সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীর যৌন নিগ্রহের অভিযোগে সকাল থেকেই উত্তপ্ত কারমেল প্রাইমারি স্কুল চত্বর৷ সময় গড়াতে তা রীতিমতো রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়৷ অভিভাবকদের সঙ্গে পুলিশদের খণ্ডযুদ্ধ বেধে দেয়৷ পুলিশকর্মীকে মারধরের অভিযোগে আটক করা হয় এক অভিভাবককে৷
[ জি ডি বিড়লার পর এবার কারমেল স্কুল, ‘যৌন নিগ্রহ’ দুধের শিশুর ]
স্কুলগেটের সামনে দাঁড়িয়ে সকাল থেকেই বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন অভিভাবকরা৷ দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীর উপর দীর্ঘদিন ধরে যৌন নিগ্রহ চালিয়েছে এক শিক্ষক৷ অভিভাবকদের দাবি এমনটাই৷ শিক্ষকের ভয়ে কাঁটা হয়েছিল বাচ্চাটি৷ স্কুলেও আসতে চাইছিল না৷ অনেক জিজ্ঞাসাবাদের পরই অভিভাবকরা এ ব্যাপারে জানতে পারেন৷ তাঁদের থেকে শোনেন অন্যান্য অভিভাবকরাও৷ আজ সকাল থেকেই অভিযুক্ত শিক্ষককে বরখাস্তের দাবিতে স্কুলের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন অভিভাবকরা৷ তাঁদের অভিযোগ, প্রিন্সিপাল অভিভাবকদের সঙ্গে সহযোগিতা করছেন না৷ বরং অভিযুক্তকেই আড়াল করতে চাইছেন৷ কেন নাচের শিক্ষক হিসেবে একজন পুরুষকে নিয়োগ করা হয়েছে তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি? এই পরিস্থিতিতে সকাল থেকেই স্কুলে অচলাবস্থা৷ ছুটি হলেও বেশ কয়েকজন পডুয়া স্কুলেই থেকে যায়৷ স্কুলের সামনে থেকে ভিড় হটাতে বারবার অনুরোধ করতে থাকে পুলিশ৷ কিন্তু অবস্থানে অনড় থাকেন অভিভাকরা৷
[ পথ নিরাপত্তায় নয়া উদ্যোগ পুলিশের, শহরের রাস্তায় বসছে বুম গেট ]
পরিস্থিতি প্রায় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় যখন অভিযুক্ত শিক্ষককে স্কুল থেকে বের করে আনে পুলিশ৷ অভিযোগ, ওই শিক্ষককে দেখেই তার উপর চড়াও হন অভিভাবকরা৷ রীতিমতো গণধোলাই দেওয়ার চেষ্টা করা হয়৷ সেই সময়ই অভিভাবকরা পুলিশকর্মীদের মারধর করে বলেও অভিযোগ৷ এরপরই এক অভিভাবককে চিহ্নিত করে পুলিশ৷ অভিভাবকদের সঙ্গে পুলিশের রীতিমতো খণ্ডযুদ্ধ বেধে যায়৷ রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ের দিকে পুলিশ এগোলে অভিভাবকরাও তাদের পিছু নেয়৷ শেষমেশ একটি চলন্ত ট্যাক্সিকে থামিয়ে ওই অভিভাবককে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ৷ এরপর বিক্ষোভ আরও দানা বাঁধে৷ অভিভাবকদের পালটা অভিযোগ, তাঁরা সন্তানের স্বার্থে একটা দাবি জানাচ্ছেন৷ উলটে পুলিশ তাদের উপর লাঠিচার্জ করেছে৷
[ ভিনরাজ্যের তরুণীর শ্লীলতাহানি কেষ্টপুরে, গ্রেপ্তার ৫ অভিযুক্ত ]
অভিভাবকদের দাবি, পুলিশ সহায়তা করার বদলে উলটে তাঁদের সঙ্গেই খারাপ ব্যবহার করেছে৷ এদিকে স্কুল কর্তৃপক্ষও কোনও সহযোগিতা করছে না৷ এক অভিভাবক নিজের মোবাইল খুলে দেখান, স্কুলের তরফে অনুরোধ করা হয়েছে, এ ব্যাপারে সোশ্যাল মিডিয়ায় যেন কিছু লেখালিখি না করা হয়৷ করা হলেও যেন তা ডিলিট করা হয়৷ দাবি-পালটা দাবিতেই আপাতত সরগরম স্কুল চত্বর৷ এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষককে থানায় নিয়ে গিয়েছে পুলিশ৷ তাঁর বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা রুজু হতে পারে৷ স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ইতিমধ্যেই যোগাযোগ করেছেন শিশু সুরক্ষা কমিশনের সদস্যরা৷ নিরাপত্তা নিয়ে সরকারের গাইডলাইন রয়েছে৷ সেখানে গাফিলতি হলে সরকার দেখবে বলেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত শিক্ষককে সাসপেন্ড করেছে স্কুল৷
ছবি- আশুতোষ পাত্র
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.