ফাইল ছবি।
গোবিন্দ রায়: সন্দেশখালি থেকে ৫২ কিলোমিটার দূরে তাঁদের আটকে দিয়েছিল পুলিশ। প্রবল তর্কাতর্কির পর গ্রেপ্তারও করা হয়। বাধ্য হয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন দিল্লির স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমের প্রতিনিধিরা। এবার তাঁদের সন্দেশখালিতে যাওয়ার অনুমতি দিল কলকাতা হাই কোর্ট। আগামী ৩ মার্চ উপদ্রুত গ্রামে যেতে পারবেন ওই প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।
কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, আগামী ৩ মার্চ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমকে সন্দেশখালি যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দলকে সন্দেশখালির মাঝেরপাড়া, নতুনপাড়া ও নস্করপাড়ার রাসমন্দিরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এই তিনটি অঞ্চলে ১৪৪ ধারা নেই বলে দাবি মামলাকারীদের। বিচারপতির নির্দেশ, “আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয় এমন কোনও পদক্ষেপ করা যাবে না। এই মর্মে স্থানীয় পুলিশের কাছে মুচলেকা দিতে হবে।” কেন দিল্লির স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমের প্রতিনিধিরা সন্দেশখালিতে যেতে চান, রাজ্যের তরফে সেই প্রশ্ন করা হয়। তবে বিচারপতি স্পষ্ট জানান, “১৪৪ ধারা জারি না থাকলে যে কেউ যেতে পারেন।”
উল্লেখ্য, গত রবিবার দিল্লির স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম সন্দেশখালি যাওয়ার চেষ্টা করে। ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দলে ছিলেন বিচারপতি নারসিমা রেড্ডি, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের যুগ্ম রেজিস্ট্রার রাজপাল সিং, ওপি ব্যাস, জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের কনসালট্যান্ট ভাবনা বাজাজ এবং বর্ষীয়ান সাংবাদিক সঞ্জীব নায়ক। শনিবার রাতে ধর্মতলার একটি হোটেলে ছিলেন তাঁরা। প্রতিনিধি দলের দাবি, পুলিশের তরফে রবিবার সকালে তাঁদের একটি চিঠি দেওয়া হয়। ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, সন্দেশখালির বিভিন্ন এলাকায় এখনও ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে। তাই আইন মোতাবেক তাঁদের গ্রামে ঢুকতে দেওয়া সম্ভব নয়। চিঠি হাতে পাওয়ার পর ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমের সদস্যরা স্পষ্ট জানান, তাঁরা গ্রামে যাবেন। যে এলাকাগুলিতে ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে সেখানে তাঁরা দল বেঁধে যাবেন না। তাঁদের মধ্যে শুধুমাত্র ২ জন ওই গ্রামে ঢুকবেন।
এর পর ধর্মতলার হোটেল থেকে বেরন তাঁরা। সড়কপথে সন্দেশখালির উদ্দেশে রওনা দেন তাঁরা। তবে সন্দেশখালি থেকে প্রায় ৫২ কিলোমিটার দূরে ভোজেরহাটেই তাঁদের গাড়িকে আটকে দেয় কলকাতা পুলিশ। জানানো হয়, বসিরহাটের পুলিশ সুপারই ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমকে সন্দেশখালি যাওয়ার পথেই আটকাতে বলেছেন। সেই অনুযায়ী পুলিশ ওই প্রতিনিধি দলের ৬ সদস্যকে আটকে দেওয়া হয়। পুলিশের সঙ্গে তীব্র বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন তাঁরা। ভোজেরহাটে পথে বসে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম। প্রথমে রাস্তা ফাঁকা করে দেওয়ার অনুরোধ জানান পুলিশকর্মীরা। যদিও পরে গ্রেপ্তার করা হয় তাঁদের। টেনেহিঁচড়ে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয় ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমের সদস্যদের। গ্রেপ্তারির প্রতিবাদ জানিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা দায়ের হয়। অবশেষে সন্দেশখালি যাওয়ার অনুমতি পেলেন দিল্লির স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমের সদস্যরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.