গোবিন্দ রায়: কলকাতা ও বিধাননগরে হুক্কা বার (Hookah Bar) বন্ধ নিয়ে সরকারি নির্দেশে রীতিমতো ক্ষুব্ধ কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta HC) বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। কেন বন্ধ হল হুক্কা বার? এই প্রশ্ন তুলে বিচারপতি মান্থার দাবি, এর জন্য আলাদা আইন করা প্রয়োজন। তাছাড়া এভাবে কোনও পুর কর্তৃপক্ষ এভাবে হুক্কা বার বন্ধ করতে পারে না। কলকাতা রেস্তরাঁ অ্যাসোসিয়েশনের তরফে হাই কোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। মঙ্গলবার তারই শুনানিতে এই নির্দেশ দেন তিনি। মামলার পরবর্তী শুনানি ৮ ফেব্রুয়ারি।
গত মাসে কলকাতার সমস্ত হুক্কা বার বন্ধের নির্দেশ দিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল কলকাতা পুরসভার (Kolkata Municipal Corporation) মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তার দেখাদেখি বিধাননগর পুরসভার চেয়ারম্যান সব্যসাচী দত্ত পুলিশ কমিশনারকে আবেদন জানিয়ে চিঠি পাঠান। আবেদন খতিয়ে হুক্কা বার বন্ধ করার আশ্বাস দিয়েছিলেন।
যেহেতু হুক্কা বার চালানোর জন্য পৃথকভাবে লাইসেন্স নেওয়া থাকে, তাই বার বন্ধের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আপত্তি তুলে কলকাতা রেস্তরাঁ অ্যাসোসিয়েশন হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। তাঁদের হয়ে আইনজীবী হিসেবে সওয়াল করেন জয়দীপ কর। মঙ্গলবার তারই শুনানিতে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা বিষয়টি নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেন। তাঁর মত, রাজ্য চাইলে আলাদা আইন করতে পারে। কিন্তু পুলিশ এভাবে বন্ধ করতে পারেন না। হুক্কা শুধু একটি ধূমপানের অঙ্গ। কলকাতা পুরসভা বা বিধাননগর পুরসভার কোন অধিকার নেই হুক্কা বার বন্ধ করার, যতক্ষণ না রাজ্য আইন আনছে।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, মেয়র কেন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন? কোথাও হুক্কায় কিছু মেশানো হচ্ছে কি না, অনুসন্ধান করুন। কিন্তু পুরসভার অধিকার নেই তা বন্ধ করার। এরপর বিচারপতির আরও পর্যবেক্ষণ, সিগারেট থেকে এক বিরাট অর্থ রাজ্যের কোষাগারে যায়। রেঁস্তরায় হুক্কার জায়গা আলাদা হয়। তা নিকোটিন ও হার্বাল হলে আপত্তি কোথায়? পাবলিক প্লেস হলে তখন ধূমপানে আপত্তি আনা যায়। আইন মোতাবেক রেস্তরাঁয় হুক্কা বার হলে বন্ধ করা যায় না। আলাদা করে ট্রেড লাইসেন্স নেওয়া আছে হুক্কা বারের জন্য। কারও নিজের স্বাস্থ্য নিয়ে ভাবনা না থাকলে রাজ্যের রাজস্ব আসছে এমন জিনিস কেন বন্ধ হবে? এসব প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.