অর্ণব আইচ: জাল পাসপোর্ট কাণ্ডের পর ভুয়ো নথিতে আধাসেনায় চাকরি কাণ্ডেও ডাকবিভাগের ওতপ্রোত যোগ! ডাকবিভাগের কর্মীদের মাধ্যমেই ভুয়ো ঠিকানায় পৌঁছে যেত নথি। আর পুরোটায় হত মোটা টাকার বিনিময়ে। এই প্রক্রিয়ায় অন্তত দেড়শো জন চাকরি পেয়েছে আধাসেনায়। সিএপিএফের ইঞ্জিনিয়ারিং স্টোরে নিযুক্ত ধৃত মহেশ চৌধুরীকে জেরা করে বিস্ফোরক তথ্য পেল সিবিআই।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, ভুয়ো নথি দেখিয়ে আধাসেনায় পাক-বাংলাদেশি নাগরিকদের চাকরির অভিযোগে তদন্ত নেমে বিস্ফোরক তথ্য মিলেছে। অন্তত ১০০-১৫০ জন জাল সার্টিফিকেটের মাধ্যমে চাকরি পেয়েছে। মূলত সশস্ত্র সীমা বল (SSB), বর্ডার সিকিওরিটি ফোর্স (BSF) এবং ইন্দো টিবেটিয়ান বর্ডার পুলিশে (ITBP) নিয়োগ হয়েছে। ঘুরপথে নিয়োগ পাওয়া অনেককে ইতিমধ্যে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে তাদের মধ্যে ৭-৮ জনের চাকরি ইতিমধ্যে চলে গিয়েছে। চক্রের নেপথ্যে আরও বড়-বড় মাথা রয়েছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। তাদের খোঁজেই ধৃত মহেশ চৌধুরীকে জেরা চলছে। তবে বাহিনীতে এখনও কোনও পাক-বাংলাদেশি নাগরিকের হদিশ মেলেনি।
জানা গিয়েছে, এ রাজ্যের একই ঠিকানায় উত্তরপ্রদেশ, বিহারের একাধিক চাকরিপ্রার্থীর নথি তৈরি হত। এর মধ্যে বেশ কিছু ভুয়ো ঠিকানাও থাকত। যারা চূড়ান্ত পর্যায়ে পাশ করে চাকরি পেয়ে যেত, তাদের ওই ভুয়ো ঠিকানায় নিয়োগপত্র আসত। আর ঠিক এই জায়গায় ছিল ধৃত মহেশের হাতের কারসাজি! টাকার বিনিময়ে ডাকঘরের আধিকারিক, কর্মীদের ‘কিনে নিত’ সে। যাকে ওই নিয়োগের নথি বা পরীক্ষার অ্যাডমিট তাঁর হাতেই আসে। নিজে সেই নথি চাকরিপ্রার্থীর হাতে পৌঁছে দিত। ঠিক যেভাবে জাল পাসপোর্ট ‘সঠিক লোকে’র হাতে পৌঁছে দিত ডাককর্মীরা। এখানেও ভুয়ো নথি চক্রও একইভাবে পরিচালনা হত।
আর এক পুরো কাজটা সম্পন্ন হলে ৬ লক্ষ টাকা নিতেন মহেশ। আর ভুয়ো নথি বানিয়ে দেওয়ার পরও চাকরি না হলেও জাল সার্টিফিকেট বানিয়ে দেওয়ার জন্য মোটা টাকা তুলত মহেশ। সিবিআই ডাক বিভাগের সেই কর্মীদের খুঁজছেন, যারা এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত ছিল। পাশাপাশি কারা-কারা এভাবে চাকরি পেয়েছিল, তাও জানার চেষ্টা চালাচ্ছে তদন্তকারীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.