ফাইল ছবি
স্টাফ রিপোর্টার: নারদ কাণ্ডের ফুটেজ-সহ যাবতীয় সরঞ্জাম একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের লকারে রাখতে নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর৷ সেই ফুটেজই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে তদন্ত শুরু করতে শুক্রবার সিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নিশীথা মাত্রের ডিভিশন বেঞ্চ৷
নির্দেশ পাওয়া মাত্রই কাজে নেমে পড়ল সিবিআই৷ শনিবার সকাল ১০টা বেজে ৫৫মিনিট নাগাদ হাই কোর্টের প্রতিনিধিদের নিয়ে স্ট্র্যান্ড রোডের ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে পৌঁছয় সিবিআইয়ের আট সদস্যের একটি দল৷ দলের নেতৃত্বে ছিলেন সিবিআইয়ের এসপি পদমর্যাদার অফিসার নগেন্দ্র প্রসাদ৷ প্রায় ৩৫ মিনিট ব্যাঙ্কে থাকে সিবিআইয়ের দুর্নীতি দমন শাখার দলটি৷ হাই কোর্টের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে নারদ স্টিং অপারেশনের ফুটেজ, ল্যাপটপ, পেন ড্রাইভ নিজেদের হেফাজতে নেয় তারা৷ দুপুর দু’টোয় বিশেষ বৈঠক করে সিবিআই৷ এদিনই দিল্লি থেকে রাজ্যে আসে তিন সদস্যের একটি বিশেষ দল৷ অন্যদিকে, নারদ উত্তাপ অব্যাহত মহানগর-সহ গোটা রাজ্যে। শনিবার কলকাতা পুরসভায় ২০১৭-১৮ আর্থিক বর্ষের বাজেট অধিবেশন ছিল। কিন্তু নারদ ইস্যুতে এদিন তুলকালাম হয় পুরসভার বাজেট অধিবেশনে। মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বাজেট পেশ করার সময় তুমুল বিক্ষোভ দেখান কংগ্রেস, সিপিএম, বিজেপি-সহ বিরোধী কাউন্সিলররা। ওয়েলে নেমে এসে শাসক-বিরোধী শিবিরের কাউন্সিলররা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। ব্যাপক ধস্তাধস্তিতে বেনজির বিক্ষোভের সাক্ষী থাকে কলকাতা পুরসভা। বিরোধী কাউন্সিলরদের অভিযোগ, নারদ কাণ্ডে জড়িয়ে মেয়রের পদ কলঙ্কিত করেছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। এই পদে থাকার আর অধিকার হারিয়েছেন তিনি। এরপর বিরোধীরা ওয়াকআউট করে পুরসভার বাইরে এসে প্ল্যাকার্ড-ফেস্টুন নিয়ে মেয়রের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখান। শেষে ট্রেজারি বেঞ্চের সমর্থনে বাজেট প্রস্তাব পাশ হয়। একইসঙ্গে, এদিন রাজভবনের সামনে নারদ ইস্যুতে বিক্ষোভ দেখায় যুব কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকরা।
[অনুমতি না নিয়ে ট্রেনে মহিলার ছবি তুলল যুবক, তারপর…]
শুক্রবার হাই কোর্টের নির্দেশ পাওয়া মাত্রই তদন্ত প্রক্রিয়া কীভাবে চালানো হবে তা স্থির করতে দিল্লিতে বৈঠকে বসেন সিবিআই কর্তারা৷ সূত্রের খবর, ঠিক হয়েছে ফুটেজ সংগ্রহ থেকে তা খতিয়ে দেখার কাজ শুরু করে দেবেন রাজ্যে থাকা সিবিআই আধিকারিকরা৷ স্টিং অপারেশনে মোট ৪২৮ মিনিটের ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখবেন তাঁরা৷ ফুটেজের কথোপকথন অনুবাদ করা হবে৷ ফুটেজ সংক্রান্ত ফরেনসিক রিপোর্টও পরীক্ষা করে দেখবে সিবিআই৷ তদন্তকারী আধিকারিকদের একটি বিশেষ দল গড়ে ফুটেজ খতিয়ে দেখার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা গিয়েছে৷
স্ট্র্যান্ড রোডের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে নারদ কাণ্ডে ব্যবহৃত পেন ড্রাইভ, ল্যাপটপ, আইফোন ও ফুটেজ সংগ্রহ করার পরই সিবিআইয়ের এই বিশেষ দলটি পৌঁছে যায় হাই কোর্টে৷ কারণ এর আগে প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুরের ডিভিশন বেঞ্চ নারদ স্টিং ফুটেজ সংগ্রহ ও তা পরীক্ষার জন্য হাই কোর্টের তত্ত্বাবধানে তিন সদস্যদের একটি কমিটি গড়েন৷ রাজ্য পুলিশ রিক্রুটমেণ্ট সেলের আইজি অনিল কুমার, সিবিআইয়ের এসপি পদমর্যাদার আধিকারিক নগেন্দ্র প্রসাদ ও হাই কোর্টের রেজিস্ট্রার জয়ন্তকুমার কোলে রয়েছেন এই কমিটিতে৷ স্টিং অপারেশনে ব্যবহৃত পেন ড্রাইভ, ল্যাপটপ ও ম্যাথুর আই ফোন চণ্ডীগড়ের কেন্দ্রীয় পরীক্ষাগার থেকে পরীক্ষা হয়ে আসার পর এই তিন কমিটির তত্ত্বাবধানেই ছিল যাবতীয় সামগ্রী৷ সমস্ত তথ্য হাতে পাওয়ার পরই সিবিআই তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু করতে চায় বলে সূত্রের খবর৷
[কাশ্মীরে পর্যটক টানতে আসরে এবার সলমন খান!]
যদিও প্রাথমিক তদন্তের অনেকটাই সেরে রেখেছে হাই কোর্ট৷ কোর্ট ইতিমধ্যেই চন্ডীগড় সেণ্ট্রাল ল্যবরেটরি থেকে ফুটেজগুলি পরীক্ষা করিয়ে এনে জানিয়ে দিয়েছে, ফুটেজগুলি কোনওভাবে বিকৃত করা হয়নি৷ আপাতত ফুটেজগুলি খতিয়ে দেখে সন্দেহজনক কিছু পেলে এফআইআর করার স্বাধীনতা রয়েছে সিবিআইয়ের৷ এমনকী ফুটজের ভিত্তিতে মনে করলে অভিযুক্তদের হেফাজতে নিয়েও তদন্ত করতে পারে তারা৷ তবে সবটাই করতে হবে দ্রুত৷ ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রাথমিক তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ করে রিপোর্ট জমা দিতে হবে হাই কোর্টে৷
[বাংলাদেশের র্যাব চেকপোস্টে জঙ্গি হানা, নিহত ১]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.