ছবিতে নবান্নে বৈঠকে মমতা-রাজনাথ, ছবি পিন্টু প্রধান।
সন্দীপ চক্রবর্তী: মাওবাদী দমনে মুখ্যমন্ত্রীর নেওয়া যাবতীয় পদক্ষেপের ভূয়সী প্রশংসা করলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি জানান, রাজ্যের নিরাপত্তা সুরক্ষিত করতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রয়োজন রয়েছে। মাওবাদী সমস্যা, আন্তঃরাজ্য সীমা নিরাপত্তা, সীমান্ত সুরক্ষার মতো একাধিক ইস্যুতে নবান্নে সোমবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই এই ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে বৈঠকে ছিলেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাস, বিহারের উপ মুখ্যমন্ত্রী সুশীল মোদি ও ওড়িশার অর্থমন্ত্রী। ছিলেন মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, ডিজি-সহ অন্য আধিকারিকবৃন্দ।
দুপুর পর্যন্ত যা খবর, তাতে মাওবাদী সমস্যার পাশাপাশি বিহার ও ঝাড়খণ্ড থেকে বহিরাগত দুষ্কৃতীরা সীমান্ত পেরিয়ে ঢুকে বাংলায় গন্ডগোল পাকাচ্ছে। এই অভিযোগ নিয়েও আলোচনা চলছে। এ রাজ্যে মাওবাদী সমস্যা কার্যত নেই। কিন্তু পার্শ্ববর্তী রাজ্য ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড এখনও সেই সমস্যায় ভুগছে বলে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা চাইছিল সব পক্ষই। তার প্রেক্ষিতেই এদিন পূর্বাঞ্চলীয় কাউন্সিলের এই বৈঠক। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর একান্তে কথা হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। রাজনৈতিকভাবে নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহের বিরুদ্ধে তীব্র সংঘাত চললেও রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভাল। সেই প্রেক্ষিতে এই বৈঠকের অন্য গুরুত্বও রয়েছে। শুধু সীমান্ত সমস্যা নয়, বাংলার পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলির দিক থেকে ইদানীং যে যে সমস্যাগুলি দেখা দিচ্ছে, সে আসানসোল কাণ্ড হোক অথবা সাম্প্রতিক ইসলামপুর কাণ্ড সবটাই এই পরিসরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরা হবে। অভিযোগ, ওই সব পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলি থেকে এসে এখানে সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়ানো হচ্ছে অথবা মুখে কালো কাপড় বেঁধে এসে গুন্ডামি করা হচ্ছে। এ নিয়ে ইতিমধ্যে ওই সব রাজ্যকে অভিযোগ জানানো হয়েছে। রাজ্যের কয়েকটি জায়গায় জমিজটে আটকে গিয়েছে সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর আউটপোস্ট তৈরির কাজও। বিএসএফের তরফে তা আগেও জানানো হয়েছে। সেই বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব রাজ্যের কর্তাদের সঙ্গে পৃথকভাবে কথা বলতে পারেন। এর আগে গত ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে বৈঠকে এসেছিলেন রাজনাথ। তখন রোহিঙ্গা, সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া, বিএসএফের আউটপোস্ট-সহ বেশ কিছু সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেছেন। রোহিঙ্গাদের চিহ্নিত করতে বায়োমেট্রিক ডেটার ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তার কথাও বলেছেন।
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথাবার্তায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে রাজ্যের তরফে কিছু দাবিও রাখা হয়েছে বলে নবান্ন সূত্রে খবর। এবারও রাজ্যের দাবি নিয়ে দু’জনের একান্ত বৈঠক হয় কিনা সেদিকে তাকিয়ে সব মহলই। তবে প্রাথমিকভাবে খবর, আজকের বৈঠকে মূলত গত ডিসেম্বরে যে সব আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হয়েছিল, তার পর্যালোচনা হবে। জানতে চাওয়া হবে রাজ্যগুলির সমস্যা। আগেরবার উভয়পক্ষ মিলে যে সিদ্ধান্তগুলি নিয়েছিল, তা কতটা কার্যকর হয়েছে, তাও খতিয়ে দেখা হতে পারে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.