রাহুল রায়: এসএসসিতে (SSC Scam) ব্যাপক দুর্নীতির হদিশ। নবম, দশম, একাদশ, দ্বাদশ এবং এসএসসির গ্রুপ সি ও ডি-র নিয়োগে কতজনের নম্বরে হেরফের হয়েছে, এদিন তার ফরেনসিক রিপোর্ট পেশ করল সিবিআই (CBI)। একইসঙ্গে জানাল কোন ক্ষেত্রে কত বেআইনি নিয়োগ হয়েছে। কলকাতা হাই কোর্টে জমা পড়া সেই রিপোর্ট দেখে স্তম্ভিত বিচারপতি। বললেন, “কথা বলার ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না।”
সিবিআই জানিয়েছে, ১৫ সেপ্টেম্বর দিল্লি ও কলকাতায় তল্লাশি অভিযান চালায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। NYSA নামক একটি সংস্থার অফিসে তল্লাশি চালানো হয়। এরা প্রশ্ন, ওএমআর শিট তৈরি করত। মূল নথি তারা উদ্ধার করতে পেরেছে বলে জানিয়েছে সিবিআই। তাদের দাবি, এক কর্মীর বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। সেখান থেকে ৩ টি হার্ড ডিস্ক উদ্ধার হয়েছে। তাতে ওএমআর শিটের কপি ছিল। সেখানে প্রাপ্ত নম্বরের সঙ্গে বিস্তর ফারাক রয়েছে এসএসসির সার্ভারে থাকা চূড়ান্ত নম্বরের।
রিপোর্টে সিবিআই জানিয়েছে, একাদশ – দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগে ৯০৭ জন প্রার্থীর নম্বর পরিবর্তন করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৬৯১ জন প্যানেলে ছিল। ওয়েটিং লিস্টে ছিল ১৩৮ জন। নবম – দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগে ৯৫২ জনের নম্বর পরিবর্তন করা হয়েছে। এর মধ্যে ৭৯৬ জন প্যানেলে ছিল। ১১৪ জন ওয়েটিং লিস্টে ছিল। গ্রুপ সি-তে ৩৪৮১ জনের নম্বর পরিবর্তন করা হয়েছে। ২০৩৭ জন প্যানেলে ছিল। ১২২২ জন ওয়েটিং লিস্টে ছিল। গ্রুপ ডি-তে ২৮২৩ নম্বর পরিবর্তন করা হয়েছে। ১৬৯৮ জন প্যানেলে ছিল। ৯৮৪ জন ওয়েটিং লিস্টে ছিল। এরা কেউ শূন্য, এক, দুই পেয়েছে। কিন্তু স্কুল সার্ভিস কমিশনের সার্ভারে এদের নম্বর ৫০,৫২ ,৫৩ আছে। এদিন আদালতে স্কুল সার্ভিস কমিশন জানিয়েছে, নবম – দশমে ১৮৩ জন প্রার্থীর নিয়োগ অবৈধ। তাদের সকলেরই ব়্যাংক বদল করা হয়েছে।
সিবিআই তদন্তের রিপোর্ট দেখে স্তম্ভিত বিচারপতি বলেন, দুর্নীতির ব্যাপকতা আমাকে আতঙ্কিত করেছে। সুবীরেশ ভট্টাচার্য বা কল্যাণময় গাঙ্গুলি কোনও ব্যক্তির নির্দেশ ছাড়া কাজ করতেন না। রাজ্যবাসী সেই ব্যক্তির নাম জানতে চায়। কার নির্দেশে এই দুর্নীতি হয়েছে সেটা জানতে চাই।”
এদিন শুনানির সময় সুবীরেশ ভট্টাচার্যের সঙ্গে তাঁর পুরনো সম্পর্কের কথাও তুলে ধরেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়। সিবিআইয়ের আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে বিচারপতির মন্তব্য, “আমি সুবীরেশ ভট্টাচার্যকে চিনি। আমি এসএসসির আইনি উপদেষ্টা ছিলাম। আমার মতে, তিনি একজন অত্যন্ত ভদ্রলোক। তার ছেলে এবং মেয়ে উচ্চশিক্ষিত এবং তারা বাইরে থাকেন। তার স্ত্রীও সম্ভবত অধ্যাপক। বাহ্যিক চাপ ছাড়া তিনি এই কাজ করেছেন বলে আমি বিশ্বাস করি না।সুবীরেশ ভট্টাচার্যকে আমি অনুরোধ করব, সব নাম বলে দিন। সুবীরেশবাবুকে বলবেন অভিজিৎ গাঙ্গুলি তাঁকে ভোলেনি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.