়ারা। তাঁরাই অতিরিক্ত মদ খেয়ে ফেলা ব্যক্তি যাতে সুস্থ্ভাবে বাড়ি ফিরতে পারেন তার ব্যবস্থা করে দেবেন। কলকাতা পুলিশের কর্তারা জানাচ্ছেন, মদ খেয়ে গাড়ি চালানো বন্ধ করতে জরিমানার পরিমাণ যেমন বাড়ানো হয়েছে, তেমনই শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে ব্রিথ অ্যানালাইজার দিয়ে চলছে পরীক্ষা। চালক এই যন্ত্রে ফুঁ দিলেই বোঝা যাবে তিনি মদ্যপ কি না! কিন্তু তাতেও মদ খেয়ে গাড়ি চালানো পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি। আর এখন উৎসবের মরশুম। বড়দিন, তারপর বর্ষবরণ। এই দিনগুলোতে রেস্তরাঁ, বার, পাব, ডিস্কোয় প্রচুর ভিড় হয়। অধিকাংশই গলা ভেজান সুরাতে। কিন্তু মদ খেয়ে গাড়ি চালালে বাড়ে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা। তাই মদ্যপ অবস্থায় কারও হাতে যেন কোনওভাবেই স্টিয়ারিং না যায়, তা দেখা উচিত।
হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অফ ইস্টার্ন রিজিয়নের তরফে তাই তাঁদের সংগঠনের আওতায় থাকা প্রায় ১৫০০ হোটেল, বার, রেস্তঁরায় জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কোনও ব্যক্তি অতিরিক্ত মদ খেয়ে নিলে কোনওভাবেই যেন তাঁর হাতে গাড়ি না দেওয়া হয়। অন্য ক্যাব বা ট্যাক্সি ডেকে আগে তাঁকে বাড়ি ফেরানোর চেষ্টা করা হবে। বলা হবে, নিজের গাড়ি পরদিন এসে যেন নিয়ে তিনি নিয়ে যান। আর যদি গাড়ি ফেলে রেখে না যেতে চান, তা হলে অ্যাপের মাধ্যমে চালক ডেকে তাঁকে বাড়ি পাঠাতে হবে। সংগঠনের সভাপতি সুদেশ পোদ্দার বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই আমরা আমাদের অ্যাডভাইসরি আমাদের সংগঠনের আওতায় থাকা সমস্ত বার-রেস্টুরেন্টকে পাঠিয়ে দিয়েছি। পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করে আরও নির্দেশ দেওয়া হতে পারে।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.