Advertisement
Advertisement
calcutta university

ঘরবন্দি পড়ুয়াদের চাঙ্গা করতে বিনামূল্যে পরামর্শের ব্যবস্থা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের

মনের চিকিৎসা শুরু করেছে মনোবিজ্ঞান ও ফলিত মনোবিজ্ঞান বিভাগ।

calcutta university organize free mental help class through online
Published by: Soumya Mukherjee
  • Posted:April 9, 2020 11:19 am
  • Updated:April 9, 2020 3:01 pm  

দীপঙ্কর মণ্ডল: মামুলি গেরস্তবাড়ির একচিলতে ঘর। চব্বিশ ঘণ্টা বাবা, মা ও ভাইবোনের সঙ্গে গা ঘেঁষাঘেঁষি। ঘুম ভাঙা থেকে ঘুমাতে যাওয়া ইস্তক নানা ব্যাপারে খিটমিট। বেড়াতে যাওয়া, খেলাধুলো আর বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে চুটিয়ে আড্ডা মারার পাট তো শিকেয় উঠেছে।

করোনা ভাইরাস (CoronaVirus) ও লকডাউনের কারণে আচমকা এই ঘরবন্দি দশায় ছাত্রছাত্রীদের অনেকেরই মানসিক স্থিতি নড়বড়ে হয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ অবসাদের শিকারও হয়ে পড়ছে। যার সুরাহায় এবার এগিয়ে এল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠানের মনোবিজ্ঞান এবং ফলিত মনোবিজ্ঞান বিভাগ ছাত্রছাত্রীদের মনের পরিচর্যা ও কিছু ক্ষেত্রে চিকিৎসার ব্যবস্থা করল। বুধবার বিনামূল্যে তা শুরু হয়েছে। উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমাদের যে কোনও ছাত্রছাত্রী ফোন করে মনোবিদদের পরামর্শ পাবেন। নিখরচায় তাঁদের কাউন্সেলিং করা হবে।’

Advertisement

[আরও পড়ুন: হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন তৈরি করে না বেঙ্গল কেমিক্যালস, তা সত্ত্বেও আশা থাকছেই ]

 

‘তালাবন্ধ’ দেশে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় ঝাঁপ ফেলেছে। শুধু ক্লাস নয়, স্থগিত হয়ে গিয়েছে বিভিন্ন পরীক্ষাও। এদিকে অনেকেরই বিভিন্ন সংস্থায় যোগ দেওয়ার কথা ছিল। কেউ বা বিদেশে যাবেন বলে ঋণ নিয়েছেন। সব এখন বিশবাঁও জলে। বরং লম্বা লকডাউনের মেয়াদ আরও বাড়তে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। এমতাবস্থায় বহু ছাত্রছাত্রী মানসিক উদ্বেগ ও অশান্তিতে ভুগছেন। কারও কারও উপর ভর করছে গভীর অবসাদ। বিষয়টি আঁচ করে উপাচার্যর নির্দেশে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইকোলজি ও অ্যাপ্লায়েড সাইকোলজির অধ্যাপকরা মঙ্গলবার ভিডিও কনফারেন্সে বসেছিলেন। সেখানে ঠিক হয়, সকাল ন’টা থেকে রাত ন’টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের জন্য বিনামূল্যে অনলাইন কাউন্সেলিংয়ের দরজা খোলা থাকবে।

বুধবার থেকে ১৩ জন অধ্যাপক প্রক্রিয়াটিতে নেমে পড়েছেন। আশাব্যঞ্জক সাড়াও পেয়েছেন। মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক তিলোত্তমা মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘দীর্ঘ লকডাউনে ছাত্রছাত্রীরা নানা রকম সমস্যা। কেউ কেউ ডিপ্রেশনে চলে যাচ্ছে। কেরিয়ার নিয়ে সবাই দুশ্চিন্তা করছে। কেউ যাতে মানসিকভাবে ভেঙে না পড়ে আমরা সেই চেষ্টা করছি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের অনেকেরই প্রেমিক বা প্রেমিকা আছেন। দীর্ঘদিন পরস্পরের সঙ্গে দেখা হচ্ছে না। এমন সমস্যার উল্লেখ কি থাকছে? অধ্যাপকরা জানিয়েছেন, দেখা না হওয়ায় মন খারাপ হতেই পারে। তবে প্রথম দিন এই ধরনের মনোকষ্টের কথা কেউ উল্লেখ করেনি। অধ্যাপক তিলোত্তমা মনে করেন, ‘উন্নত প্রযুক্তির এই যুগে দেখা না হওয়া খুব বড় সমস্যা নয়। ভিডিও কলে অনেকেই কথা বলেন। লকডাউনে ছাত্রছাত্রীদের কাছে বড় সমস্যা তাদের উচ্চশিক্ষা, চাকরি, এডুকেশন লোন, পরীক্ষা স্থগিত হয়ে যাওয়া প্রভৃতি।’

[আরও পড়ুন: ‘হনুমানজিকে স্মরণেই দূর হবে করোনা ভাইরাস’, রাহুল সিনহার মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক]

 

দিশাহারা পড়ুয়াদের কীভাবে আশ্বস্ত করা হচ্ছে? কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরা জানিয়েছেন, ফোনে অনেকটা সময় নিয়ে কথা শোনা হচ্ছে। প্রথম যৌবনে পা দেওয়ার পর অনেকের কথা বলার লোক থাকে না। তারা বুঝতে পারে না নিজেদের সমস্যার কথা কাকে বলবে। রাজাবাজার সায়েন্স কলেজে বিভিন্ন থেরাপির ব্যবস্থা আছে। কিন্তু, এখন লকডাউন চলায় তা সম্ভব নয়। আপাতত তাই শুধু ফোনে ধৈর্য ধরে সমস্যার কথা শুনে তার সমাধান বাতলে দিচ্ছেন অধ্যাপকরা। উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘লকডাউনে ছাত্রছাত্রীদের সমস্যা মেটাতে ফ্রি কাউন্সেলিং শুধু নয়, আমাদের ফাইবার টেকনোলজি বিভাগ করোনা ঠেকাতে মাস্ক তৈরি করছে। রসায়ন বিভাগ তৈরি করছে স্যানিটাইজার। এসব আমরা রাজ্য সরকারের হাতে তুলে দেব।’ নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন যাদবপুর ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ধরনের কাজে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement