ছবি: প্রতীকী।
অর্ণব আইচ: অল্প সুদে ঋণ নিয়ে পুজোয় মজা করুন। নিজের ইচ্ছামতো করুন পুজোর বাজার। হোয়াটস অ্যাপ বা অন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন মেসেজ বা ফোন পাওয়ার পর একটু ভাল জিনিস কেনার জন্য মনটা আনচান করতেই পারে। অথবা এবার পুজোয় ইচ্ছা করতে পারে একটু বেশি টাকা খরচ করতে। এতে সাড়া দিলে ঋণ আপনি পাবেন। কিন্তু গুনতে হবে তার মাশুল। কারণ, পুজোকে সামনে রেখেই ফাঁদ পাতছে চিনা জালিয়াতরা।
এই ফাঁদে পা দিলে সুদ ও আসলের কয়েকগুণ টাকা দিতে হতে পারে আপনাকে। আর টাকা না দিলেই অশ্লীল ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি আসবে। তাই উৎসবের শুরু থেকেই শহরবাসীকে পুলিশ সতর্ক করছে। পুলিশ জানিয়েছে, লোন অ্যাপ বা ঋণ অ্যাপে বিপদ ঘনাচ্ছে। গত বছর থেকেই ঋণ অ্যাপের মাধ্যমে জালিয়াতির রমরমা বেড়েছে। তারই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লালবাজারের গোয়েন্দারা প্রায় দেড়শোটি লোন অ্যাপ বন্ধ করানোর ব্যবস্থা করেছেন। কিন্তু বিপদ এসেছে অন্য দিক থেকে। চিনা জালিয়াতরা নিজেদের মতো নাম পালটে তৈরি করেছে নতুন লোন অ্যাপ। যদিও চিনা জালিয়াতদের ‘অপারেশনাল এরিয়া’ হচ্ছে নেপালের কাঠমান্ডুর আশপাশের কয়েকটি জায়গা, যেখানে রীতিমতো কল সেন্টার খুলে নেপালি তরুণ-তরুণীদের সাহায্যেই তারা কল ও মেসেজ পাঠিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে জালিয়াতি।
পুলিশের মতে, পুজোর উৎসবকে সামনে রেখেই চিনা জালিয়াতরা ফাঁদ পাতছে। পুজোয় একটু ভাল জিনিস কেনার লোভে কেউ তাদের ডাকে সাড়া দিলেই তারা হোয়াটস অ্যাপ মেসেজে পাঠাবে একটি লিংক। সেই লিংকে ক্লিক করলেই ডাউনলোড হবে অ্যাপ। অ্যাপটি খুললেই ওই ব্যক্তি বা মহিলার বিভিন্ন তথ্য চাওয়া হবে। ওই ব্যক্তিগত তথ্যগুলি এড়িয়ে গেলে অ্যাপের মাধ্যমে ঋণ পাওয়া যাবে না। এর পর চাওয়া হবে ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্যও। কারণ ওই অ্যাকাউন্টেই আসবে টাকা। বেশিরভাগ সময়ই পাঁচ থেকে দশ হাজার টাকা ঋণ দেওয়া হয়।
কিন্তু কিছুদিন পর থেকেই ঋণের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সুদ-সহ টাকা ফেরত দেওয়ার পরও বলা হয়, ওই সুদ মাসিক নয়। সাপ্তাহিক অথবা দৈনিক। এই বলেই কয়েক গুণ টাকা চাওয়া হয়। তাদের চাহিদামতো টাকা দিলেও ফের টাকা চায় জালিয়াতরা। এবার সেই ব্যক্তি বা মহিলা টাকা না দিলে শুরু হয় ব্ল্যাকমেল। এর পরও এড়িয়ে চললে তারা আপলোড করতে থাকে অশ্লীল ছবি। লালবাজারের এক আধিকারিক জানান, পুজোর মুখে জালিয়াতরা লোন অ্যাপের ফাঁদ পেতে টাকা হাতানোর ছক কষতেই পারে। তাই পুলিশের পরামর্শ, কেউ যদি মেসেজ পাঠিয়ে বা ফোন করে ঋণ দেওয়ার আবেদন জানায়, প্রথম থেকেই যেন এড়িয়ে চলা হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.