কৃষ্ণকুমার দাস: ভয়ানক দূষণের ধাক্কায় রবীন্দ্র সরোবরের (Rabindra Sarobar) জলে অক্সিজেনের মাত্রা কমায় মাছের মড়ক লেগেছে। তার উপর ঢাকুরিয়া লেকের পরিবেশ সংরক্ষণ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অমান্য করে যদি ছটপুজো হয়, তবে সরোবরের জলজ প্রাণী আর একটাও বেঁচে থাকবে না। সে কারণে এবারও রবীন্দ্র এবং সুভাষ সরোবরে হবে না ছটপুজো।
আগামী ১০ ও ১১ নভেম্বর ছটপুজো হবে। দু’দিনই গঙ্গার ঘাটগুলিতে আলোর ব্যবস্থা থাকবে। প্রত্যেকটি জলাশয়ে স্নান এবং পুজোর পর ব্রতপালনকারীদের পোশাক পরিবর্তনের জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা রাখছে পুরসভা ও কেএমডিএ। রবিবার কেএমডিএ’র তরফে জানানো হয়েছে, ছটপুজোর পুণ্যার্থীরা থাকেন এমন ওয়ার্ডের কাছে হোর্ডিং ও পোস্টার দিয়ে বিকল্প জলাশয়ের কথা জানানো হচ্ছে। চেষ্টা করা হচ্ছে যাতে কেউ দীর্ঘদিনের প্রথা মেনে রবীন্দ্র সরোবরে ব্রত পালনে না যান। গঙ্গার ৩৭টি ঘাট এবং যোধপুর পার্ক, পোদ্দারনগর, আনন্দপুর ও পাটুলি মিলিয়ে মোট ১৭০টি ঘাট ছটপুজোর জন্য প্রস্তুত হয়েছে বলে জানান প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য তথা বিধায়ক দেবাশিস কুমার।
শীর্ষ আদালতের নির্দেশ থাকলেও গতবার পুলিশের সামনে দিয়ে মিছিল করে এসে সরোবরে ছটপুজো করেন পুণ্যার্থীরা। অবশ্য পুলিশ ধর্মীয় আবেগের কথা মাথায় রেখে ব্রতপালনকারীদের উপর লাঠিচার্জ বা বাধা দিতে যায়নি বলে দাবি কেএমডিএ’র। তবে ঢাকুরিয়া লেক নিয়ে লাগাতার আন্দোলন করা একাধিক পরিবেশবিদের অভিযোগ, “সরোবরের ধার ঘেঁষে চলতে থাকা পাঁচতারা ক্লাবগুলি থেকে দূষিত বর্জ্য ও রাসায়নিকের একটা বড় অংশ প্রতিদিনই জলে মিশছে।” জলের অম্লত্ব বৃদ্ধিতে অক্সিজেনের মাত্রা কমতেই কেএমডিএ ‘এরেটর’ বসিয়ে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়িয়ে মাছের মৃত্যু রোখার চেষ্টা করছে।
ইতিমধ্যেই ঢাকুরিয়ার রবীন্দ্র সরোবর পরিদর্শন করেন রাজ্যের বিশিষ্ট পরিবেশবিদ ও আইনজীবী সুভাষ দত্ত। শুধু তাই নয়, সরোবরের বিভিন্ন পয়েন্ট সরেজমিনে পরিদর্শন করে শনিবার তিনি জাতীয় সরোবর দূষণের ২৭টি বিপজ্জনক ক্ষেত্র চিহ্নিত করেছেন। ওই ক্ষেত্রগুলির ছবি ও তথ্য আগামী সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্টে সরোবরের পরিবেশ সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে জমা দেবেন বলেও জানান সুভাষবাবু। তাঁর সঙ্গে ছিলেন সরোবর দূষণের অভিযোগ নিয়ে জাতীয় পরিবেশ আদালতে মামলাকারী পরিবেশকর্মী সুমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও কেএমডিএ ইতিমধ্যে সরোবরের দূষণ রোধে বেসরকারি নিরাপত্তার পাশাপাশি জলের অক্সিজেনের মাত্রা বৃদ্ধির জন্য একাধিক পদক্ষেপ করেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.