স্টাফ রিপোর্টার: এক পিস ডিমের দাম আট টাকা তো ছিলই। আর এখন ডিমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মুরগির মাংসের দামও। আগামী এক মাস কোনও বিয়ের তারিখ নেই। কিন্তু তাতেও একাধিক বাজারে মুরগির মাংসের দাম আড়াইশো ছুঁইছুঁই। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, পিকনিকের মরসুম শুরু হতেই লাফিয়ে বাড়ছে চিকেনের দাম। শেষ দশ দিনে প্রায় ৬০ টাকা দাম বেড়েছে মুরগির মাংসের। এই দাম আরও বাড়বে বলেই জানাচ্ছেন তাঁরা। তাঁদের বক্তব্য, ডিসেম্বর, জানুয়ারি মাস হচ্ছে পিকনিকের মাস। এই সময় চিকেন এবং ডিম দুইয়েরই চাহিদা তুঙ্গে থাকে। তাছাড়া এই সময় হোটেল রেস্তরাঁগুলোতে ডিম, মাংস দুইয়েরই চাহিদা বেড়ে যায়। মানুষজন বেড়াতে বেরিয়ে বাইরে খাওয়া-দাওয়া করেন। মাংসের হরেক পদ তৈরি হয়। তাই চাহিদার পাশাপাশি স্বাভাবিকভাবেই দামও প্রতিবারই চড়ে।
এরাজ্যে কলকাতার অধিকাংশ বাজারেই প্রতি পিস ডিম বিক্রি হচ্ছে সাড়ে সাত টাকায়। কোথাও কোথাও তো ডিমের দাম আট টাকায় পৌঁছে গিয়েছে। দক্ষিণ কলকাতার গড়িয়াহাট বাজারে ডিমের পিস বিকোচ্ছে ৮ টাকা দরে। ব্যবসায়ীদের দাবি, শুধু ডিসেম্বর মাসের প্রথম ১৫ দিনেই একলাফে অনেকটা দাম বেড়েছে ডিমের। ১ ডিসেম্বরে পাইকারি বাজারে প্রতিপিস ডিমের দাম ছিল ৫ টাকা ৬৫ পয়সা করে। মঙ্গলবার তা ছিল সাড়ে ছ টাকার কাছাকাছি। মাঝেই এই ক’দিনের মধ্যে এক পিস ডিমের দাম বেড়েছে ৮০ পয়সার কাছাকাছি। বড়দিন উপলক্ষে এই সময় কেক তৈরির জন্য একধাক্কায় ডিমের চাহিদা বেড়ে যায় অনেকটাই। নভেম্বর মাস থেকেই ডিমের চাহিদা বাড়তে থাকে। বিভিন্ন বেকারি কেক বানানোর জন্য ডিম নেয়। যার জেরে টান পড়ে মধ্যবিত্তের পাতে।
বাংলায় ডিমের জোগানের বেশিরভাগটাই আসে অন্ধ্রপ্রদেশ ও তেলেঙ্গানা থেকে। সম্প্রতি অন্ধ্রে ঘূর্ণিঝড়ের কারণেও ডিমের জোগানে ঘাটতি হয়েছে। আর তার জেরেই বাড়তে শুরু করেছে ডিমের দাম।
অন্যদিকে দিন দশেক আগেও খোলাবাজারে যেখানে ১৬০-১৮০ টাকায় কেজিপ্রতি মুরগি বিকিয়েছে, সেখানে মঙ্গলবার দাম ছিল ২৩০ টাকা। এই দাম আরও ২০-৩০ টাকা বাড়বে বলে জানান পোলট্রি ব্যবসায়ীরা। পোলট্রি শিল্প মহলের দাবি, সাধারণত রাজ্যের মানুষের চাহিদা মেটাতে সপ্তাহে গড়ে সাড়ে তিন লক্ষ কেজির বেশি মুরগি লাগে। কিন্তু পিকনিকের মরসুমে তা কিছুটা বাড়ে। ফলে দামও বাড়ে।
শীতের শুরুতে ভাইরাস হানায় প্রচুর মুরগি মারা যায়। ফলে জোগান কমায় অর্থনীতির নিয়মেই দাম বৃদ্ধি হয়। আর গরিবের প্রোটিন হিসাবে ডিম সব থেকে উপকারী। শীতকালে অধিকাংশ মানুষই ডিম খাওয়াটা কার্যত রুটিনে পরিণত করেন। এসব কারণেই দাম বেড়ে যায় ডিমের। অন্যবারও কেকের মরসুমে ৫০ পয়সা দাম বাড়ে। ওয়েস্ট বেঙ্গল পোলট্রি ফেডারেশনের সদস্য দীপ দে বলেন, ‘‘পিকনিকের কারণে এবং বিয়ের মরশুম চলায় এই সময় মুরগির মাংসের দাম কিছুটা বাড়ে। জানুয়ারি মাস পর্যন্ত এটা চলবে। ২৬০ টাকাও উঠতে পারে দাম।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.