Advertisement
Advertisement

জন্মদাতা হলেই পিতার অধিকার নয়, একরত্তিকে পালক প্রতিবেশীর কাছেই রাখার সিদ্ধান্ত হাই কোর্টের

জন্মদাতা পিতা ও পালক বাবা-মা উভয়েই শিশুর অধিকার দাবি করেছিল।

Calcutta High Court ordered historic judgement on fatherhood | Sangbad Pratidin
Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:November 17, 2021 9:28 pm
  • Updated:November 17, 2021 9:39 pm  

শুভঙ্কর বসু: জন্মদাতা হলেই পিতার অধিকার মেলে না। পিতার কর্তব্য পালনেই পিতৃত্বের অধিকার জন্মায়। কার্যত এই তত্ত্বেই স্বীকৃতি দিল কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court)।

একরত্তি মেয়ের অধিকার দাবি করে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বাবা। পালটা আদালতে গিয়েছিলেন পালক পিতা-মাতাও। অবশেষে কিন্তু সাময়িক জয় হল পালক পিতা-মাতারই। জন্মদাতা পিতাকে দেখেনি ছোট্ট মেয়েটি। যখন শিশুটির বয়স চারমাস তখন বাবা ছেড়ে চলে যান। তার বয়স যখন সাতমাস তখন আত্মঘাতী হয় মা। তারপর থেকেই হাওড়ার শালকিয়ায় দিদার কাছে থাকত সে। কিন্তু ভাগ্যের নিষ্ঠুর পরিহাস। একরত্তির সেই শেষ আশ্রয়টুকুও চলে গেল। আত্মঘাতী হলেন দিদাও। কিন্তু সৃষ্টিকর্তা তো ঈশ্বর! তিনি-ই বোধহয় আশ্রয় জুটিয়ে দিয়েছিলেন। শিশুটিকে কোলে তুলে আগলে নিয়েছিলেন দিদার প্রতিবেশী জহর রায় ও জুলি রায়। সেই থেকেই নিজের মেয়ের থেকেও আদর যত্নে বড় করছেন শিশুটিকে। মা-বাবা বলতে সে জহর-জুলিকেই চেনে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: দোরগোড়ায় পুরভোট, নজরদারির জন্য প্রতি পুরসভায় পর্যবেক্ষক নিয়োগ মমতার]

এরমধ্যেই হুঁশ ফেরে জন্মদাতা বাবার। মেয়ের অধিকার দাবি করে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। বুধবার বাদি-বিবাদী উভয়পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চ নজিরবিহীন নির্দেশে জানায়, জন্মদাতা বাবা নয়, আপাতত পালক পিতা-মাতার কাছেই থাকবে ওই শিশুটি। তবে সপ্তাহ শেষে আইনজীবীদের উপস্থিতিতে শিশুটিকে তার বাবার কাছে পাঠানো হবে। গোটা দিন বাবার সঙ্গে কাটানোর পর ঠিক রাত ৯ টায় তাকে ফের পালক পরিবারের কাছে পাঠাতে হবে। এইভাবে টানা দুই সপ্তাহ চলার পর ফের শিশুটিকে আদালতে নিয়ে আসতে হবে। আইনজীবীরা তার সঙ্গে কথা বলবেন। শিশুটি যদি তার জন্মদাতা বাবার কাছে ফিরে যেতে চায়, তবে সেই মতোই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আর যদি শিশুটি পালক পরিবারের কাছে থাকতে চায়, তাহলে সেই সিদ্ধান্তই মঞ্জুর করা হবে।

এদিন, মামলার শুনানিতে শিশুটির জন্মদাতা বাবা দাবি করেন, তিনি অত্যন্ত বিলাসবহুল জীবনযাপন করেন। যার সঙ্গে তাঁর সন্তানের বর্তমান পরিস্থিতির মিল নেই। তিনি মেয়েকে আরও বড় স্কুলে পড়াতে চান। সন্তানের ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করতে চান। যদিও জন্মদাতা বাবার এই আবেদন খারিজ করে দিয়ে বিচারপতি বাগচি বলেন, “আপনার সন্তান নিজে বিলাসবহুল জীবন বেছে নেবে না অন্য কোথাও থাকবে সেটা সে-ই ঠিক করবে। শিশুমনে কোনও প্রভাব পড়বে এমন কোনও সিদ্ধান্ত আদালত নেবে না।” তবে এদিন বাদী-বিবাদী পক্ষের উভয় আইনজীবীরাও বলেছেন, এমন আইনি লড়াইয়ে কার্যত মনোকষ্টে ভোগে শিশুরা।

[আরও পড়ুন: ‘আমার কাছে টাকা চাইবে না, নিজেরা কাজ করো’, প্রশাসনিক বৈঠকে বিধায়কদের ধমক মুখ্যমন্ত্রীর]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement