রাহুল রায়: প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতিতে ফের CBI তদন্তের নির্দেশ কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। ২০১৪ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষার OMR শিটের হদিশ মিলছে না। অভিযোগ, আইন না মেনে সেই OMR শিট নষ্ট করে ফেলেছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। এই মামলায় CBI তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। কেন নষ্ট করা হল প্রাথমিকের OMR শিট? আইন মেনেই কি সেগুলি নষ্ট করা হয়েছিল? তদন্ত করবে সিবিআই। কার নির্দেশে বা কী উদ্দেশে ওএমআর শিটগুলি নষ্ট করা হয়েছে, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সেটাও খতিয়ে দেখবে।
এই মামলায় পর্ষদের দেওয়া রিপোর্টে বিস্তর ফাঁকফোকর পেয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। কীভাবে OMR Sheet নষ্ট করা হবে তার কোনও স্পষ্ট নির্দেশিকা নেই। শুধুমাত্র পেপার মিলে পাঠানোর নির্দেশ আছে। রিপোর্ট দেখে মন্তব্য করেছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, এই নথি নষ্ট করার সময় পর্ষদের কোনও আধিকারিক উপস্থিত ছিলেন না। কত ওএমআর শিট নষ্ট করা হয়েছে, তার সুনির্দিষ্ট সংখ্যা বলা নেই। বলা আছে প্রায় ১২.৯৫ লাখ। ২০ লাখ পরীক্ষার্থীর মধ্যে কার কার OMR Sheet নষ্ট হল, তাও পর্ষদের অজানা। এসব নিয়েই ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Ganguly)। তাঁর স্পষ্ট কথা, “পর্ষদ এমন কোনও আইন আদালতের সামনে দেখাতে পারেনি, যেটা মেনে OMR Sheet নষ্ট করা হয়েছে। OMR Sheet নষ্ট করার জন্য কোনও টেন্ডার ডাকা হয়নি। ওএমআর নষ্টের বিষয়ে পর্ষদের ভূমিকা সন্দেহজনক এবং ঢিলেঢালা। সাংবিধানিক সংস্থার কাছ থেকে এই ভূমিকা প্রত্যাশিত নয়।”
শুধু তাই নয়, এই মামলায় মঙ্গলবারের মধ্যেই পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে (Manik Bhattacharya) জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। মঙ্গলবারই রাত আটটার সিবিআই দপ্তরে হাজির হতে হবে মানিক ভট্টাচার্যকে। তদন্তে যাবতীয় সহযোগিতা করতে হবে তাঁকে। তিনি যদি হাজির না হন, বা তদন্ত সহযোগিতা না করেন তাহলে তার বিরুদ্ধে যাবতীয় পদক্ষেপ নিতে পারবে সিবিআই। প্রয়োজনে তাকে হেফাজতে নিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। অর্থাৎ মানিক ভট্টাচার্যকে চাইলে গ্রেপ্তারও করতে পারে সিবিআই।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষার ওএমআর শিট বা উত্তরপত্র নষ্ট করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সব মিলিয়ে মোট ১২ লক্ষের বেশি ওএমআর শিট নষ্ট করার অভিযোগ পেয়েছে হাই কোর্ট। মামলাকারী শান্তনু শিট এবং রাহুল চক্রবর্তীর মামলায় মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্টে প্রাথমকি শিক্ষা পর্ষদের আইনজীবী জানান ২০১৭ সালের সমস্ত রেকর্ড নষ্ট হয়ে গেছে। কুমির ছানার মতো একই রিপোর্ট বার বার আদালতের কাছে তুলে ধরেছেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.