রাহুল রায়: বিতর্কের মূলে একটা শৌচাগার। গোদা বাংলায় যাকে বলে, পায়খানা। আর তা নিয়েই ঘুম ছুটেছে গ্রামের বেশ কয়েক ঘর বাসিন্দার। ওই জমি-বাড়ির স্বত্বাধিকার ঘিরে দুই ভাইয়ের টানাপোড়েনে শৌচাগার সাফ হয়নি বহুকাল। প্রায় এক বছর যাবৎ সেপটিক ট্যাঙ্কেরও ভগ্নদশা। তা থেকে উপচে পড়ছে ময়লা, যার গন্ধে অতিষ্ঠ গোটা গ্রাম। শেষমেশ লঙ্কাপাড়ার সেই পায়খানা পরিষ্কার করতে হস্তক্ষেপ করতে হল খোদ কলকাতা হাই কোর্টকে (Kolkata High Court)।
গ্রামবাসীর দুরবস্থা মোচনে পুলিশ-পঞ্চায়েতকে সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি শম্পা সরকার। আদালতের নির্দেশ, অবিলম্বে স্থানীয় থানার পুলিশ ও পঞ্চায়েত প্রধানকে এনিয়ে হস্তক্ষেপ করতে হবে। তাঁদের মধ্যস্থতায় ওই শৌচাগার পরিষ্কার করে স্থানীয় মানুষের বসবাসের উপযোগী করে তুলতে হবে বলেও নির্দেশ বিচারপতির। পঞ্চায়েত ও প্রশাসনকে ভর্ৎসনা করে আদালতের পর্যবেক্ষণ, সুস্থভাবে বাঁচা মানুষের নৈতিক অধিকার। সেই অধিকার থেকে কাউকে বঞ্চিত করা যায় না।
নদিয়া (Nadia) জেলার নাকাশিপাড়া থানা এলাকায় বেথুয়াডহরি ১ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের অম্তর্গত খিদিরপুর লঙ্কাপাড়া গ্রাম। সেখানকার বাসিন্দা হরিহর সাহার দুই ছেলে- ননীগোপাল ও সুদেব। হরিহরবাবুর মৃত্যুর পরে বাড়ির মালিকানা নিয়ে দু’ভাইয়ের বিবাদের জল গড়িয়েছে আদালতে, এখনও ফয়সালা হয়নি। কিন্তু তার জাঁতাকলে পড়ে বাড়ির একমাত্র শৌচাগারটির অনাথ দশা, সেটা সাফ করার দায় কোনও ভাই নিতে চান না। ফলে দুর্গন্ধে পাড়াপড়শির টেকা দায়। সুরাহা চেয়ে জনৈক গ্রামবাসী হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন।
মামলাকারীর কৌশলী সূর্যপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় ও অর্জুন সামন্ত জানান, ‘‘পথচলতি মানুষ থেকে শুরু করে আশপাশের বাড়ি- দুর্গন্ধে সবার প্রাণ ওষ্ঠাগত। এক বছর ধরে নাকাশিপাড়ার বিডিও, বিএমওএইচ, জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ সমিতির কর্মাধ্যক্ষ, সভাধিপতি, পঞ্চায়েত প্রধান– সকলকে বলা হয়েছে, কোনও লাভ হয়নি। বাধ্য হয়ে হাই কোর্টের শরণাপন্ন হতে হয়েছে।’’ অভিযোগ শুনে এমন একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এক বছর ধরে ঝুলে থাকায় ব্লক প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে আদালত। জানা গিয়েছে, আদালতের নির্দেশমতো আগামী ৩ জানুয়ারি ওই বিতর্কিত শৌচাগার সমস্যার সমাধানে বসছে পঞ্চায়েত প্রধান ও পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.