Advertisement
Advertisement

Breaking News

কলকাতা মেডিক্যালে কলেজ হাসপাতালে মাথা তুলছে ক্যানসার সেন্টার

বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা দিতে বড় উদ্যোগ রাজ্যের৷

Cancer centre in Calcutta Medical
Published by: Tanujit Das
  • Posted:January 29, 2019 12:30 pm
  • Updated:January 29, 2019 12:30 pm  

গৌতম ব্রহ্ম: সরকারি স্তরে ক্যানসার চিকিৎসার পরিধি আরও বিস্তৃত হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে। চারশো শয্যার ‘স্টেট ক্যানসার সেন্টার’ মাথা তুলছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। কেমোথেরাপি থেকে অঙ্কো-সার্জারি, সব ব্যবস্থা থাকছে এক ছাদের তলায়। স্বাস্থ্যমহলের আশা, কেন্দ্রটি পুরোপুরি চালু হলে গরিবগুর্বো ক্যানসার রোগীদের বড় অংশকে বেসরকারি হাসপাতালের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হবে না। কার্যত বিনামূল্যে এখানে তাঁরা পাবেন অত্যাধুনিক চিকিৎসা পরিষেবা।

[লোকসভার আগে চমক, তৃণমূলে যোগ দিলেন কংগ্রেস সাংসদ মৌসম নূর ]

Advertisement

পরিকল্পনাতেই আটকে নেই এই উদ্যোগ। ছ’মাস হল, কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। মেডিক্যালের প্রিন্সিপাল অফিসের সামনে দশতলার নতুন ভবন মাথা তুলছে। ইতিমধ্যেই ক্যান্টিন ও ডাক্তারদের আবাসন ভেঙে ফেলা হয়েছে। সেখানেই তৈরি হচ্ছে হাসপাতালের ভিত। বছর দু’য়েকের মধ্যেই রাজ্য সরকার নিয়ন্ত্রিত এই ক্যানসার সেন্টারটি চালু হয়ে যাবে বলে সোমবার জানালেন মেডিক্যালের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের শ্রম দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. নির্মল মাজি। এদিন মেডিক্যালের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে সমাবর্তন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে নির্মলবাবুর এই ঘোষণা স্বাভাবিকভাবেই সাড়া ফেলেছে। মন্ত্রী এ-ও জানান, রাজ্য সরকার ইতিমধ্যে প্রকল্পে ৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। প্রয়োজনে আরও টাকা দেবে। বেসরকারি ক্যানসার হাসপাতাল কয়েকটি থাকলেও এ রাজ্যে সরকারি ক্যানসার হাসপাতাল বলতে সেই হাজরার চিত্তরঞ্জন। যদিও কেন্দ্র নিয়ন্ত্রিত ওই হাসপাতালে শয্যা সাকুল্যে ২০০। প্রয়োজনের তুলনায় অতি নগণ্য। রাজারহাটে চিত্তরঞ্জনের ৫৫০ শয্যার দ্বিতীয় ক্যাম্পাস তৈরি হচ্ছে। এমতাবস্থায় মেডিক্যালে আরও ৫০০ বেডের ‘ডেডিকেটেড’ ক্যানসার সেন্টার গড়া গেলে পরিস্থিতির অনেকটাই সুরাহা হবে বলে চিকিৎসকরা আশাবাদী। রাজ্যের অঙ্কোলজিস্টরা এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁদের পর্যবেক্ষণ, পশ্চিমবঙ্গ তথা সারা দেশে ক্যানসার কার্যত মহামারীর চেহারা ধরেছে। ফি বছর ৮০ থেকে ৮৫ হাজার জনের শরীরে ক্যানসার ধরা পড়ছে। এবং চিকিৎসা করাতে গিয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে যাচ্ছে বহু পরিবার।

[পড়ে গিয়ে জখম প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম দেব, ভরতি হাসপাতালে]

অঙ্কোসার্জন ডা. গৌতম মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, কর্পোরেট হাসপাতালে চিকিৎসা করালে ক্যানসার রোগী পিছু গড় খরচ পড়ে ৩—৪ লক্ষ টাকা। অনেকেরই এই টাকা খরচের সামর্থ্য নেই। সরকারি ক্ষেত্রে ৫০০ শয্যা বাড়লে বহু মানুষ উপকৃত হবে। ক্যানসারের আতঙ্ক অনেকটাই কাটবে। একই মত এনআরএস হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগের প্রধান ডা. প্রান্তর চক্রবর্তীর। তাঁর মত, কেমোথেরাপি দেওয়ার জন্য এখন জেলা হাসপাতালগুলিতে ‘ডিস্ট্রিক্ট ক্যানসার সেন্টার’ তৈরি করা হয়েছে। সেখানে ‘ডে কেয়ার’ দেওয়া হচ্ছে। মেডিক্যাল কলেজে ‘স্টেট ক্যানসার সেন্টার’ হলে এক ছাদের তলায় ক্যানসারের সব ধরনের চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হবে। আরজিকরের রেডিওথেরাপি বিভাগের প্রাক্তন প্রধান ডা. সুবীর গঙ্গোপাধ্যায়ের অবশ্য ভিন্ন মত। তিনি জানালেন, ক্যানসার সেন্টারটি মেডিক্যাল কলেজের বাইরে হলেই ভাল হত। ফোকাসটা ঠিক থাকত। ছাত্ররাও বেশি করে উপকৃত হত। যদিও সুবীরবাবু জানিয়েছেন, ৫০ শতাংশ ক্যানসার রোগী সরকারি হাসপাতাল পর্যন্ত পৌঁছতে পারেন না। ‘স্টেট ক্যানসার সেন্টার’ হলে নিখরচায় বহু মানুষ পরিষেবা পাবেন। তবে গৌতমবাবুরা একবাক্যে মেনে নিয়েছেন, প্রথম থেকে চারশো বেড চালু করা অসম্ভব। প্রথমে ১০০ বা ২০০ বেড দিয়ে শুরু করে ধীরে ধীরে শয্যা বাড়ানো উচিত। জানা গিয়েছে, দশ তলা ভবন তৈরির জন্য ইতিমধ্যেই রাজ্য ৪৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। ১৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে ক্যানসার চিকিৎসার সরঞ্জাম কেনার জন্য। দুটো ‘লিনিয়র অ্যাকসিলারেটর’ যন্ত্রও বসানো হবে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement