কলহার মুখোপাধ্যায়, বিধাননগর: আবারও কলকাতার রাস্তায় গতির দাপট। দুর্ঘটনা, মৃত্যু। আবারও সেই একই জায়গায় লোহার রেলিং ভেঙে গাড়ি খালে পড়ে মৃত্যু হল যাত্রীর। পলাতক চালক। রবিবার গভীর রাতে কেষ্টপুর (Kestopur) খালে এই দুর্ঘটনা ফিরিয়ে আনল কয়েক বছর আগের সেই স্মৃতি। যেখানে যাত্রীবোঝাই বাস রেষারেষি করতে গিয়ে খালে পড়ে প্রাণহানি হয়েছিল ২০জনেরও বেশি মানুষের।
রবিবার রাত প্রায় দেড়টা। প্রবল গতিতে বাঁক নিতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ধারের লোহার রেলিং ও সিমেন্টের গার্ড রেল ভেঙে সটান খালে গিয়ে পড়ল একটি চারচাকা গাড়ি। জলে ডুবে মৃত্যু হল যাত্রীর। উল্টোডাঙা থেকে এয়ারপোর্টের দিকে গাড়িটি যাওয়ার পথে কেষ্টপুরে ভিআইপি রোডে (VIP Road) দুর্ঘটনাটি ঘটে। সঙ্গে সঙ্গে পালিয়ে যান চালক। এরপরই ব্রেকডাউন ভ্যানের সাহায্যে গাড়িটিকে উদ্ধার করে বাগুইআটি ট্রাফিক পুলিশ। জলে নেমে ওই যাত্রীকে উদ্ধারের চেষ্টাও চালানো হয়। কিন্তু দুর্ঘটনাজনিত ধাক্কার তীব্রতায় দরজা আটকে গিয়েছিল। তা খোলা সম্ভব হয়নি। যার জেরে মাটির ওপরে গাড়িটিকে তুলে দরজা ভেঙে যাত্রীকে উদ্ধার করার আগেই দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত বছর বত্রিশের রতন দাস।
জানা গিয়েছে, এদিন রাত দেড়টা নাগাদ গাড়িতে এক যাত্রীকে বসিয়ে উল্টোডাঙার থেকে এয়ারপোর্টের দিকে যাচ্ছিলে রতনবাবু। পেশায় তিনি একটি বেসরকারি হাসপাতালের অ্যাম্বুল্যান্স চালক। রবিবার ছুটির দিনে অতিরিক্ত আয়ের জন্য বেসরকারি গাড়িতে চালক হিসাবে কাজ করেন। এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, কেষ্টপুরে রোড ডাইভারসনের কাছে এসে হঠাৎই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে গাড়িটি। তারপর খালের ধারের লোহার রেলিং ভেঙে কিছুটা এগিয়ে ফের দুটি সিমেন্টের গার্ডরেল ভেঙে ফেলে একপ্রকার উড়ে গিয়ে খালের ধারে গিয়ে পড়ে। তারপর আস্তে আস্তে গড়িয়ে খালের জলে ঢুকে যায় গাড়িটি। তা বুঝতে পেরে ছুটে যান এক রিকশাচালক ও স্থানীয় দু’জন নির্মাণকর্মী। তাঁরাই বাগুইআটি থানা এবং ট্রাফিকের পুলিশকে খবর দেন। দ্রুত ব্রেকডাউন ক্রেন নিয়ে হাজির হয় ট্রাফিক পুলিশ। চলে উদ্ধারকাজ।
বছর কয়ে আগেও এভাবেই গতি বাড়িতে অন্য বাসকে ওভারটেক করার সময়ে যাত্রীবোঝাই বাস রেলিং ভেঙে গিয়ে পড়েছিল খালে। মৃত্যু হয়েছিল ২০ জনেরও বেশি বাসযাত্রীর। এরপর সেখানে সুরক্ষার স্বার্থে নতুন করে শক্তপোক্ত রেলিং তৈরি করা হয়। তা সত্ত্বেও দুর্ঘটনা আটকানো গেল না। এবারও দায়ী সেই অতিরিক্ত গতিই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.