Advertisement
Advertisement

Breaking News

RG Kar case

আর জি করে গণধর্ষণ হয়নি, হাই কোর্টে রিপোর্ট জমা দিয়ে জানাল CBI

বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের প্রশ্ন, তাহলে এখন আপনারা কীসের তদন্ত করছেন?

CBI submits report to High Court in RG Kar case

ফাইল ছবি।

Published by: Subhankar Patra
  • Posted:March 28, 2025 5:27 pm
  • Updated:March 28, 2025 6:55 pm  

গোবিন্দ রায়: “এটা গণধর্ষণ নয়। মেডিক্যাল বোর্ডের সিদ্ধান্ত ও আমাদের তদন্ত তাই বলছে।” শুক্রবার হাই কোর্টে আর জি কর মামলার শুনানিতে কেস ডায়রি ও রিপোর্ট পেশ করে এমনটাই জানালেন সিবিআইয়ের আইনজীবী রাজদীপ মজুমদার। তারপরই বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের প্রশ্ন, তাহলে এখন আপনারা কীসের তদন্ত করছেন? জবাবে সিবিআই জানিয়েছে, ঘটনার পরে তথ্যপ্রমাণ লোপাট করা-সহ অন্যান্য অপরাধের ক্ষেত্রে কারা, কারা যুক্ত ছিল সেটাই দেখা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত কাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, তার তালিকা সিবিআইয়ের কাছে চেয়েছে আদালত। কলকাতা পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া কেস ডায়রিও পেশ করার জন্য সিবিআইকে মৌখিক নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। দু’সপ্তাহ পরে ফের শুনানি।

সুপ্রিম কোর্টের অনুমতি পাওয়ার পর হাই কোর্টে আলাদা মামলা দায়ের করেন নির্যাতিতার বাবা-মা। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে সেই মামলা ওঠে। প্রথম শুনানিতে আর জি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের খুন ও ধর্ষণ কাণ্ডের কেস ডায়েরি তলব করেন বিচারপতি। আজ, শুক্রবার সেই শুনানিতে কেস ডায়েরি ও রিপোর্ট জমা দিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই।

Advertisement

বিচারপতি প্রথম শুনানিতেই প্রশ্ন তুলেছিলেন এটা ধর্ষণ না কি গণধর্ষণ? গণধর্ষণ হলে আর কারা এই কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত? এদিন রিপোর্ট দিয়ে সিবিআই জানাল, ঘটনার সব তথ্যপ্রমাণ, ডিএনএ ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। ১৪ জন ডাক্তার নিয়ে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন হয়। মেডিক্যাল বোর্ডের সিদ্ধান্ত ও তাঁদের তদন্ত বলছে এটা গণধর্ষণ নয়। এরপর বিচারপতি প্রশ্ন করেন, তাহলে আপনাদের মতে অভিযুক্ত একজনই? সিবিআইয়ের আইনজীবী রাজদীপ মজুমদার বলেন, “হ্যাঁ, এখনও পর্যন্ত তদন্তে আমরা তাই পেয়েছি।”

বিচারপতি ঘোষ আরও জানতে চান, এই মামলায় শুধুমাত্র একজন অভিযুক্তের ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়েছে না কি, আরও কারও? উত্তরে সিবিআই জানায়, একজন পুরুষের ডিএনএ পাওয়া গিয়েছিল, তাই একজনের করা হয়েছে। রিপোর্টে তা উল্লেখ করা আছে।

নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবী সুদীপ্ত মৈত্র বিচারপতির উদ্দেশে বলেন, “পুলিশ ও সিবিআইয়ের পর্যায় ভিত্তিক তদন্ত পদ্ধতি দেখুন, আপনি বিস্মিত হয়ে যাবেন।” তাঁর আরও দাবি, মামলায় সহকারী সুপারের বয়ান নেওয়া হয়নি। পরিবার যতক্ষণ না পর্যন্ত এফআইআর দায়ের করেছে, ততক্ষণ পর্যন্ত হাসপাতালের অধ্যক্ষ বা সুপার-সহ কেউই এফআইআর করার প্রয়োজন মনে করেননি। তবে সহকারী সুপারের বয়ান নেওয়া হয়েছে বলে আদালতে জানিয়েছেন সিবিআইয়ের আইনজীবী।

সিবিআইয়ের কাছে আদালত আরও জানতে চায়, তারা তাহলে কীসের তদন্ত করছে? সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, ঘটনার পরে তথ্যপ্রমাণ নষ্ট ও লোপাট করা-সহ অন্যান্য অপরাধের ক্ষেত্রে কারা যুক্ত ছিল সেটাই তারা দেখছে। বিচারপতি ঘোষ পালটা প্রশ্ন করেন, যে তদন্ত আপনারা করছেন সেটা কবে শেষ হবে? সিবিআই জানায়, সেটা এখনই বলা সম্ভব না। সমস্ত নার্স, চিকিৎসক এবং যাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করার দরকার ছিল, তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

এরপরই রাজ্যের তরফে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মামলা গ্রহণের ক্ষেত্রে উৎসাহ দেখা যায়, কিন্তু শেষ কবে হবে সেটা বলতে পারছেন না। তাহলে কীভাবে হবে? রিজওয়ানুর রহমানের মামলার ১৮ বছর হয়ে গেলেও বিচার প্রক্রিয়া এখনও শেষ হয়নি।” রাজ্য আরও সওয়াল করে বলে, তদন্ত শেষ, বিচার প্রক্রিয়া শেষ, বিশেষ আদালত সাজা ঘোষণা করেছে। এরপরও একই অভিযোগের ক্ষেত্রে পরবর্তী তদন্ত করা যায় না। তবে নিয়ম মেনে আদালত তদন্তের নির্দেশ দিলে কোনও আপত্তি নেই বলেই আদালতে জানিয়েছেন রাজ্যের আইনজীবী।

সিবিআই জানায়, পরবর্তী পর্যায়ে তদন্ত আদালতের নজরদারিতে হবে কি না, তা নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট কোনও নির্দেশ দেয়নি। যদিও এই আদালত যা নির্দেশ দেবে সিবিআই সেটা মেনে চলতে বাধ্য বলে জানিয়েছে তারা। সিবিআইয়ের বর্তমান তদন্ত কেন আটকে রয়েছে? তা জানতে চেয়ে পরবর্তী শুনানিতে পুলিশের থেকে পাওয়া কেস ডায়েরি পেশ করতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
News Hub