সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রথযাত্রা ইস্যুতে মামলায় বড় ধাক্কা খেল বিজেপি৷ বিজেপির রথযাত্রায় আপাতত স্থগিতদেশের নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট৷ বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজ্যজুড়ে রথযাত্রার পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা করে ওঠা সম্ভব নয় বলে বিজেপিকে রথযাত্রার অনুমতি দেওয়া হয়নি৷ আগামী ৯ জানুয়ারি পরবর্তী শুনানি না হওয়া পর্যন্ত রথযাত্রার উপর স্থগিতাদেশ থাকবে বলে আদালতের তরফে জানানো হয়৷ তবে, আগামিকাল রাজ্যের সমস্ত জেলার পুলিশকর্তাদের কাছ থেকে নিরাপত্তা সংক্রান্ত একটি রিপোর্টও জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত৷ এককথায় রথযাত্রার অনুমতি চাইতে গিয়ে স্থগিতাদেশের নির্দেশ পেল বঙ্গ বিজেপি।
বৃহস্পতিবার, রাজ্যের আপত্তিকে সম্মতি জানিয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী৷ বৃহস্পতিবার মামলার শুনানিতে বিচারপতি বলেন, ‘‘ব়্যালি নিয়ন্ত্রণ করার অধিকার আছে প্রশাসনের৷ তারা চাইলে যে কোনও রাজনৈতিক দলের মিছিল আটকে দিতে পারে৷ কারণ, এটা সংবিধান সম্মত৷’ এদিন মামলার শুনানিতে কলকাতা হাই কোর্টের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত, রাজনৈতিক দলের মিছিলে প্রশাসন হস্তক্ষেপ করার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন৷ বলেন, ‘‘সংবিধানে মিছিল আটকানোর অনুমতি রয়েছে প্রশাসনের৷’’ অ্যাডভোকেট জেনারেলের মন্তব্যে সম্মতি জানান বিচারপতি৷
এদিন মামলার শুনানিতে কোচবিহার জেলার পুলিশ সুপারের তরফে চিঠি পাঠিয়ে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, প্রশাসন রথযাত্রার অনুমতি দেবে না৷ তার কারণ হিসাবে, মিছিল হলে অশান্তি ও আইনশৃঙ্খলা নষ্ট হতে পারে বলে আদালতে চিঠি পড়ে শোনান অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত৷ একই সঙ্গে মুখ বন্ধ খামে রথযাত্রা সংক্রান্ত গোয়েন্দা রিপোর্টও আদালতে জমা দেওয়া হয়৷ আদালতে জমা দেওয়া গোয়েন্দা রিপোর্ট অত্যন্ত সংবেদনশীল বলেও এদিন উল্লেখ করেন কিশোর দত্ত৷
[বঙ্গোপসাগরে যুদ্ধবিমান বহনকারী রণতরী ভাসাচ্ছে নৌসেনা]
পালটা বিজেপির তরফে অভিযোগ তোলা হয়৷ শাসকদল ও প্রশাসন একযোগে তাদের এই কর্মসূচি বানচাল করার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে আদালতে বিজেপির তরফে অভিযোগ তোলা হয়৷ কিন্তু, তাতে খুব একটা গুরুত্ব দেয়নি আদালত৷ বিজেপি রথযাত্রা বা গণতন্ত্র বাঁচাও কর্মসূচির অনুমতি ও নিরাপত্তা চেয়ে পুলিশের কাছে আবেদন জানায়। অভিযোগ, একাধিকবার আবেদন জানানো সত্ত্বেও বিষয়টি নিয়ে নীরব রাজ্য পুলিশ প্রশাসন। এই অভিযোগে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার। এবিষয়ে আদালতের হস্তক্ষেপ চেয়ে মামলা করেন তিনি।
[আইন ভেঙেছে চালক, অন্য অ্যাম্বুল্যান্সে রোগীকে হাসপাতালে পাঠাল পুলিশ]
বিজেপির আইনজীবী অনিন্দ্য মিত্র ও সপ্তাংশু বসু সওয়াল করে বলেন, “গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রাকে কেন্দ্র করে প্রচুর মানুষের সমাগম হবে। হাই প্রোফাইল মন্ত্রীরা এই কর্মসূচিতে যোগ দেবেন। কিন্তু এই কর্মসূচির অনুমতি ও নিরাপত্তা চেয়ে রাজ্য পুলিশের ডিজি ও আইজির কাছে একাধিকবার চিঠি লেখা হয়েছে। কিন্তু তার প্রেক্ষিতে এখনও কোনও উত্তর দেয়নি পুলিশ। নিরাপত্তার বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে তাও জানানো হয়নি।” এরপরই রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলের কাছে বিষয়টি জানতে চান বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী৷ আজ, শুনানিতে কোচবিহার জেলার পুলিশ সুপারের চিঠি ও গোয়েন্দা রিপোর্ট পেশ করা হয়৷ বিজেপি সূত্রে খবর, স্থগিতাদেশ পেয়ে ডিভিশন বেঞ্চে মামলা নিয়ে যাচ্ছে দল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.