ছবি: প্রতীকী।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রায় দেড় মাসের প্রচেষ্টা অবশেষে সার্থক। জামিনে মুক্তি পাচ্ছেন ‘আরামবাগ টিভি’র সম্পাদক সফিকুল ইসলাম-সহ ৩ জন। আজ তাঁদের জামিন মঞ্জুর করেছে কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court) বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন মঞ্জুর করা হয়েছে। ৪৫ দিন পর মুক্ত হয়ে ফিরছেন সফিকুল, তাঁর স্ত্রী আলিমা খাতুন এবং চ্যানেলের ক্যামেরাম্যান সুরজ আলি।
গত ২৯ জুলাই ভোররাতে বাড়ির দরজা, জানলা ভেঙে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল ‘আরামবাগ টিভি’র (Arambag TV) সম্পাদক সফিকুল ইসলাম, তাঁর স্ত্রী আলিমা খাতুন ও ক্যামেরাম্যান সুরজ আলি খানকে। সিসিটিভি ফুটেজে স্পষ্ট যে, আরামবাগ থানার আইসি পার্থ সারথি হালদারের নেতৃত্বে সফিকুলের বাড়ির দরজা ভেঙে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তাঁদের। যে অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়, সেই অভিযোগ দায়ের হয়েছিল ২৮ তারিখ রাত ১২.১০ নাগাদ। অভিযোগ পাওয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই কোনও নোটিস ছাড়াই কীভাবে গ্রেপ্তার করা যায়? সেই প্রশ্ন ওঠে। জানা যায়, তিন মাস আগে ঘটে যাওয়া ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অভিযোগ দায়ের হচ্ছে, অথচ দেরি হওয়ার কোনও কারণ উল্লেখ ছিল না অভিযোগপত্রে। যিনি অভিযোগ করছেন, তিনি একজন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সদস্য। ফলে জটিলতা বাড়তে থাকে।
লকডাউনের সময় নিয়ম লঙ্ঘন করে ক্লাবগুলিতে চেক বিলির খবর নিজের ইউটিউব চ্যানেলে তুলে ধরেছিলেন সফিকুল। সেই খবর ভুয়ো বলে প্রথমে পুলিশ উড়িয়ে দেয় এবং ভুয়ো খবর পরিবেশনের অভিযোগে মামলা দায়ের করে সফিকুলের বিরুদ্ধে। পরে অবশ্য প্রমাণিত হয় যে আরামবাগ টিভির খবরটি ভুল ছিল না। ফলে সেই মামলায় সফিকুলদের জামিন মেলে। এরপর আবার তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। মোট ৬টি মামলা চলছিল সম্পাদক সফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে। আজ সবকটি মামলাতেই জামিন মঞ্জুর করেন বিচারপতিরা।
একটি মামলা দায়ের হয়েছিল সফিকুলের স্ত্রী আলিমা এবং ৩টি মামলা ছিল ক্যামেরাম্যান সুরজ আলির বিরুদ্ধে। এই মামলার শুনানিতে গত সপ্তাহে হাই কোর্ট ডিজিপি’র কাছে রিপোর্ট তলব করে। পুলিশের অতি সক্রিয়তার অভিযোগে সফিকুলের পরিবারের দায়ের করা মামলার সওয়ালে তাঁর হয়ে আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য দাবি করেছিলেন, ‘এই গ্রেপ্তার সুপ্রিম কোর্টের একাধিক জাজমেন্টকে অমান্য করা হয়েছে। একটি সাংবাদ মাধ্যমের গণতন্ত্রকে হরণ করার চেষ্টা হচ্ছে। সংবিধানকেও লঙ্খন করা হয়েছে।’ গোড়া থেকেই এই ঘটনায় সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধের অভিযোগ তুলে সফিকুলদের পাশে এসে দাঁড়ান সাংবাদিক এবং সাংস্কৃতিক জগতের অনেকেই। তাঁদের সমর্থন পেয়ে আরও সাহস ও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে আইনি লড়াই চালিয়ে যান সফিকুলরা। তারই যথাযথ ফল পেলেন আজ। প্রায় ৪৫ দিন পর জামিনে মুক্ত হলেন তাঁরা তিনজন। আজই আলিমা খাতুন এবং সুরজ আলি মুক্তি পাবেন। আরামবাগ থানায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র পেশের পর হয়ত শনিবার বাড়ি ফিরবেন সম্পাদক সফিকুল ইসলাম।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.