সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বনগাঁ পুরসভায় ৭২ ঘণ্টার মধ্যে অনাস্থা প্রক্রিয়া শুরুর নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। চারদিনের মধ্যে অনাস্থা প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রক্রিয়া শুরুর আরজি জানিয়ে হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন তিনজন কাউন্সিলর।
২২ ওয়ার্ড বিশিষ্ট বনগাঁ পুরসভার নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল তৃণমূলেরই। শাসকদলের কাউন্সিলর ২১ জন আর একটি আসন সিপিএমের দখলে। কিন্তু লোকসভা ভোটে বনগাঁ পুর এলাকায় বিজেপির থেকে প্রায় কুড়ি হাজার ভোটে পিছিয়ে পড়ে তৃণমূল কংগ্রেস! বস্তুত, বনগাঁ লোকসভা আসনটিও হাতছাড়া হয়েছে রাজ্যের শাসকদলের। বনগাঁ পুর এলাকায় দলের ভরাডুবির জন্য খোদ চেয়ারম্যান শংকর আঢ্যের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন তৃণমূল কাউন্সিলরদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, চেয়ারম্যানের অনৈতিক কাজকর্ম, স্বৈরাচারী মনোভাব ও স্বজনপোষণই লোকসভা ভোটে বনগাঁ পুর এলাকায় তৃণমূলের ভরাডুবির একমাত্র কারণ। ক্ষোভ এমন জায়গায় পৌঁছায় যে, চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে প্রথমে ১১ জন ও তারপর ৩ জন, মোট ১৪ জন তৃণমূল কাউন্সিলর অনাস্থা প্রস্তাব আনেন। এমনকী, শংকর আঢ্যকে চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য দলের জেলা নেতৃত্বের কাছে আবেদনও জানানো হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে কাউন্সিলরদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন তৃণমূল কংগ্রেসের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা নেতৃত্ব। কিন্তু তাতেও সমাধান সূত্রে মেলেনি। শেষপর্যন্ত দিল্লিতে গিয়ে যে ১৪ কাউন্সিলর চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিলেন, তাঁদের মধ্যে ১২ জন যোগ দেন বিজেপিতে। বাকি দু’জন থেকে গিয়েছেন তৃণমূলে। এরপরই বনগাঁ পুরসভার চেয়ারম্যান পদ থেকে শংকর আঢ্যকে পদত্যাগের নির্দেশ দেয় তৃণমূল নেতৃত্ব। যদিও এখনও পর্যন্ত পদত্যাগ করেননি তিনি।
এই যখন পরিস্থিতি, তখনই পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রক্রিয়া শুরুর আরজি জানিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন বনগাঁ পুরসভার ৩ জন কাউন্সিলর। তাঁদের অভিযোগ, বনগাঁ পুরসভার চেয়ারম্যান শংকর আঢ্যের বিরুদ্ধে অনাস্থা জানিয়ে প্রশাসনের কাছে চিঠি দিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু প্রশাসন অনাস্থা প্রক্রিয়া শুরু করতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। সেই মামলায় বৃহস্পতিবার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে অনাস্থা প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.