সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনার (Coronavirus) দ্বিতীয় ধাক্কায় বেসামাল দেশ তথা রাজ্য। চিকিৎসা পরিষেবা ভালভাবে চালু রাখার জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সরবরাহে সংকট, টান পড়েছে টিকায়। বহু সরকারি হাসপাতালে দীর্ঘক্ষণ টিকার জন্য অপেক্ষা করেও নিষ্ফল হয়ে ফিরতে হচ্ছে সাধারণ নাগরিকদের। এই মুহূর্তে দেশে ৪৫ বছরের ঊর্ধ্ব ব্যক্তিদের টিকাদান পর্ব চলছে। কিন্তু তাতেও পর্যান্ত প্রতিষেধক মিলছে না। আরও অভিযোগ, সাধারণ মানুষকে বঞ্চিত করে প্রভাবশালীদের আগেভাগে ভ্যাকসিন (Corona vaccine)দেওয়া হচ্ছে। কলকাতার সরকারি হাসপাতালগুলিতেও একই অবস্থা। শুক্রবার দক্ষিণ কলকাতার শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে এ নিয়ে প্রবল বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হল। হাসপাতালের কর্মীদের সঙ্গে লাইনে দাঁড়ানো সাধারণ জনতার তীব্র বাদানুবাদে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ল গোটা হাসপাতাল চত্বরে।
গত জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে দেশজুড়ে করোনার বিরুদ্ধে গণটিকাকরণ শুরু হওয়ার পর থেকে পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন মিলেছিল বিভিন্ন জায়গায়। তবে যত সময় গিয়েছে, তত ভ্যাকসিন সরবরাহ কমেছে। এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক স্তরে সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য প্রতিবেশী দেশগুলিতে টিকা রপ্তানি করেছে ভারত। ফলে টান পড়েছে দেশের অভ্যন্তরীণ সরবরাহে। বিশেষ করে বাংলায় করোনা প্রতিষেধক সরবরাহে বেশি কোপ পড়েছে। এ নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বারবার সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। শুক্রবারও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে বাংলার বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে পর্যাপ্ত সংখ্যক ডোজ অমিল।
শুক্রবার দুপুরে তার জেরেই অশান্তি বাধল শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে। সূত্রের খবর, এদিন সকাল থেকে টিকা নেওয়ার জন্য হাসপাতালের বাইরে লাইন দিয়েছিলেন শয়ে শয়ে মানুষ। কিন্তু দুপুর নাগাদ তাঁদের জানানো হয় যে পর্যাপ্ত সংখ্যক টিকা নেই। এরপরই লাইনে দাঁড়ানো আমজনতা বিস্ফোরক অভিযোগ তোলেন। তাঁদের অভিযোগ, এই পরিস্থিতিতে টিকাদানের ক্ষেত্রে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। সাধারণ মানুষকে উপেক্ষা করে, বঞ্চিত করে প্রভাব খাটিয়ে আগেভাগে করোনা প্রতিষেধক নিচ্ছে একদল, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও এই ‘অনৈতিক’ কাজের সঙ্গে যুক্ত। এ নিয়ে হাসপাতাল কর্মীদের সঙ্গে তাঁদের বাদানুবাদ শুরু হয়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরে অবশ্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে শান্ত হন উত্তেজিত জনতা। তবে সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে ভ্যাকসিনের অভাবে এই ছবিটা অচিরেই দেখা যেতে পারে অন্যান্য হাসপাতালেও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.