Advertisement
Advertisement

Breaking News

Calcutta National Medical College and Hospital

হার্ট ব্লকেজ নিয়ে ৬০ কিমি পাড়ি প্রসূতির, বিরল অস্ত্রোপচারে ন্যাশনাল মেডিক্যালে পৃথিবীর আলো দেখল খুদে

প্রসূতির পালস রেট যে চল্লিশেরও কম!

Calcutta National Medical College and Hospital successfully performs a rare surgery
Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:March 27, 2025 1:06 pm
  • Updated:March 27, 2025 1:06 pm  

অভিরূপ দাস: সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার সময় চলে এসেছিল। ঢুকেও গিয়েছিলেন ওটিতে। বেরিয়ে যখন এলেন, তখনও জঠরে হাত পা ছুড়ছে একরত্তি। প্রসূতির পালস রেট যে চল্লিশেরও কম! হৃদয়ের অলিন্দ থেকে নিলয়ে সিগন্যাল পৌঁছচ্ছিল না বছর আঠারোর মহব্বতুন্নেছা সর্দারের। শরীরের বিভিন্ন অংশ থেকে রক্ত গ্রহণ করে অলিন্দ তা পৌঁছে দেয় নিলয়ে। নিলয় থেকে তা সারা শরীরে সঞ্চালিত হয়। এই কাজই ব্যাহত হচ্ছিল হবু মায়ের শরীরে। ঝুঁকি নেননি ক্যানিং হাসপাতালের চিকিৎসকরা। ষাট কিলোমিটার উজিয়ে মহব্বতুন্নেছা সর্দার মা হলেন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে। একরত্তিকে পৃথিবীর আলো দেখাতে জোট বাঁধেন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকরা। স্ত্রীরোগ বিভাগে অধ্যাপক ডা. সোমজিতা চক্রবর্তীর সঙ্গে এক ঝাঁক চিকিৎসকের টিমে ছিলেন ডা. মল্লিকা দত্ত, ডা. দেবস্মিতা ভদ্র, ডা. রাগিণী কুমারী, ডা. অনীতা কুমারী, ডা. পল্লবী চৌধুরী, ডা. শেরিল মানকর, ডা. বাবিয়া সান্যাল, ডা. অদ্রিজা ঘোষ।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীর বাসিন্দা সন্তানসম্ভবা মহব্বতুন্নেছা গত সপ্তাহে ভর্তি হয়েছিলেন ক্যানিং স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, চিকিৎসকরা ‘পালস রেট’ দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। ‘হার্ট রেট’ চল্লিশের কম। ষাটের নিচে হার্ট রেটকে চিকিৎসা পরিভাষায় বলা হয় ব্র্যাডিকার্ডিয়া। সাধারণত হৃদস্পন্দনের হার প্রতি মিনিটে ন্যূনতম ৬০ থেকে সর্বোচ্চ ১০০। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের স্ত্রীরোগ বিভাগের অধ্যাপক ডা. সোমজিতা চক্রবর্তীর কথায়, “হৃদস্পন্দনের হার কমে যাওয়া হৃদরোগের অন্যতম লক্ষণ।” দ্রুত খবর দেওয়া হয় ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের কার্ডিওলজি বিভাগে। ইসিজি করেন চিকিৎসকরা। দেখা যায়, সেকেন্ড ডিগ্রি হার্ট ব্লক রয়েছে মহব্বতুন্নেছা সর্দারের।

Advertisement

হৃদযন্ত্রের যে অংশটি হৃদস্পন্দনের উৎস, তার নাম সাইনো অ্যাট্রিয়াল নোড। এই সাইনো অ্যাট্রিয়াল নোড সঠিকভাবে কাজ না করলে হৃদস্পন্দনের হার কমে যায়। ডা. সোমজিতা চক্রবর্তী জানিয়েছেন, “হার্টের যা অবস্থা ছিল ‘প্রসব যন্ত্রণা’ নিতে পারত না সন্তানসম্ভবা। হার্ট অ্যাটাক হয়ে যেত যে কোনও মুহূর্তে।” কার্ডিওলজি বিভাগ অস্থায়ী পেসমেকার বসানো হয় মহব্বতুন্নেছার। শুক্রবার ২১ মার্চ আপাতত বিপন্মুক্ত দেখে নিয়ে যাওয়া হয় ওটিতে। বিভাগীয় প্রধান ডা. মৌসুমী নিয়োগী, ডা. প্রিয়াঙ্কা মণ্ডল, ডা. পুলকেন্দু ঘোষের তত্ত্বাবধানে ‘স্পাইনাল এপিডুরাল’ অ্যানাস্থেশিয়া করা হয় সন্তানসম্ভবার। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছে মহব্বতুন্নেছা। সদ্যোজাত এবং মা দু’জনেই আপাতত ভালো আছে। কার্ডিওলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. আজিজুল হক, ডা. যশবন্ত কুমার চাঁদ সদ্য মা হওয়া মহব্বতুন্নেছার হৃদয়ে শীঘ্রই স্থায়ী পেসমেকার বসাবেন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement