গোবিন্দ রায়: বগটুই (Bagtui) কাণ্ডের পর ঝালদায় কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু খুনেও CBI তদন্তের নির্দেশ কলকাতা হাই কোর্টের। আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে হাই কোর্টে তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দিতে হবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে। আদালতের নির্দেশে খুশি নিহতের স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দু। এবার সুবিচার পাবেন বলেই আশা তাঁর।
গত ১৩ মার্চ ঝালদা-বাঘমুন্ডি সড়কপথে গোকুলনগর গ্রামের কাছে আততায়ীদের হাতে খুন হন কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু। পরের দিনই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী তথা পুর কর্মী সুভাষ গড়াইয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা শুরু হয়। ১৫ মার্চ ঝালদা থানার আইসি সঞ্জীব ঘোষ ও নিহতের ভাইপো মিঠুন কান্দুর প্রথম পর্যায়ের অডিও ভাইরাল হয়। তদন্তে সিট গঠন করা হয়। নিহতের ভাইপো তথা তৃণমূলের পুর প্রার্থী দীপক কান্দুকে গ্রেপ্তার করা হয়। ১৬ মার্চ সিটকে তদন্তে সাহায্য করে সিআইডি। ১৭ মার্চ আততায়ীর স্কেচ প্রকাশ করে পুরুলিয়া জেলা পুলিশ। খুনিকে ধরতে পারলে পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়। ১৯ মার্চ আইসি সঞ্জীব ঘোষ ও নিহতের ভাইপো মিঠুন কান্দুর দ্বিতীয় পর্যায়ের অডিও ভাইরাল হয়।
২৫ মার্চ সিবিআই তদন্তের দাবিতে হাই কোর্টে মামলা দায়ের করেন নিহতের স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দু। ঠিক দু’দিন পর ২৭ মার্চ কেস ডায়েরি তলব করে হাই কোর্ট। নিহতের ভাইপো মিঠুন কান্দুকে নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশও দেয় আদালত। গত শুক্রবার এই ঘটনায় অন্যতম মূল ষড়যন্ত্রকারী ঝাড়খণ্ডের বোকারোর জরিডি থানার গাইছাদ গ্রাম থেকে কলেবর সিং নামে এক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০ দিনের মাথায় শনিবার ঘটনার কিনারা হয়। নিহতের দাদা নরেন কান্দু ও তার সহযোগী আসিক খানকে গ্রেপ্তার করা হয়। ভাই তপনকে খুনে নরেন ৭ লক্ষ টাকার সুপারি দেয় আসিককে। রবিবার ঝালদা থানার আইসি সঞ্জীব ঘোষকে ক্লিনচিট দেন পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার এস. সেলভামুরুগান।
নিহত কাউন্সিলরের স্ত্রীর দায়ের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থারের ডিভিশন বেঞ্চ সিবিআই (CBI) তদন্তের নির্দেশ দেয়। অবিলম্বে সিটের হাতে থাকা সব নথি সিবিআইকে হস্তান্তর করার নির্দেশ দেন। অভিযোগকারী এবং মানুষের মনে আস্থা ফেরাতে এবং নিরপেক্ষ তদন্তের প্রয়োজনে এই নির্দেশ বলে জানায় কলকাতা হাই কোর্ট।
সোমবার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়ে খোদ বিচারপতি জানান, আইসি’র বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠেছে। তিনি কারও নির্দেশে নির্দিষ্ট একটি রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করছিলেন। পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠেছে। আদালতের প্রশ্ন, মামলার চূড়ান্ত রিপোর্ট আসার আগেই কীভাবে আইসিকে ক্লিনচিট দেওয়া হল? কেন এখনও তার মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হল না? এরপরই নিরপেক্ষ তদন্তের প্রয়োজন অনুভব করে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.