শুভঙ্কর বসু: শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আমফানে (Amphan) বিধ্বস্ত এলাকায় ত্রাণ ও পুনর্বাসনের জন্য কত খরচ করেছে রাজ্য সরকার? কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলকে (CAG) তার হিসেব দেওয়ার কথা নবান্নের। আমফান দুর্নীতি নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে দায়ের হওয়া মামলার ভিত্তিতে এই নির্দেশই শুনিয়েছিল আদালত। কিন্তু এখনও সেই হিসেব জমা পড়ল না CAG’র কাছে। এ নিয়ে শুক্রবার শুনানিতে আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়তে হল নবান্নকে। কবে বিস্তারিত হিসেব দিতে পারবে রাজ্য প্রশাসন? সোমবারের মধ্যে তা জানাতে হবে আদালতে।
গত বছরের মে মাসে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আমফানে তছনছ হয়ে গিয়েছিল রাজ্যের উপকূলবর্তী এলাকা। ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ে বেশ কয়েকটি জেলা। তা সামলাতে ক্ষতিপূরণ এবং ত্রাণবণ্টনের কাজ শুরু করে রাজ্য। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পঞ্চায়েতের অধীনে সেই কাজ শুরু হয়। আর এখানেই অভিযোগ ওঠে যে আমফানের ক্ষতিপূরণে ব্যাপক দুর্নীতি, স্বজনপোষণ হয়েছে। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা সরকারি সাহায্য থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর দরবারে এ নিয়ে প্রচুর অভিযোগ জমা পড়ার পর তিনি নির্দেশ দেন, ফের নতুন করে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে সাহায্য দিতে হবে। কিন্তু তা সত্ত্বেও দুর্নীতির অভিযোগমুক্ত হয়নি এই ত্রাণবণ্টন ব্যবস্থা।
এ নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে (Calcutta HC) মামলা দায়ের করেন বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং (Arjun Sing), দক্ষিণ ২৪ পরগনার কৃষক সংগঠন-সহ আরও অনেকে। তার পরিপ্রেক্ষিতে হাই কোর্ট CAGকে দিয়ে আমফান ক্ষতিপূরণের হিসেব অডিট করানোর নির্দেশ দেয়। ডিসেম্বরের ১ তারিখ এই নির্দেশের পর কেটে গিয়েছে দেড় মাস। কিন্তু CAG এখনও রাজ্যের তরফে কোনও হিসেব হাতে না পাওয়ায় অডিটের কাজ শুরু করতে পারেনি। শুক্রবার এই মামলার শুনানিতে রাজ্যকে আদালত প্রশ্ন করে, এতদিন পরও কেন CAGকে বিস্তারিত হিসেব দেওয়া হল না? তাতে রাজ্যের তরফে জানানো হয়, চলতি অর্থবর্ষ এখনও শেষ হয়নি। জেলা থেকে যাবতীয় আর্থিক রিপোর্ট জমা পড়ে অর্থবর্ষ শেষের পরই। তাই আমফানের ক্ষতিপূরণের রিপোর্টও তারা জেলাশাসকদের কাছ থেকে পাননি।
রাজ্যের এই জবাব শুনে বিচারপতিরা পালটা প্রশ্ন করেন, কবে এই রিপোর্ট জমা দেওয়া সম্ভব? তা জানানোর জন্যও কিছুটা সময় চান রাজ্যের পক্ষে সওয়াল করা আইনজীবী। তাতে আদালত নির্দেশ দেয়, সোমবারের মধ্যেই সেই দিনক্ষণ জানাতে হবে। তারপর CAG’র হাতে রিপোর্ট তুলে দেওয়া নিয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবে আদালত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.