ফাইল ছবি
অভিরূপ দাস: শ্বাসকষ্টে ছটফট করছেন অশীতিপর বৃদ্ধ। প্রস্রাব করে দিচ্ছেন নিজের কাপড়ে। তাঁকেই জামাকাপড় কাচতে বললেন চুক্তিভিত্তিক কর্মীরা! অমানবিক এই ঘটনা কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের (Calcutta Medical College)।
দক্ষিণ কলকাতার গড়িয়ার বাসিন্দা সুরথ নাথ মৈত্র (৮৬) দীর্ঘদিন ধরেই ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ বা সিওপিডির রোগী। গত কয়েকদিন ধরেই তাঁর জ্বর ছিল। শনিবার বাবাকে নিয়ে শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে যান তাঁর ছেলে সঞ্জয় মৈত্র। সেখানে বৃদ্ধের অক্সিজেন স্যাচুরেশন মেপে দেখা যায় ৫৭। অবস্থা গুরুতর দেখে দ্রুত ওই বৃদ্ধকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলা হয়। স্ট্রেচারে শুইয়ে যখন অশীতিপর বৃদ্ধকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল তখনই বাধে গন্ডগোল।
সঞ্জয়বাবুর কথায়, “আমার বাবা সম্পূর্ণ শয্যাশায়ী। বিছানা থেকে উঠে প্রস্রাবও করতে পারেন না। এই অবস্থায় ভিজে কাপড় দীর্ঘক্ষণ পরে থাকলে শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে পারে। মেডিক্যাল কলেজের যে কর্মীরা বাবাকে নিয়ে যাচ্ছিল তাদের প্রশ্ন করি, বাবার জামাকাপড় কেঁচে দেওয়া হবে তো? হাসপাতালের কর্মীরা বলেন, উনি নিজের জামা কাপড় নিজেই কাচবেন। না হলে এটাই পড়ে থাকবেন।” হতবাক হয়ে পরেন অসুস্থ ৮৬ বছরের প্রবীণের পরিবারের লোকেরা।
সঞ্জয়বাবু দুঃখ করে বলেন, বাবা সিওপিডি আক্রান্ত। বিছানাতেই শুয়ে থাকেন সারাদিন। কীভাবে তিনি নিজের জামাকাপড় কাচবেন? তাঁর কথায়, “বাবার শারীরিক অবস্থা ভাল নয়। কাশি আর জ্বর রয়েছে। এমতাবস্থায় কীভাবে নিজের জামাকাপড় কাচবেন।” করোনা টেস্ট না হলেও উপসর্গ থাকায় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের গ্রিন বিল্ডিংয়ে চিকিৎসা শুরু হয়েছে ওই বৃদ্ধের।
এদিকে এই ঘটনা রটে যেতেই শোরগোল পড়ে যায়। যে মানুষটা শ্বাসকষ্টে ভুগছেন, কথা বলার ক্ষমতাই নেই, তাঁকে কী করে কাপড় কাচতে বলা হল তা নিয়ে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে! বৃদ্ধের ছেলের কথায়, “আমরা গোটা বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।” বিষয়টি নিয়ে জানতে চাওয়া হলে হাসপাতালের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, কোনও রোগী নিজের জামাকাপড় কাচে না। যে কর্মী এই কথা বলেছে তাঁকে খুঁজে বের করা হবে। এই ধরনের অভিযোগ যাতে আর না ওঠে, সেই চেষ্টাই করা হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.