সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিজেপি যুব মোর্চার নবান্ন অভিযান ঘিরে রাজনৈতিক তরজা তো শুরু হয়েইছে। পাশাপাশি, অভিযান রুখতে প্রশাসন কেন, কী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, তা নিয়েও শুরু হয়েছে আলোচনা। পুলিশ প্রশাসনের নিন্দায় মুখর বিজেপি নেতৃত্ব। আর তখনই তাদের পালটা জবাব দিতে সাংবাদিক বৈঠক করলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় (Alapan Banerjee)। পুলিশের পদক্ষেপের পক্ষে যুক্তি সাজালেন তিনিও। দিলীপ ঘোষ, সৌমিত্র খাঁ যেখানে বিক্ষোভকারীদের রুখতে পুলিশের ভূমিকার তীব্র নিন্দা করছেন, মুখ্যসচিবের দাবি, পুলিশ সংযম দেখিয়েছে বলেই অপ্রীতির পরিস্থিতি এড়ানো গিয়েছে।
রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, বেকারত্ব বৃদ্ধি-সহ একগুচ্ছ বিষয়ের প্রতিবাদে পূর্বঘোষণা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার নবান্ন অভিযানে নামে বিজেপি যুব মোর্চা। তা ঘিরে দিনভর উত্তপ্ত ছিল কলকাতা এবং সংলগ্ন হাওড়া। সামাজিক দূরত্ববিধি শিকেয় তুলে ভিড় করে মিছিল দেখে স্বভাবতই তা আটকায় পুলিশ। পালটা মিছিলকারীদের প্রতিরোধের মুখে পড়ে জখম হন উর্দিধারীরাও। তা সত্ত্বেও জলকামান ছুড়ে, লাঠিচার্জ করে মিছিল ছত্রভঙ্গ করা হয়। তাতে রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বিজেপির বেশ কয়েকজন জখম হন। এক কর্মীর কাছ থেকে উদ্ধার হয় আগ্নেয়াস্ত্র। এরপর পুলিশ আরও কড়া হয়ে ওঠে। দু’পক্ষের হাতাহাতির পর সাংবাদিক বৈঠকে বসে দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh),সৌমিত্র খাঁ সকলেই পুলিশের ভূমিকার তীব্র নিন্দা করেন। দিলীপ ঘোষ বলেন, ”পুলিশ সরকারের হয়ে কাজ করেছে। নাহলে একটা মিছিল আটকাতে এভাবে আক্রমণ করা হয় না। আমাদের বহু কর্মী, সমর্থক জখম হয়েছেন।”
এরপর তিনি মিছিল থেকে বাজেয়াপ্ত হওয়া আগ্নেয়াস্ত্রটি নিয়ে বিজেপি রাজ্য সভাপতির বক্তব্য, ”ওটা আমাদের এক কর্মীর কাছে নিরাপত্তার জন্যই ছিল। ওটা লাইসেন্সপ্রাপ্ত। আমার দেহরক্ষীদের কাছেও লাইসেন্সপ্রাপ্ত বন্দুক আছে। ওটা ফেরত দিতে হবে পুলিশকে।” অর্থাৎ দিলীপ ঘোষ বলতে চাইলেন যে মিছিল থেকে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের মধ্যে কোনও নিয়মভঙ্গ তিনি দেখছেন না। যুব মোর্চার সর্বভারতীয় সভাপতি তেজস্বী সূর্যের কথায়, ”যুব কর্মীদের উপর যে হামলা হল, তা রাজ্যের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক কালো অধ্যায়। যতই হামলা হোক, বিজেপি আন্দোলন থামাবে না। এতেই বোঝা যাচ্ছে, মমতা ভয় পেয়ে গিয়েছেন, তাই আন্দোলন রুখতে এত মরিয়া। মমতাকে নবান্ন ছাড়া করে তবে থামব আমরা।”
দিনভর বিজেপি নেতাদের এসব অভিযোগের সুর চড়া হতেই বিকেলে এ নিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ভবানীভবনে গিয়ে রাজ্য পুলিশের ডিজির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। সাংবাদিকদের তিনি স্পষ্ট বলেন, ”আমরা নিয়ম মেনে বিজেপিকে মিছিলের অনুমতি দিয়েছিলাম। কিন্তু মিছিলে বিধিভঙ্গ হয়েছে। একসঙ্গে ২৫ হাজার মানুষ জমায়েত করেছেন। এই অবস্থায় পুলিশ সংযম দেখিয়েছে বলে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।” এছাড়া তিনি আরও জানান যে পুলিশ যে জলকামান ব্যবহার করেছে, তাতে রাসায়নিকবিহীন হোলির রং মেশানো ছিল। তাতে বিক্ষোভকারীদের চিহ্নিত করতে সুবিধা হয়। এই রং নিয়েই বিজেপি সর্বভারতীয় যুব মোর্চার সভাপতি অভিযোগ তুলেছিলেন, ইচ্ছাকৃতভাবে রাসায়নিক মিশ্রিত স্প্রে ব্যবহার করা হয়েছে আন্দোলনকারীদের উপর। তা সহজেই নস্যাৎ করলেন মুখ্যসচিব।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.