সুব্রত বিশ্বাস: হাওড়া স্টেশনের নতুন ও পুরনো দু’টি বিল্ডিংয়ের কনকোর্স এরিয়া ঘিরে দিয়ে বসানো হচ্ছে অজস্র স্টিলের বেঞ্চ। রেল যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্যের কথা বললেও গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনের যাত্রী চলাচলে অসুবিধার সৃষ্টি করবে বলে মনে করেছেন কর্মীরা। এটা সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতি বলে বর্ণনা করে অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা। হাওড়ার ডিআরএম ইশাক খান এই পদক্ষেপ যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য বললেও স্পষ্ট করেন, “বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। প্রয়োজনে খুলে ফেলা হবে। আগে স্টেশনে আড়াইশো সিট ছিল, এখন সংখ্যা আটশো।”
হাওড়া, শিয়ালদের মতো বড় স্টেশনগুলিতে সৌন্দর্যায়নের কাজ চলছে দ্রুততার সঙ্গে। দুঃসময়ে কোটি কোটি টাকা খরচ করছে রেল। এই খরচ জলে যাবে বলে দাবি করেছে রেল কর্মচারী সংগঠনগুলি। পূর্ব রেলের মেনস ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অমিত ঘোষ বলেন, “স্টেশনগুলি তুলে দেওয়া হবে রেলওয়ে স্টেশন ডেভলপিং অথরিটির হাতে। তারা স্টেশন নিয়ে পুরোনো সব কিছু ভেঙে নিজেদের মত করে করবে। তবে অহেতুক এই কাজ করে রেলের ক্ষতি করা কেন? যাত্রীবাহী ট্রেনের থেকে রেলের ২৭ শতাংশ আয় হয়। ট্রেন বন্ধ রেখে ক্ষতি বাড়ানোর পরিকল্পনা কাজ করছে এক্ষেত্রে। রাজ্যের ইতিবাচক নির্দেশ পেয়েও রেল ট্রেন না চালিয়ে চুপ থাকার অর্থ, তাকে ক্ষতি দেখিয়ে বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার উদ্দেশ্য।” পূর্ব রেলের মেনস কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক বিনোদ শর্মা আরও খুলে বলেন, ”পাঁঠা বলি দেওয়ার আগে তাকে সাজানো হয় সিঁদুর, মালা, গঙ্গা জল দিয়ে। একই ভাবে রেলকে বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়ায় সাজানোর কাজ চলছে। ভাঙাচোরা থাকলে নেবে না, সেই আশঙ্কা রয়েছে রেলের।”
রেলকর্তাদের একাংশের কথায়, লোকাল ট্রেন চলছে না। হাওড়া, শিয়ালদহ ফাঁকা স্টেশন পেয়ে যে হারে সাজানো হচ্ছে তা, ট্রেন চললে রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব হবে না। এরপর এই স্টেশনগুলিতে প্রাইভেট ট্রেন চলবে। লোকাল ট্রেন অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হবে। হাওড়া স্টেশনের (Howrah Station) অদূরে সাল্টগোলা এলাকায় শহরতলির ট্রেন টার্মিনাল করার পরিকল্পনা বহু আগের। এবার তাও কার্যকর হতে পারে। করোনা পরিস্থিতিতে যখন সারা দেশ উদ্বিগ্ন, তখন গোপনে রেল বেসরকারি করার নীতিগুলি কার্যকর করে চলেছে বলে তারা মনে করেন। এই নীতির বিরোধিতা করে গণআন্দোলন গড়ে না তুললে এত বড়ো সরকারি সংস্থা শেষ হয়ে যাবে বলে তাদের ধারণা। পূর্ব রেলের মেনস ইউনিয়ন সব রাজনৈতিক দলের কর্মী সংগঠনকে নিয়ে আন্দোলন করতে চলেছে খুব শীঘ্রই বলে তারা জানান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.