গোবিন্দ রায়: কাঁথির টেন্ডার দুর্নীতির (Tender Corruption) মামলায় শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikary) ঘনিষ্ট রামচন্দ্র পান্ডার গ্রেপ্তারির ঘটনায় সিবিআই (CBI) তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court)। এনিয়ে ৫ সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত করে সিবিআইকে রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। একই সঙ্গে এদিন মামলার মূল অভিযুক্ত রামচন্দ্র পান্ডার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া তৃতীয় এফআইআর-এর ওপরও অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়ে নিঃশর্তে তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন বিচারপতি। পাশাপাশি, এই মামলায় সিআরপিএফ-কে যুক্ত করে মামলার তৃতীয় অভিযোগকারী কাকলি পান্ডাকে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত যাতে তাঁকে নিরাপত্তা দেওয়া হয় এদিন তাও স্পষ্ট করেছেন বিচারপতি।
বুধবার এই সংক্রান্ত মামলায় অভিযুক্ত একই ব্যক্তির বিরুদ্ধে তিন-তিনটি এফআইআর দায়ের হয় কীভাবে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলে বিস্ময় প্রকাশ করেন বিচারপতি মান্থা। আদালতের আরও প্রশ্ন, “টেন্ডার দুর্নীতি নিয়ে পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারের স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার! এও কি সম্ভব?” পাশাপাশি, আদালতে পেশ করা কাকলি পান্ডার হলফনামা দেখেও পুলিশের ভূমিকায় বিস্ময় প্রকাশ করেন বিচারপতি।
কাঁথি পুরসভার শ্মশানের সংস্কারের টেন্ডার নিয়ে দেড় কোটির টাকার দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে কাঁথি পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ভাই সৌমেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে। সেসময় ২০১৯-২০২০ সালে কাঁথি পুরসভার ওই টেন্ডার পান রামচন্দ্র পান্ডা। রামচন্দ্র, শুভেন্দু এবং অধিকারী পরিবারের ঘনিষ্ঠ বলে জানা যায়। ভুয়ো শংসাপত্রের মালিক রামচন্দ্রকে বরাত দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এমনকী শ্মশানে স্টল তৈরিতেও ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ।
আরও অভিযোগ, টেন্ডার পেয়েও তিনি কাজ শেষ করেননি। তা নিয়ে রামচন্দ্রের বিরুদ্ধে আগেই দু’টি এফআইআর দায়ের হয়। এর পর, গত ২৮ ডিসেম্বর আরও একটি এফআইআর দায়ের হয়। তাতে দেখা যায়, কাঁথি পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার শান্তনু পান্ডার স্ত্রী কাকলি পান্ডা অভিযোগ করেছেন এবং তার ভিত্তিতেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে রামচন্দ্রকে। তৃতীয় এফআইআর-টি কাকলির অভিযোগের ভিত্তিতে দায়ের করা হয়েছে বলে আদালতে জানায় রাজ্য। তার ভিত্তিতে হলফনামা তলব করে আদালত। এদিন হলফনামায় কাকলি জানিয়েছেন, কিছু প্রভাবশালী তাঁকে তুলে নিয়ে গিয়ে, জোর করে অভিযোগপত্র লিখিয়েছেন এবং তাতে সই করিয়েছেন। ওই অভিযোগ পত্রে যা অভিযোগ রয়েছে, তাঁর অভিযোগ সেটি ছিল না। তার ভিত্তিতে গ্রেপ্তারও করা হয়নি রামচন্দ্রকে। এদিন তা নিয়েই প্রশ্ন তোলে আদালত। এর পর এনিয়ে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.