অভিরূপ দাস: একবার নয়, পরপর দু’বার। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের (Calcutta Medical College Hospital) কোভিড ওয়ার্ড থেকে উধাও হয়ে গেলেন রোগী। কখনও হাসপাতালের বাইরে পায়চারি করলেন। কখনও অন্য রোগীর পরিবারের লোকেদের কাছে নির্দিধায় জল খেতে চাইলেন। “আপনি কাকে বলে বাইরে এসেছেন?” নার্সের রক্তচক্ষুতে নির্বিকার ওই রোগী। দুই নিরাপত্তারক্ষী মিলে টেনে হিঁচড়ে তাঁকে কোভিড ওয়ার্ডে ঢোকাতে পারছিলেন না। হাত ছাড়িয়ে ছুটছিলেন বছর চল্লিশের লক্ষ্মী চন্দ্র। সোমবার দিনভর হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মীদের সঙ্গে কোভিড রোগীর লুকোচুরি দেখে হতভম্ব অন্যান্য রোগীর পরিবারের লোকেরা।
গত ২০ আগস্ট থেকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে কোভিড (COVID-19) ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ওই মহিলা। তাঁর বাড়ি দমদমে। এদিন সকাল ১২টা নাগাদ প্রথম কোভিড ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে যান লক্ষ্মী চন্দ্র। ওয়ার্ডে তাঁকে না দেখতে পেয়ে হকচকিয়ে যান স্বাস্থ্যকর্মীরা। নিচে নেমে দেখা যায় জরুরি বিভাগের কাছেই ঘুরে বেড়াচ্ছেন ওই মহিলা। “এ কী! আপনি ওয়ার্ডের বাইরে কেন?” নার্সের এমন প্রশ্নের উত্তরে লক্ষ্মীদেবী বলেন, “করোনা সেরে গিয়েছে। আমি বাড়ি যাব।” কোনওরকমে বুঝিয়ে সুঝিয়ে সে দফায় তাঁকে ওয়ার্ডে ঢোকানো হয়।
ফের দুপুর তিনটে নাগাদ আবার উধাও হয়ে যান তিনি। এবার তাঁকে কোভিড ওয়ার্ডের আশপাশে খুঁজে না পেয়ে খবর দেওয়া হয় পুলিশ ফাঁড়িতে। অনেক খোঁজাখুঁজির পর দেখা যায় হনহন করে হেঁটে হাসপাতালের বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করছেন রোগী। রীতিমতো দৌড়ে গিয়ে তাঁর হাত ধরে ফেলেন নার্সরা। কিন্তু কিছুতেই কোভিড ওয়ার্ডে ফিরতে নারাজ ওই রোগী। তাঁর কথায়, “আমার নার্ভের সমস্যা আছে। এখানে ঠিকমতো নার্ভের চিকিৎসা হচ্ছে না।”
একইদিনে পরপর দু’বার কোভিড ওয়ার্ড থেকে রোগী পালিয়ে যাওয়ায় প্রশ্নের মুখে হাসপাতালের নিরাপত্তা। হাসপাতালের সুপার ইন্দ্রনীল বিশ্বাস জানিয়েছেন, কীভাবে একইদিনে পরপর দু’বার রোগী ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে গেলেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এদিকে রোগী পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় আতঙ্কিত হাসপাতালের অন্যান্য রোগীর আত্মীয়রা। অনেকেই জানিয়েছেন, ওই মহিলা মুখের মাস্ক খুলে গোটা হাসপাতাল চত্বর ঘুরে বেড়িয়েছেন। এই জায়গাগুলো অবিলম্বে স্যানিটাইজ করা উচিত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.