রাহুল চক্রবর্তী: বিধানসভার অধিবেশনে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি। নজিরবিহীনভাবে অধিবেশন চলাকালীনই একপ্রকার হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়লেন তৃণমূল এবং কংগ্রেস বিধায়করা। পরিস্থিতি নিয়্ন্ত্রণে আনতে আসরে নামতে হল খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
ঘটনার সূত্রপাত, কংগ্রেস বিধায়ক প্রতিমার রজকের একটি প্রশ্ন ঘিরে। বড়ঞার বিধায়ক পরিবহণ মন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন, “সরকারি বাসগুলিতে এখন যে লোক নেওয়া হচ্ছে, সেগুলি কি সরকারি নিয়ম মেনে হচ্ছে? আমার কাছে খবর আছে, মোটা টাকার বিনিময়ে বাসে কর্মী নিয়োগ হচ্ছে। একেক জনকে নিয়োগ করার জন্য ৩-৪ লক্ষ টাকা নেওয়া হচ্ছে।” কংগ্রেস বিধায়কের এই প্রশ্নে রেগে অগ্নিশর্মা হয়ে যান পরিবহণ মন্ত্রী। তাঁর দাবি, কংগ্রেস বিধায়ক মিথ্যা অভিযোগ করছেন। শুভেন্দু বলেন,”উনি যে অভিযোগ করছেন, তা হয় প্রমাণ করতে হবে। নাহয় বিধানসভায় দাঁড়িয়ে ক্ষমা চাইতে হবে।” সঙ্গে সঙ্গে শুভেন্দুকে পালটা দেন কংগ্রেস বিধায়কও। তিনি বলেন, “বিধানসভায় ক্ষমা চাইতে হবে কিনা, তা ঠিক করার এক্তিয়ার মন্ত্রীর নেই। সেটা ঠিক করবেন স্পিকার।” প্রতিমার এই মন্তব্য তেলেবেগুনে রেগে ওঠেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি একপ্রকার বিদ্রুপের সুরেই বলেন,”মুর্শিদাবাদ থেকে কংগ্রেসের আর কেউ জিততে পারবে না। এরপর মুর্শিদাবাদ ফাঁকা হয়ে যাবে।”
পরিবহণমন্ত্রীর এই মন্তব্যে চটে যান মুর্শিদাবাদেরই ভরতপুরের কংগ্রেস বিধায়ক কমলেশ চট্টোপাধ্যায়। তিনি শুভেন্দুর উদ্দেশ্যে রীতিমতো চিৎকার করে তাঁর দিকে এগিয়ে যান। কমলেশ্বরের সঙ্গে যোগ দেন বাম ও কংগ্রেসের অন্যান্য বিধায়করা। বিধায়ক মন্ত্রীর সামনে যাওয়ার আগেই অবশ্য তাঁকে আটকে দেন নিরাপত্তারক্ষীরা। এরপর আসরে নামেন তৃণমূল বিধায়করাও। শুভেন্দুর সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন তাঁরা। একপ্রকার হাতাহাতি শুরু হয়ে যায় বাম-কংগ্রেস এবং তৃণমূল বিধায়কদের মধ্যে। বাধ্য হয়ে আসরে নামতে হয় মুখ্যমন্ত্রীকে। ওয়েলে নেমে দু’পক্ষের বিধায়কদের ধমক দেন তিনি। নিজের দলের বিধায়কদেরও ভর্ৎসনা করেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে নিয়ন্ত্রণে আসে পরিস্থিতি। পরে, দু’পক্ষকেই সংযত থাকার নির্দেশ দেন স্পিকার। আর শুভেন্দু অধিকারীর ‘ফাঁকা হয়ে যাওয়া’ মন্তব্যটি বিধানসভার রেকর্ড থেকে মুছে ফেলা হয়। সতর্ক করা হয় কংগ্রেস বিধায়কদেরও।
এদিকে বিধানসভার এই কাণ্ড নিয়ে মুখ খুলেছেন বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরিও। অধীরের দাবি, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর সেনাপতিরা ধমকে চমকে কংগ্রেস বিধায়কদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করছেন।বিধানসভায় দাদাগিরি চলছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.