Advertisement
Advertisement
PPE kit

চিনা মাঞ্জায় গলা এফোঁড় ওফোঁড়! PPE কিট পরেই অস্ত্রোপচার করে রোগীর প্রাণ বাঁচালেন ডাক্তাররা

কোভিড টেস্ট করার সময় না থাকাতেই এই সিদ্ধান্ত।

Chinese manja looms large, Doctors performed operation wearing PPE kit | Sangbad Pratidin
Published by: Biswadip Dey
  • Posted:April 20, 2021 11:52 am
  • Updated:April 20, 2021 11:52 am  

অভিরূপ দাস: ঘুড়ির সুতোয় এঁফোড় ওঁফোড় হয়ে গিয়েছিল গলা। রক্তের তোড়ে জামা ভিজে সপসপ করছে। সেই অবস্থাতেই এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতাল। সব জায়গায় ঘুরে মিলেছে একটাই জবাব, “বেড নেই।” শেষমেশ সেই রোগীর জীবন বাঁচালে অ্যাপোলো হাসপাতাল।

করোনা (Coronavirus) আবহে রোগীর কোভিড টেস্ট করিয়ে নিয়ে তারপর অস্ত্রোপচার করাই দস্তুর। কিন্তু মৃতপ্রায় ওই রোগীর কোভিড টেস্ট করালে অনেক দেরি হয়ে যেত। নিজের জীবন বিপন্ন করে পিপিই (PPE) কিট পরে অস্ত্রোপচার করলেন হাসপাতালের মাথা গলার শল্য চিকিৎসক ডাক্তার অভীক ঘোষ। তাঁর কথায়, “অনেকটা রক্ত বেরিয়ে গিয়েছিল রোগীর। গলাটা প্রায় ঝুলছিল। কোভিড টেস্ট করাতে গেলে অনেক দেরি হয়ে যেত। তাই পিপিই পরেই আমরা অস্ত্রোপচার শুরু করে দিই।”

Advertisement

[আরও পড়ুন: সাতদিনের NIA হেফাজতে লস্কর জঙ্গি আলতাফ, জেরায় মিলবে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য]

রবিবার সন্ধের ঘটনা। দক্ষিণ কলকাতার সাদার্ন অ্যাভিনিউ দিয়ে বাইকে করে যাচ্ছিলেন রঞ্জন পারেখ (নাম পরিবর্তিত)। আচমকাই দম বন্ধ হয়ে মাটিতে পরে যান। সন্ধের অন্ধকারে প্রথমটায় ভালো করে ঠাওর হয়নি। মোবাইলের টর্চ জ্বালিয়ে বুঝতে পারেন গলায় চেপে বসেছে কেটে পরা ঘুড়ির চিনা মাঞ্জা। তারই আঘাতে বেরিয়ে এসেছে গলার মাংস। রক্তাক্ত এক যুবককে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে দৌড়ে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় দেশপ্রাণ শাসমল রোডের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। কিন্তু সেখানে বেড মেলেনি। পরবর্তী গন্তব্য ছিল আলিপুর রোডের আরেকটি বেসরকারি হাসপাতাল সেখানেও ‘হাউসফুল’। অগত্যা রোগীকে নিয়ে টালিগঞ্জের এমআর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
কোভিড হাসপাতাল এমআর বাঙুরে অন্যান্য চিকিৎসা আগের তুলনায় যৎসামান্য। নানান হাসপাতাল ঘুরতে ঘুরতে ততক্ষণে নিস্তেজ হয়ে পরেছে রোগী। শরীর থেকে বেরিয়ে গিয়েছে অনেকখানি রক্ত। শেষমেশ রোগীকে নিয়ে অ্যাপোলো হাসপাতালে আসেন উদ্ধাকারীরা। জরুরি বিভাগ থেকে খবর পাওয়ার পর দেরি করেননি হাসপাতালের হেড অ্যান্ড নেক সার্জন অভীক ঘোষ। প্রায় তিন ঘণ্টার অস্ত্রোপচারে ১৭টি সেলাই পরেছে রোগীর গলায়।

ডা. ঘোষের কথায়, ‘‘এ সময় কোভিড টেস্ট করিয়ে নিয়ে তারপর অস্ত্রোপচার শুরু করার নিয়ম। কিন্তু আমি সকলকে বলি কোভিড টেস্ট করালে অনেক দেরি হয়ে যাবে। রোগীর দুটি ব্লাড ভেসেল মারাত্মক ভাবে জখম হয়েছে।’’ গোটা অস্ত্রোপচারে অ্যানাস্থেশিয়ার দায়িত্বে ছিলেন ডা. পৌলমী বিশ্বাস। অস্ত্রোপচারে সহকারী হিসেবে ছিলেন ডা. বিক্রম। পার্ক সার্কাসের মা উড়ালপুল দিয়ে মোটরবাইক নিয়ে যাওয়ার সময় ঘুড়ির চিনা মাঞ্জা সুতো আটকে দুর্ঘটনা নতুন কিছু নয়। তবে রাস্তার উপর এহেন মাঞ্জা সুতোয় গলা এঁফোর ওঁফোর হয়ে যাওয়ার ঘটনা প্রথম।

চাইনিজ মাঞ্জা সুতো বিক্রি আটকাতে একাধিক বাজার অভিযানে নেমেছে লালবাজার। সম্প্রতি তিলজলা, বেনিয়াপুকুর তপসিয়া ও কড়েয়া হানা দিয়ে লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগ চাইনিজ মাঞ্জা সুতো বিক্রেতাদের গ্রেফতারও করে। বাজেয়াপ্ত হয় প্রচুর মাঞ্জা সুতো, লাটাই ও ঘুড়ি। করোনা আবহে বেশিরভাগ হাসপাতালেই বেড নেই। এমতাবস্থায় চাইনিজ মাঞ্জা সুতোয় ঘুরি ওড়াতে বন্ধ করার অনুরোধ জানিয়েছেন চিকিৎসকরাও।

[আরও পড়ুন: ‘নায়িকার ফ্রক ধরে ভোটে জেতার কথা স্বপ্নেও ভাবি না’, অকপট ফিরহাদ হাকিম]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement