গোবিন্দ রায়: অপরাধী সংশোধনাগারে কেমন আচরণ করছে, তার উপরই নির্ভর করে তাঁর শাস্তি মকুব হবে, নাকি সাজা বহাল থাকবে। সেক্ষেত্রে সাজাপ্রাপ্ত বন্দির সাজা মকুবে তাঁর আগের অপরাধ বিচার্য হতে পারে না। এক ধর্ষণ মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দুই অপরাধীর শাস্তি মকুব নিয়ে এমনই পর্যবেক্ষণ কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta HC)।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি গণধর্ষণের (Gangrape) ঘটনায় তিনজনকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছিল আলিপুর আদালত। তাঁদের মধ্যে একজন ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) থেকে জামিন পেয়ে গিয়েছেন। বাকি দুজন বারুইপুর সংশোধনাগারে বন্দি। গত ২২ বছর ধরে তাঁরা ওই অপরাধের জন্য জেল খাটছেন। সম্প্রতি সাজা মকুব করে মুক্তির আবেদন জানিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় তারা। এর আগে কারা কর্তৃপক্ষের কাছে দুবার মুক্তির আবেদন জানিয়েছিল, কিন্তু আবেদন নাকচ হয়ে যাওয়ায় হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে।
বুধবার বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের এজলাসে এই সংক্রান্ত মামলার রায়ে আবেদনকারীদের তরফে আইনজীবী জানান, রাজ্যের সাজা পুনর্বিবেচনা পর্ষদ (স্টেট সেনটেন্স রিভিউ বোর্ড)-এর কাছে মুক্তির আবেদন জানায় দুই অপরাধী। প্রথমে গত বছর ২ সেপ্টেম্বর এবং পরে চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি। তাদের আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়। আদালতে পর্ষদের যুক্তি ছিল, ওই বন্দিদের অপরাধ অত্যন্ত ঘৃণ্য। তাছাড়া, তাঁরা দুজনেই এখনও যৌনভাবে সক্ষম। তাই তাদের মুক্তি দেওয়া সম্ভব নয়।
এ প্রসঙ্গে বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, যে জঘন্য অপরাধ তারা করেছে, তার ভিত্তিতেই সাজা দেওয়া হয়েছিল। সংশোধনাগারের উদ্দেশ্য আসলে অপরাধীদের মানসিকতার সংশোধন। তাই আগের অপরাধের ঘৃণ্যতা এই মুক্তির আবেদনের ক্ষেত্রে বিচার্য হতে পারে না। আদালত জানিয়েছে, এ ক্ষেত্রে ধর্ষকের যৌনক্ষমতা আছে কি না, তা-ও বিচার্য নয়। ওই ধর্ষক জেলে কেমন আচরণ করেছে, তার মধ্যে কোনও পরিবর্তন এসেছে কি না, তা বিচার করে দেখতে হবে। তার ভিত্তিতে মুক্তি দেওয়া হবে কি না, সিদ্ধান্ত নিতে পারবে কর্তৃপক্ষ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.