গোবিন্দ রায়: ফের ধর্ষণ মামলার কিনারা করতে দুঁদে IPS অফিসার দময়ন্তী সেনের উপর ভরসা রাখল কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta HC)। মঙ্গলবার ধর্ষণের চারটি ঘটনায় জনস্বার্থ মামলার শুনানি ছিল প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে। তাতে বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট (SIT) গঠন করে দিয়েছে উচ্চ আদালত। সিটের দায়িত্ব দেওয়া হল কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন গোয়েন্দা আধিকারিক দময়ন্তী সেনকে (Damayanti Sen)। এই মুহূর্তে তিনি ডিআইজি, ট্রেনিং পদে রয়েছেন। তবে হাই কোর্টে নির্দেশের পর মোট চারটি ধর্ষণ মামলার কিনারা করতে হবে তাঁকে। আদালতের নজরদারিতেই চলবে তদন্ত। মঙ্গলবার এমনই নির্দেশ প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের। এই সংক্রান্ত পরবর্তী শুনানি ২০ তারিখ।
মাটিয়া, মালদহ, দেগঙ্গা, বাঁশদ্রোণী, হাঁসখালি-সহ সম্প্রতি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ধর্ষণের (Rape)মতো গুরুতর ঘটনার একাধিক খবর মিলেছে। কোথাও কোথাও যৌন নির্যাতনের মুখে পড়়েছে নাবালিকাও। প্রায় প্রতিটি ঘটনাতেই সক্রিয়তার সঙ্গে কাজ করেছে পুলিশ। মূল অভিযুক্তরা গ্রেপ্তার হয়েছে। তবে নদিয়ার হাঁসখালিতে প্রেমিকের জন্মদিনের পার্টিতে গিয়ে ধর্ষিত এবং তারপর কিশোরীর মৃত্যুর ঘটনা নয়া মোড় নিয়েছে। ঘটনার ৫ দিন পর পুলিশে অভিযোগ দায়ের হওয়ায় তদন্ত খানিকটা বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে। এ নিয়ে সোমবার মুখ্যমন্ত্রীও উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন।
আগেই মাটিয়া, মালদহ, দেগঙ্গা, বাঁশদ্রোণী -চারটি ধর্ষণের ঘটনায় হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা (PIL) দায়ের হয়েছিল। হাঁসখালি কাণ্ডে জোড়া মামলা দায়ের হয় সোমবার। মঙ্গলবার প্রথম চারটি মামলার একসঙ্গে শুনানি হয় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে। তাতে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব বলেন, ”আমরা প্রতিটি ঘটনার দিকে আলাদা করে নজর রাখছি। যদি কোনও ঘটনায় আলাদা করে কোনও আলাদা এজেন্সি বা কোনও বিচারপতির নেতৃত্বে তদন্তের প্রয়োজন হয়, সেটা আমরা করব। এই ধরনের ঘটনায় আমি বাকরুদ্ধ। আগে দিল্লি বা দেশের অন্য জায়গা থেকে এই ধরনের অভিযোগ পাওয়া যেত।” তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, পরিকাঠামো থাকার পরেও কেন এই ঘটনা? কেন বারবার একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে? এর জবাবে অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেন, ”এই রাজ্য মহিলাদের জন্য অন্যতম সুরক্ষিত রাজ্য। আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করেছি।”
এরপরই প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন জয়েন্ট সিপি (ক্রাইম) দময়ন্তী সেনকে বিশেষ তদন্তকারী দলের দায়িত্ব দেয়। বলা হয়, তদন্তভার গ্রহণ করতে কোনও সমস্যা থাকলে দময়ন্তী সেন আদালতে জানাবেন। প্রসঙ্গত, ২০১২ সালে পার্ক স্ট্রিট গণধর্ষণ মামলার তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন তৎকালীন কলকাতা পুলিশের দুই দক্ষ অফিসার জাভেদ শামিম ও দময়ন্তী সেন। সেসময় দময়ন্তী সেনের ‘অতি সক্রিয়তা’ ভাল চোখে দেখেনি রাজ্য সরকার। তাঁকে বদলি করা হয়েছিল অন্য পদে। এবার আবার ধর্ষণকাণ্ডের মামলার তদন্ত দেওয়া হল তাঁকে। আগামী ২০ তারিখ এই মামলার শুনানি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.