কৃষ্ণকুমার দাস: রবীন্দ্র সরোবরে ছটপুজো নিয়ে জাতীয় পরিবেশ আদালতের নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ দিল না সুপ্রিম কোর্ট। ব্রতপালনকারীদের ধর্মীয় ভাবাবেগের কথা মাথায় রেখে অন্তত এ বছর বিধিনিষেধ মেনে সরোবরে পুজো করার অনুমতি চেয়ে শীর্ষ আদালতে আপিল করেছিল রাজ্য সরকার।একইসঙ্গে পরিবেশ আদালতের নিষেধাজ্ঞা জারির উপরও স্থগিতাদেশ চেয়েও পিটিশন করে রাজ্য।
সোমবার বিচারপতি নরিম্যানের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চে সেই আপিলের শুনানির কথা ছিল। কিন্তু স্বয়ং নরিম্যান অনুপস্থিত থাকায় অন্য তিন বিচারপতির এজলাসে শুনানি হয়। বিচারপতিরা হলেন ইউ ইউ ললিত, বিনীত শরণ, রবীন্দ্র ভাট। বিচারপতিরা এদিন স্থগিতাদেশ না দিয়ে মামলার শুনানি ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত পিছিয়ে দিয়েছেন।
আগামী ১৯ ও ২০ নভেম্বর, কলকাতায় ছটের ব্রত পালন করবেন পুন্যার্থীরা। তাই এবছর আর পরিবেশ আদালতের নিষেধাজ্ঞা মেনে রবীন্দ্র সরোবরে পুজো করা যাবে না। শীর্ষ আদালতের নির্দেশের কথা শুনে এদিন কেএমডিএ চেয়ারম্যান পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, “পুন্যার্থীদের ধর্মীয় ভাবাবেগের কথা ভেবেই রাজ্য আবেদন করেছিল। কিন্তু কোর্টের মেনেই কেএমডিএ ও রাজ্য সরকার সরোবরের বিকল্প জলাশয়ে ৪৪টি ঘাট ঘাট তৈরি করে পরিষেবা দেবে।”
ছটপুজো নিয়ে এবছর জাতীয় পরিবেশ আদালত ও হাই কোর্ট, দু’দফা বিধিনিষেধ চালু করতে নির্দেশ দিয়েছে। পরিবেশ আদালত যেমন সরোবরে পুজো করা যাবে না বলে আগেই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, তেমনই হাই কোর্ট ছটপুজোয় কোনও শোভাযাত্রা বা বাজি ফাটানো যাবে না বলেও রায় দিয়েছে। বস্তুত দুই রায়কে মান্যতা দিতে গিয়ে কলকাতা পুলিশ ও পুরসভা এবং কেএমডিএ তাই একগুচ্ছ বিধি নিষেধ জারি করেছে। বিশেষ করে সংক্রমণ বৃদ্ধিতে উদ্বিগ্ন কেএমডিএ।
গতবছরের চেয়ে এবছর বেশি সংখ্যায় জলাশয় ও ৪৪টি ঘাট তৈরি করছে। মাস্কহীনদের ঘাটে ঢুকতে দেওয়া হবে না পুণ্যার্থীদের। অবশ্য পুরসভার তরফে মাস্ক বিলি করা হবে। গঙ্গার ১৬টি ঘাটেও পুন্যার্থীদের ছটপুজো করার জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা করছে পুরসভা। এমনকি বন্দরের ১০ নম্বর গেটও ব্রতপালনকারীদের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে।
পরিবেশবিদদের অভিযোগ, একই নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও পুলিশের উদাসীনতায় গতবছর ৩৫ হাজার পুন্যার্থী সরোবরের তালা ভেঙে জোর করে ঢুকে পুজো করেছিলেন। এবছর ফের যদি সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয় তবে কী করবে পুরসভা ও পুলিশ? প্রশ্ন করেছেন পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.