শুভঙ্কর বসু: কোচবিহারের মাথাভাঙায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিচালনার ঘটনায় স্পষ্টই অস্বস্তিতে নির্বাচন কমিশন (State Election Commission)। শনিবার সন্ধেবেলা নির্বাচন কমিশনের দপ্তরে সাংবাদিক বৈঠকে এই সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর কার্যত এড়িয়ে গেলেন রাজ্যের নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাব। জানালেন, বিশেষ পরিস্থিতিতে বুথের বাইরে গুলি চলেছে। এ নিয়ে জেলাশাসক, পুলিশ সুপার এবং বিশেষ পর্যবেক্ষক ও পুলিশ পর্যবেক্ষকের রিপোর্ট হাতে এসেছে, তা দিল্লি নির্বাচন কমিশনে পাঠানো হবে। তবে সূত্রের খবর, বুথ বাঁচাতে এবং আত্মরক্ষার্থেই গুলি চালিয়েছে কেন্দ্রীয় সশস্ত্র বাহিনী, এমনই উল্লেখ রয়েছে পর্যবেক্ষকদের রিপোর্টে। এদিকে, সকালে শীতলকুচি বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত পাঠানটুলিতে আনন্দ বর্মন নামে নবীন ভোটারের মৃত্যুর ঘটনায় ২ জনকে আটক করা হয়েছে এদিন সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন সিইও।
একুশে বঙ্গের ভোটে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে রক্তাক্ত নির্বাচন চলছে। সকাল থেকে শুধুমাত্র কোচবিহার জেলাতেই মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। এর মধ্যে শীতলকুচি (Sitalkuchi) বিধানসভা কেন্দ্রের মাথাভাঙা ফাঁড়ি এলাকায় জনসমাগম ও অশান্তি এড়াতে কেন্দ্রীয় সশস্ত্র বাহিনীর (CAPF) গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন ৪ জন। এ নিয়ে পুলিশ সুপারের বক্তব্য, “এক যুবক অসুস্থ হয়ে পড়ছিল।তার চিকিৎসা করছিল স্থানীয় কয়েকজন। সেই সময় তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করছিল বাহিনীর কয়েক জন জওয়ান। ঠিক তখন গুজব ছড়ায়, সিআইএসএফের মারে ওই যুবক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তার পরই প্রায় তিনশো-সাড়ে তিনশো গ্রামবাসী, যাঁদের মধ্যে অধিকাংশই মহিলা, জওয়ানদের ঘিরে ধরে। উত্তেজনা ছড়ায়। অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলে। এমনকী, ব্যালট ছিনতাইয়ের অবস্থা তৈরি হয়। তখন নিয়ম মেনেই গুলি চালায় বাহিনী। ১৫ রাউন্ড গুলি চলে। ৪ জনের মৃত্যু হয়।”
পরবর্তীতে এই জেলায় কমিশনের নিযুক্ত পর্যবেক্ষক শরদ লক্ষ্মণ এবং পুলিশ পর্যবেক্ষক প্রতাপ এমও রিপোর্ট দেন। সূত্রের খবর, তাঁদের রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে, বুথ বাঁচাতে এবং আত্মরক্ষার স্বার্থেই বাহিনী গুলি চালিয়েছিল। এ নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোরও শুরু হয়েছে। তৃণমূলের প্রতিনিধিরা এ নিয়ে দুপুরের পর কমিশনের দ্বারস্থ হওয়ার পর সন্ধের দিকে বিজেপির প্রতিনিধি দলও দেখা করে সিইও আরিজ আফতাবের সঙ্গে। এরপর সাংবাদিক বৈঠকে এই সংক্রান্ত প্রশ্নের সরাসরি উত্তর দেওয়া এড়িয়ে যান CEO.
West Bengal: A BJP delegation met EC over the death of 5 people in 2 separate incidents in Sitalkuchi.
“In my opinion, these incidents happened because of Chief Minister Mamata Banerjee’s old statement calling for gherao of Central forces,” says BJP MP Jyotirmay Singh Mahato pic.twitter.com/6cmYupkMjl
— ANI (@ANI) April 10, 2021
অন্যদিকে সূত্রের খবর, কমিশনকে দেওয়া রিপোর্টে রাজ্যের পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে জানিয়েছেন, শীতলকুচির জোড়পাটকির যে ১২৬ নম্বর বুথের বাইরে এই ঘটনা ঘটেছে, সেখানে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে সংঘর্ষ চলছিল। তাতে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া ব্যহত হচ্ছিল। খবর পেয়ে সেখানে কুইক রেসপন্স টিম (QRT) পাঠানো হয়। এরপর দু’পক্ষের সংঘর্ষ আরও তীব্র হতে থাকলে পরিস্থিতি সামলাতে ময়দানে নামে কেন্দ্রীয় বাহিনী। কিন্তু গ্রামের মানুষজন তাদের ঘিরে ধরেন। তাদের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। সেই সময় আত্মরক্ষার্থেই গুলি চালাতে হয় কেন্দ্রীয় বাহিনীকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.