অর্ণব আইচ: সোমবার চিৎপুরে দুর্ঘটনাগ্রস্ত স্কুলবাসটির ফিট সার্টিফিকেট বা চালকের লাইসেন্স এখনও পায়নি পুলিশ। গতকালই বাসের চালককে চিৎপুর থানার পুলিশ তলব করলেও, আজ পর্যন্ত তিনি হাজিরা দেননি বলে অভিযোগ পুলিশের। গতকালের এই দুর্ঘটনার পর কলকাতার সমস্ত স্কুলবাস এবং পুলকারগুলির স্বাস্থ্যপরীক্ষার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে লালবাজারের তরফে।
গতকাল বেলার দিকে স্কুলে যাওয়ার পথে চিৎপুর লকগেটের কাছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি পোস্টে ধাক্কা মেরে উলটে যায় বাস। বাসের প্রায় ২৫ জন পড়ুয়ার সকলেই কমবেশি আহত হয়েছে। আহত হয়ে হাসপাতালে ভরতি বাসচালক সোনু হালদার। কয়েকজনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হলেও, তাদের মধ্যে একটা আতঙ্ক কাজ করছে এখনও। ছোট পড়ুয়ারা স্কুলবাসে উঠতে ভয় পাচ্ছে। তারা প্রত্যেকেই জানিয়েছে যে বাসটি দ্রুতগতিতে চলছিল। তাই দুর্ঘটনা ঘটেছে। দুর্ঘটনার পর তদন্তে নেমে চিৎপুর থানার পুলিশ ডেকে পাঠায় বাসের মালিককে। কিন্তু তিনি এখনও থানায় হাজিরা দেননি বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
এছাড়া পুলিশ সূত্রে আরও খবর, এই বাসের অন্য চালক আছে। বিশেষ প্রয়োজনে গত দু দিন ধরে স্কুলবাসটি চালাচ্ছিলেন উলটোডাঙা গৌরীবাড়ি এলাকার বাসিন্দা সোনু হালদার এবং তিনি কিছুটা গতি বাড়িয়েই বাস চালাচ্ছিলেন। সোমবার একটি বালিবোঝাই লরিকে পাশ কাটাতে গিয়ে সিগন্যাল পোস্টে গিয়ে ধাক্কা মারে বাসটি, তারপরই তা উলটে যায়। সোনু নিজেও গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভরতি। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছেন, সোনুর কাছে কোনও লাইসেন্স পাওয়া যায়নি। তারপর বাসটিরও ফিট সার্টিফিকেটের মেয়াদ জুলাইয়ে শেষ হয়ে যাওয়ার পর পুনর্নবীকরণ করা হয়নি। ফলে এই মুহূর্তে তাও হাতে নেই। বাসের টায়ারের অবস্থা কেমন ছিল, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। অনেকেই মনে করছেন, টায়ারে বেশি গতি থাকার ফলেই চালক শেষ মুহূর্তে বাসের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি।
এমনই বেশ কিছু তথ্য হাতে এসেছে পুলিশের। সবই খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। এই দুর্ঘটনার পর থেকে কলকাতার স্কুলবাস এবং পুলকারগুলিতে বাড়তি নজরদারির নির্দেশ দিয়েছে লালবাজার। বলা হয়েছে, প্রতিটি গাড়ির লাইসেন্স, ফিট সার্টিফিকেট ঠিকঠাক আছে কি না, টায়ারের স্বাস্থ্য কেমন আছে, যান্ত্রিক কোনও গোলযোগ আছে কি না, সব খতিয়ে দেখতে হবে। কোনও বাস বা পুলকারের ফিট সার্টিফিকেট সময়মতো রিনিউ না হলে, তা নিয়েও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করতে হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.