গোবিন্দ রায়: গরু, কয়লা, শিক্ষা দুর্নীতির পর এবার পুরসভায় দুর্নীতির তদন্তভারও এবার সিবিআইকে দিল কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta HC)। এমনকী প্রয়োজনে নতুন এফআইআর দায়ের করে তদন্ত করতে পারবে সিবিআই (CBI)। শুক্রবার এমনই নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ডিজিপি এবং মুখ্যসচিবের প্রতি তাঁর নির্দেশ, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে সবরকম সহযোগিতা করতে হবে। ২৮ এপ্রিল সিবিআইকে তদন্ত সংক্রান্ত প্রাথমিক রিপোর্ট পেশ করতে হবে। এর আগে নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেপ্তার হওয়া অয়ন শীলের থেকে পাওয়া পুরসভা দুর্নীতি সংক্রান্ত তথ্যের ভিত্তিতে এই নির্দেশ দিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের।
এর আগে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে কুন্তল ঘোষ, শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ অয়ন শীলকে (Ayan Seal) তাঁর সল্টলেকের ফ্ল্যাট থেকে গ্রেপ্তার করে ইডি। তাঁর ফ্ল্যাটে উদ্ধার হওয়া বহু নথিপত্রেই প্রচুর আর্থিক লেনদেনের প্রমাণ মেলে। সেসব খুঁটিয়ে দেখে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, শুধু শিক্ষক নিয়োগেই নয়, বিভিন্ন পুরসভায় কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রেও বিপুল অঙ্কের টাকা নিয়েছিলেন অয়ন শীলরা। আর তারপরই আদালতের নজরে বিষয়টি আনে ইডি (ED), সিবিআই (CBI)।
শুক্রবার সেই সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল কলকাতা হাই কোর্টে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে। বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন, সাধারণ মানুষ ১০ হাজার টাকা উপার্জনের জন্য এত খাটছেন, আর অর্পিতা মুখোপাধ্যায়দের কাছে এত টাকা আসে কোথা থেকে? একাংশের রাজনৈতিক ব্যক্তিদের কাছে কোটি কোটি টাকা আসছে কোথা থেকে? তাঁর আরও পর্যবেক্ষণ, ”এইসব নেতাদের ছুঁলেই কোটি কোটি টাকা পাওয়া যাচ্ছে। আর সাধারণ মানুষকে ছুঁয়ে দেখুন, বাজারে তাঁদের কত দেনা আছে। এই জন্যই কি স্বাধীনতা সংগ্রামীরা জীবন দিয়েছিলেন? দেশের মালিক জনগণ। দুটো, চারটে, পাঁচটা ব্যবসা থাকলেই কেউ দেশের মালিক হয়ে যায় না। দেশের আসল মালিক তার জনগণ।”
এরপরই সিবিআই, ইডির কাজের প্রশংসা করে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ”এই ব্যাপক দুর্নীতির তদন্তে আর কতজন আধিকারিক আপনাদের লাগবে, আমাকে জানান। শেষ দু’মাসের চেয়ে এখন সিবিআই ভাল কাজ করছে। ইডিও বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে ভাল কাজ করছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.