স্টাফ রিপোর্টার, বিধাননগর: কেষ্টপুর থেকে এক জ্যোতিষীকে অপরহণ করে মুক্তিপণ চাওয়ার অভিযোগ উঠল এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। অভিযুক্তকে রবিবার গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মধ্যমগ্রাম থেকে উদ্ধার অপহৃত। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে অভিযুক্তের এক শাগরেদকেও গ্রেপ্তার করেছে বাগুইআটি থানা।
এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে কেষ্টপুরে। কারণ অপহৃত ব্যক্তি পেশায় একজন জ্যোতিষী। এবং অভিযুক্ত নিজেকে পেশায় আইনজীবী বলে পুলিশের কাছে দাবি করেছে। ব্যক্তির পরিচয় জানার পর কার্যত হাই প্রোফাইল মর্যাদা পাচ্ছে এই কিডন্যাপ কেস। জ্যোতিষীর নাম শিবশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি কেষ্টপুর ঘোষপাড়ায় থাকেন। সেখানে জ্যোতিষ চর্চা করেন। এলাকায় বেশ নামডাকও আছে বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।
অন্যদিকে অপহরণের মামলায় মূল অভিযুক্ত নিজেকে কলকাতা হাই কোর্টের অ্যাডভোকেট বলে দাবি করেছে। তার নাম শুভেন্দু হাজরা। তার সঙ্গী শ্যামল কবিরাজকেও ধরেছে পুলিশ। মধ্যমগ্রামে শ্যামলের বাড়িতেই আটকে রাখা হয়েছিল জ্যোতিষীকে।
[দূষিত মাংসের হাত ধরেই মানবদেহে ভাগাড়ের জীবাণু, আক্রান্ত একাধিক]
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এই অপরহণের ঘটনা সংঘটিত হয়। জ্যোতিষী ও আইনজীবী পূর্ব পরিচিত। এদিন আইনজীবী শুভেন্দু এদিন জ্যোতিষী শিবশঙ্করের বাড়ি আসে। তদন্তকারী অফিসারকে এ তথ্য দিয়েছেন শিবশঙ্করের স্ত্রী। তাঁর বয়ান অনুযায়ী, সন্ধ্যায় এসে শুভেন্দু ডেকে নিয়ে যায় স্বামীকে। তারপর আর বাড়ি ফেরেননি তিনি। পরে শুভেন্দুকে খুঁজে পেয়ে স্বামীর কথা জিজ্ঞেস করায় সে বলে তাঁকে কিডন্যাপ করেছে এক ব্যক্তি। এক কোটি টাকা পেলে তবেই ছাড়বে। অনেক জোরাজুরির পর শ্যামল কবিরাজ নামে একজনের নাম জানিয়ে বলে, ওই ব্যক্তিই শিবশঙ্করকে কিডন্যাপ করে আটকে রেখেছে।
এই ঘটনার কথা শিবশঙ্করের স্ত্রী প্রথমে বাগুইআটি থানাকে জানাননি। বৃহস্পতিবারের পর শুক্রবারও ঘটনার কথা প্রকাশ করেননি। শনিবারও স্বামী বাড়ি ফিরে না আসায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সেখানে এক কোটি টাকা মুক্তিপণের উল্লেখ করেন তিনি। এই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অপহৃতকে মধ্যমগ্রাম থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। তাঁকে শ্যামলের বাড়িতে আটকে রাখা হয়েছিল। অপহরণের পরিকল্পনা মূলত শুভেন্দুর বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।
[সহায় রূপশ্রী প্রকল্প, দুশ্চিন্তা কাটিয়ে বিয়ের সানাই বাজল হুগলির মণ্ডল পরিবারে]
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত শুভেন্দুর দাবি, মাদুলি বানিয়ে দেবে বলে জ্যোতিষী শিবশঙ্কর কয়েক লক্ষ টাকা নিয়েছিল তার কাছ থেকে। সেই মাদুলি ধারণ করলে নিশ্চিত চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন জ্যোতিষী। তাঁকে কয়েক খেপে সেই টাকা পেমেন্ট করে সে। তারপর চাকরি বাকরি কিছুই হয়নি। তাই টাকা ফেরত চেয়েছিল। টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করেন জ্যোতিষী। তাই টাকা আদায়ের জন্য চাপ দিতে তাঁকে আটকে রাখা হয়েছিল মধ্যমগ্রামে। পুলিশের বক্তব্য, দু’পক্ষের কথা শুনে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.